ওয়ারী থেকে উদ্ধার : মারা গেল সেই নবজাতকটি

আগের সংবাদ

বিদ্রোহের ভারেই নৌকাডুবি

পরের সংবাদ

অনবদ্য তাইজুল : সকালের হাসি বিকালে মলিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুজ্জামান ইমন, চট্টগ্রাম থেকে : ক্ষণে ক্ষণে রং পালটাচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্ট। এ টেস্ট ড্র হবে নাকি ফলাফল আসবে। তা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন, টাইগাররা আজ চতুর্থ দিনে দুপুর গড়িয়ে কিছু সময় ব্যাট করে আড়াইশ রান তুলে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে মুমিনুল বাহিনী ম্যাচ জিতবে। কেউ বলছেন, ম্যাচ ড্র করতে হলে পুরো দিন ব্যাট করা উচিত। যে যাই বলুক না কেন, আজকের সকালটা টাইগারদের জন্য বড্ড চ্যালেঞ্জের। লাঞ্চ পর্যন্ত মুশফিক এবং ইয়াসির আলী পাকিস্তানি বোলারদের শাসন করতে পারলে কেল্লা ফতে। যদি কোনো কারণে টাইগার ব্যাটসম্যানরা ভুল করে বসেন তাহলে ম্যাচের ফলাফল চতুর্থ দিনেই আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আগের দিন ১৪৯ রানে কোনো উইকেট না হারানো পাকিস্তানকে গতকাল ২৮৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৪৪ রানের লিড পায় টাইগাররা। বোলাররা সকালে যে সোনালি হাসি ফুটিয়ে তোলেছিলেন বিকালে দ্বিতীয় ইনিংসে টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান দ্রুত সাজঘরে ফিরে গেলে টাইগার সমর্থকদের হাসিমাখা মুখ মলিন হয়ে যায়। চট্টগ্রাম টেস্টে গতকাল তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৮৩ রানে এগিয়ে রয়েছে। মুশফিক ৩০ বলে ১২ রানে ও ইয়াসির ৩৪ বলে ৮ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। বাংলাদেশের পড়া ৪ উইকেটের ৩টি পেয়েছেন শাহিন আফ্রিদি, অপর উইকেটটি পেয়েছেন আগের ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া পেসার হাসান আলী। ৬ ওভার বোলিং করে ৪ মেডেনে মাত্র ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন আফ্রিদি। আগের দিন কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪৯ রান তোলা পাকিস্তান গতকাল তাইজুলের ঘূর্ণিতে ১৪১ রান যোগ করে ২৮৬ রানে গুটিয়ে যায়। তাইজুলের ৭ উইকেটের সঙ্গে ইবাদতের ২ ও মিরাজের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় প্রথম ইনিংসে।
দ্বিতীয় দিনে বিনা উইকেটে ১৪৫ রানে দিন শেষ করা পাকিস্তানকে গতকাল দিনের প্রথম ওভারেই জোড়া ধাক্কা দেন তাইজুল। পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে আব্দুল্লাহ শফিক ও আজহার আলি- দুজনকেই লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই বাংলাদেশি বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার, যেখানে আজহারকে আউট করেছিলেন রিভিউ নিয়ে।
তাইজুলের তৃতীয় শিকার ২০২১ সালের টেস্টের অন্যতম সেরা ব্যাটার ফাওয়াদ আলম। উইকেটরক্ষক লিটন দাসের শিকার হলেও আম্পায়ার প্রথমে নাকচ করেন। পরে রিভিউ নিয়ে ফাওয়াদকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান তাইজুল।
লাঞ্চের পরে তাইজুল আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। বারবার ‘সুযোগ’ পেয়েও ১৩৩ রান করা আবিদ আলিকে এবার এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে বড়সড় ধাক্কা দেন তাইজুল। টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারা হাসান আলীকে অসাধারণ এক ফ্লাইট বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি।
হাসানকে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম ফাইফার তুলে নেন তাইজুল। একই সঙ্গে ভাগ বসান পাকিস্তানের বিপক্ষে রফিকের সর্বোচ্চ উইকেটেও (১৭)। এরপর নোমান আলিকে এলবিডব্লিউ করে রফিককে ছাড়িয়ে রেকর্ডটি নিজের করে নেন তিনি। আর ফাহিম আশরাফকে লিটনের ক্যাচে পরিণত করে ২৮৬ রানে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেন তাইজুল। গত মে মাসে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন তাইজুল ইসলাম। সেই ম্যাচেও পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। ছয় মাস পর ফিরে এসে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে তুলে নেন ৭ উইকেট। ধ্রæপদী স্পিনে পাকিস্তানকে একাই নাড়িয়ে দিয়েছেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার। বাংলাদেশের করা ৩৩০ রানের জবাবে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ২৮৬ রানে। ৪৪ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের টপ অর্ডার গতকাল ফের ‘টপলেস’। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারায় ২৫ রানে। এর মধ্যে মুমিনুল ও শান্ত ইনিংসের খাতাই খুলতে পারেনি। সাদমান করেছেন ১ ও সাইফের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।
আফ্রিদির এক স্পেলে লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশের টপ অর্ডার। সাদমান ইসলাম প্রথম ইনিংসের মতোই ডাউন দ্য লেগ বলে এলবিডব্লিউ। শান্তও তাই। অফস্টাম্পের বাইরের বল অ্যাওয়ে ফ্রম দ্য বডি খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন প্রথম স্লিপে। সাইফ প্রথম ইনিংসের মতোই ভুলে ফিরেন সাজঘরে। শর্ট বলে জড়তা থাকায় তাকে আফ্রিদি ও হাসান আলী বারবার শর্ট বল করে যাচ্ছিলেন। সেখানেই বিপদ। আফ্রিদির এক শর্ট বল চোখ এড়িয়ে খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন। মুমিনুল ফিরেছেন সবচেয়ে বাজে বলে। হাসান আলীর প্রায় সোজা বল ক্রস খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট মিড উইকেটে।
দ্রুত ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ আবারো আস্থা পায় মুশফিকের ব্যাটে। এবার তার সঙ্গী ইয়াসির। দুজনের জমাট ব্যাটিংয়ে শেষ বিকালে আর কোনো বিপদ বাড়েনি। মুশফিক ১২ রানে অপরাজিত রয়েছেন। এ ইনিংস খেলার পথে দেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি নিজের করে নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়