সোনারগাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি

পরের সংবাদ

ব্রড-লিচ নৈপুণ্যে হার এড়াল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচ হেরে এরই মধ্যে সিরিজ খুইয়েছে ইংল্যান্ড। উসমান খাজার টানা দুই ইনিংসের শতকে চতুর্থ টেস্টেও হারতে বসেছিল ইংলিশরা। তবে সিডনিতে গতকাল অজি বোলারদের হতাশ করে ইংলিশ লো অর্ডার ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচ, স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসন নিশ্চিত হারের ম্যাচটি উইকেট কামড়ে ধরে ড্র করে মাঠ ছাড়লেন। ৩৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গতকাল সফরকারীরা ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রানে দিন শেষ করে। অজি বোলার স্কট বোল্যান্ড ৩টি উইকেট শিকার করেন। সিরিজের শেষ টেস্টে আগামী শুক্রবার তাসমেনিয়ায় দুই দল পরস্পরের মুখোমুখি হবে।
সিডনিতে গতকাল অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টের শেষ দিনে ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল চরম উত্তেজনাপূর্ণ। ইংল্যান্ডের ইনিংসে ৯১.২ ওভারে জনি বেয়ারস্টো আউট হয়ে ফেরার পর থেকেই এমন পরিস্থিতি। তখনো যে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শেষ হতে ১০ ওভার ৪ বল বাকি। ইংল্যান্ডের হাতে ছিল ২ উইকেট। জ্যাক লিচ ও স্টুয়ার্ট ব্রড প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছিলেন ম্যাচ বাঁচানোর জন্য। স্কট বোল্যান্ড, প্যাট কামিন্স ও নাথান লিয়নের একেকটি বল যেন ছোবল মারছিল সাপের মতো। দাঁত কামড়ে উইকেট পড়তে না দিয়ে ম্যাচটি ১০০তম ওভারে নিয়ে যান লিচ ও ব্রড। এর আগেই অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং বন্ধ করতে হয়েছে আলো কম থাকার কারণে। অনেক ভেবে ১০০তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক বল তুলে দেন স্টিভ স্মিথের হাতে। নিজের শেষ ওভারের শেষ বলে তিনি তুলে নেন লিচকে। ম্যাচ আরো জমে যায়। সবাই তখন এটাই দেখার অপেক্ষায় ইংল্যান্ডের পেস বোলিং জুটি ব্রড আর জেমস অ্যান্ডারসন দুটি ওভার পার করে দিয়ে দলকে হারের হাত থেকে বাঁচাতে পারেন কিনা। শেষ ওভারের আগের ওভারটিতে বল করেন লিয়ন। সে ওভারটা পার করে দেন এর আগে ২৯ বলে ৮ রান করা ব্রড। শঙ্কা জাগে উইকেটে নতুন আসা অ্যান্ডারসন কি পারবেন স্মিথের পরের ওভারটি ঠেকিয়ে দিতে। অ্যান্ডারসন পেরেছেন। ছয়টি বল সাহসের সঙ্গে ঠেকিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডকে অসাধারণ এক জয় এনে দিয়েছেন তিনি। সিরিজ হার তো আগেই নিশ্চিত হয়েছে। এই ড্রয়ে ইংলিশরা অন্তত একটু শান্তি পেল যে ধবলধোলাই হতে হচ্ছে না তাদের। ম্যাচ শেষে মাঠে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুটও এমন কথাই বলেন, এটা বলা হয়েছিল যে আমরা কিছুটা হলেও সম্মান ফিরিয়ে আনতে চাই। ইংল্যান্ডে বসে যারা আমাদের সমর্থন করে যাচ্ছেন, তাদের অন্তত কিছু দিতে চাই। আমরা অনেক সাহস আর দৃঢ়তা দেখিয়েছি।
ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই করতে চাওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া দল। সেটা আর হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা ৪-০ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ক্রিকেটের জন্য খুব ভালো একটি ম্যাচই হয়েছে।’ দিনের শুরুতে অবশ্য কেউ ভাবতে পারেনি সিডনি টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিন শেষ বেলায় এসে এমন রোমাঞ্চ উপহার দেবে। ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ৩৮৮ রান। শেষ দিনে যে এই লক্ষ্যের পেছনে ছুটে জয়ের জন্য খেলবে না তারা, এটা মোটামুটি সবাই বুঝতে পেরেছে। ইংল্যান্ড সেটা করেওনি।
আগের দিনের বিনা উইকেটে ৩০ রান নিয়ে খেলতে নেমে দেখেশুনে শুরু করলেও খুব বেশিক্ষণ উইকেট অক্ষত রাখতে পারেনি ইংলিশরা। হাসিব হামিদকে ৪৬ রানে হারায় তারা। ৭৪ রানে ফিরে যান ডেভিড মালান। কিন্তু অন্য প্রান্তে জ্যাক ক্রলি ছিলেন অবিচল। কিন্তু দলীয় ৯৬ রানে তিনিও নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন। ক্যামেরন গ্রিনের একটি ইয়র্কার খেলতে গিয়ে মিস করেন তিনি। ১০০ বল মোকাবেলা করে ১৩ বাউন্ডারির সাহায্য ৭৭ রান করেন তিনি। ইংলিশদের আশা হয়ে অধিনায়ক রুটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বেন স্টোকস। মধ্যাহ্ন বিরতি দুজনে মিলে পার করে দেন আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি রুট। স্টোকসের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬০ রানের জুটি উপহার দিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ইংল্যান্ড চা বিরতিতে যায় ৪ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে। বিরতি থেকে ফিরে ভালোই খেলছিলেন স্টোকস ও বেয়ারস্টো। কিন্তু লিয়নের গুড লেংথের একটি বলে ভুল করে বসেন স্টোকস। শেষ পর্যন্ত হালকা বাড়ানো ব্যাটে বল স্পর্শ করে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো স্মিথের বিশ্বস্ত হাতে। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
তার ইনিংসটি ছিল ১০ চার ও ১ ছক্কার মারে সাজানো। স্টোকসের এ আউটের পরই রোমাঞ্চের পসরা নিয়ে হাজির হয় সিডনি টেস্ট। এরপর একে একে ফিরে যান জস বাটলার, মার্ক উড ও বেয়ারস্টো। রোমাঞ্চের তরঙ্গও ওঠানামা করতে শুরু করে, যেটা ছিল শেষ বল পর্যন্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়