রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়ল সহ¯্রাধিক ঘর

আগের সংবাদ

তিন জট থেকে মুক্তির প্রত্যাশা > নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মতামত : জলজট, যানজট ও আবর্জনা জট নারায়ণগঞ্জবাসীর গলার কাঁটা

পরের সংবাদ

নারায়ণগঞ্জে আইভী না তৈমূর : দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি ব্যক্তি ইমেজও বড় ফ্যাক্টর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুজ্জামান খান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরে : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (নাসিক) মাত্র পাঁচদিন বাকি। এর মধ্যে ভোটের হিসাব-নিকাশ ও যোগ-বিয়োগে চলছে নানা সমীকরণ। নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩১৬ ভোটারের এই নগরীর অভিভাবক নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজ অনেক ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে। নগরজুড়ে এখন ভোটের আমেজ। চলছে প্রচার প্রচারণা। কোন খাতের ভোট কে পাবেন- সে হিসাবও চলছে। মেয়রের চেয়ারে আইভী ফের বসবেন; নাকি আসবে নতুন মুখ- এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের মনোভাব ততই স্পষ্ট হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আলোচিত চরিত্র শামীম ওসমান বিলম্বে হলেও গতকাল সোমবার দলীয় প্রতীক নৌকার জন্য কাজ করবেন- এমন ঘোষণা দেয়ায় তার রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বী আইভীর পাল্লা এতে কিছুটা হলেও ভারী হয়েছে। অবশ্য পরিবর্তনের আশায় বুক বেঁধেছেন তৈমূরও।
নাসিকের বিভিন্ন বয়সি একাধিক ভোটার ও শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাসিকে নৌকা-ধানের শীষের ভোটের হিসাবের বাইরেও অনেক হিসাব। এক্ষেত্রে আইভী আওয়ামী লীগ ছাড়াও সুশীল সমাজ, বাম সংগঠন ও নীরব ভোটারদের প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। অনেকে নৌকা উল্লেখ না করে শুধু আইভীর জন্য ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে তৈমূর আলম বিএনপির একাংশ ও বিএনপি-জামায়াত জোটের পাশাপাশি হেফাজত ইসলামের সমর্থন পাচ্ছেন। নাসিকের এই তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করলেও মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সদ্য সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকারের মধ্যে। তাদের ঘিরে অঙ্ক কষছেন ভোটাররা। দুবারের সিটি মেয়র আইভী আবারো নির্বাচিত হবেন- নাকি নাসিক পাবে নতুন নগরপিতা এ নিয়ে চায়ের চাপে ঝড় বইছে। ২৭টি ওয়ার্ডে এ নিয়ে চলছে বাকযুদ্ধ। ইভিএম পদ্ধতিতে ১৯২টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৩৩টি

কক্ষে এবং অস্থায়ী ৯৫টি কক্ষে ১৬ জানুয়ারি রবিবার এই ভোটগ্রহণ চলবে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জে নৌকা-ধানের শীষের বাইরে খেলাফত মজলিসের ২-৩ হাজার, চরমোনাই পীরের ১৮-২০ হাজার, হেফাজত ইসলামের ৮-১০ হাজার, আটরশি পীরের ১০-১৫ হাজার, জামায়াত ইসলামের ২-৩ হাজার, ওসমান পরিবারের ৩০-৪০ হাজার, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৬০-৬৫ হাজার, পোশাক শ্রমিকদের ৪০-৫০ হাজার, হকারদের ৪-৫ হাজার, ময়দা-আটা, লবণ, মশারি, ডাউল, হুঁশিয়ারি ও প্রিন্টিং কারখানা মিলের শ্রমিক মিলে প্রায় এক লাখ, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, বর্তমান নাগরিক ঐক্যের নেতা এস এম আকরামের ২-৩ হাজার, বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন ও আবুল কালাম আজাদের ৩০ হাজার, নাসিকের গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের ১০-১৫ হাজার ভোট ব্যাংক রয়েছে বলে চাউর রয়েছে। তবে, এসব ভোট ভাগ হবে। এর মধ্যে খেলাফত মজলিশ ও চরমোনাই পীরের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী রয়েছে। ফুটপাত হকার মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়ায় হকাররা আইভীর ওপর নাখোশ। কথিত পুকুর দখলের ধোয়া তুলে সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাংকে ভাগ বসাতে চান তৈমূর। হুঁশিয়ারি শ্রমিকদের অনেকে এবার আইভীবিরোধী। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এস এম আকরাম আছেন তৈমূরের সঙ্গে। আবার বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস-আজাদ ও সাখাওয়াত নেই তৈমূরের সঙ্গে। ওসমান পরিবারের ব্যাংকে আছে আইভী-তৈমূর দুজনের ভোট। বিএনপির ভোটে ভাগ বসাবেন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ। আইভী ও তৈমূরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা দলীয় ভোটের বাইরে এসব ভোট নিয়ে হিসাব কষছেন। জয়-পরাজয়ের ব্যবধানের অঙ্ক কষছেন। এতে আইভীর নীতিনির্ধরকরা লক্ষাধিক ভোটের ব্যববধানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও আশাহত নয় তৈমূরের ঘনিষ্ঠরাও। তারা মনে করছেন জনগণ এবার পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিবেন। ভোটারদের মতে, দলীয় প্রতীকের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন তৈমূর। আবার অনেকের মতে, ব্যক্তি ইমেজের সঙ্গে নৌকার ভোট যোগ হওয়ায় এগিয়ে থাকবেন আইভী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়