মেডিকেল বোর্ড : লিভার সিরোসিসে খালেদার ব্লিডিং হচ্ছে

আগের সংবাদ

সর্বত্র শোকের ছায়া : থেমে গেল জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চরণযুগল

পরের সংবাদ

ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১৫ নির্দেশনা, প্রস্তুতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্রিফিং আজ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ এর নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েই চলছে। ওমিক্রন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সোমবার সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ার মারাত্মক ঝুঁঁকি তৈরি করেছে নতুন এই ধরনটি। আর কিছু এলাকায় এর পরিণাম হবে মারাত্মক। ১৯৪টি সদস্য দেশকে টিকাদানে গতি আনার এবং আক্রান্ত বাড়বে এমনটা ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নেয়ারও তাগিদ দিয়েছে।
ওমিক্রন ঠেকাতে ভারত ‘উচ্চ ঝুঁকি’র দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নামও। তালিকায় থাকা ওমিক্রনের ‘উচ্চ ঝুঁকি’র দেশগুলো হলো- যুক্তরাজ্যসহ পুরো ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বাংলাদেশ, বোতসোওয়ানা, চীন, মরিশাস নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইসরায়েল।
ওমিক্রন প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে আছে দেশের সরকারও। আজ দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ওমিক্রন প্রতিরোধে স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তুতি বিষয়ে সব ধরনের তথ্য তুলে ধরবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
‘পলিসি ফোরাম ইনভেন্টরি’ গবেষণা নিয়ে গতকাল সোমাবার এক গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, করোনায় আমরা ভালো করছি। আমরা ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু যে কোনো মুহূর্তেই ওমিক্রন চলে আসতে পারে। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি আমাদের মেনে চলতেই হবে।
ওমিক্রন প্রতিরোধে প্রস্তুতি সম্পর্কে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, যেসব হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, সেগুলোকে আবার প্রস্তুত রাখা। যে কোনো সময় যেন হাসপাতালগুলো পূর্ণমাত্রায় চালু করা যায়। এখানে ঢিলেমির সুযোগ নেই। ডেল্টার সময় আমাদের প্রস্তুতি নিতে দেরি হয়েছিল। এবার যেন তা না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। কাগজে-কলমে পুরো পরিকল্পনা এখনই করে রাখতে হবে।
এদিকে ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে রবিবার রাজধানীসহ সারাদেশের জন্য সতর্কতামূলক ১৫ দফা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৫ দফা নির্দেশনায় রয়েছে : দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো এবং বিশ্ব

স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত অন্যান্য আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বন্দরসমূহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। সব ধরনের সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়সহ অন্যান্য জনসমাগমে নিরুৎসাহী করতে হবে। বাড়ির বাইরে সবাইকে সব সময় সঠিকভাবে নাক, মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে। সব ধরনের জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে। মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবাদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সবসময় সঠিকভাবে নাক, মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। করোনার উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে। অফিসে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলকভাবে নাক, মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করতে কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং ও প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ/মন্দির/ গির্জা/প্যাগোডার মাইক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।
এর আগে ওমিক্রন প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে বসেছিলেন রবিবার। কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৪৮তম সভায় এ বিষয়ে বিশদ আলোচনার পর ৪ দফা সুপারিশ করেন। চার দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে; ওমিক্রনের বিস্তার রোধে যেসব দেশে নতুন এই ধরন সংক্রমণ ছড়িয়েছে সে সব দেশ থেকে যাত্রী আসা বন্ধ করা; কোনো ব্যক্তির এ সমস্ত দেশে ভ্রমণের সাম্প্রতিক (বিগত ১৪ দিনে) ইতিহাস থাকলে তাদের বাংলাদেশে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা; করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ হলে আইসোলেশন বাধ্যতামূলক করা; দেশের প্রত্যেক প্রবেশ পথে (স্থল, সমুদ্র, বিমান ও রেলওয়ে) পরীক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবস্থা আরো কঠোরভাবে পালন করা (স্কুল কলেজসহ), চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও বিভিন্ন (রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়) সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষায় জনগণকে উৎসাহিত করার জন্য বিনামূল্যে পরীক্ষা করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়