মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

তরুণ টাইগারদের মধ্যেই সম্ভাবনা দেখছেন বোদ্ধারা : পাকিস্তান বধের মিশন শুরু আজ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঘরের মাঠে সর্বশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে দাপটে জিতেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করেছে টাইগাররা। যদিও ওই দুই সিরিজের উইকেট অনেক বেশি ধীরগতির ও নি¤œমানের ছিল। সিরিজ জিতলেও, সমালোচনার ঝড় ঠিকই উঠেছিল। আশা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের বিপক্ষে স্পোর্টিং উইকেট প্রস্তুত করা হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে মাঠে নামছে টাইগাররা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হওয়া সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স। দলের সেরা তিন খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে ছাড়া খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ইনজুরির জন্য দলের বাইরে সাকিব-তামিম। আর বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। দলে একমাত্র সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েছেন লিটন দাস-সৌম্য সরকার এবং রুবেল হোসেন। পিঠের ইনজুরির কারণে সিরিজ মিস করছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
পুনরায় দলে ডাক পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। নতুন হিসেবে এই ফরম্যাটে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলি, সাইফ হাসান, ইয়াসির আলি এবং পেসার শহিদুল ইসলাম।
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে পাকিস্তান। পাকিস্তানের অধিনায়ক

বাবর আজমও গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগারদের সমীহ করেছেন। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে গতকাল ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জাতীয় দলের সাবেক দুই ক্রিকেটার অলক কাপালি ও তুষার ইমরান তরুণ টাইগারদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে হ্যাটট্রিক করা প্রথম টাইগার ক্রিকেটার অলক কাপালি বলেন, টি-টোয়েন্টি সিরিজে যারা দলে সুযোগ পেয়েছেন তারা সবাই প্রতিভাবান ক্রিকেটার। বিপিএলসহ ঘরোয়া লিগে তারা চমৎকার পারফরম্যান্স করেছেন। নির্বাচকরা যাদের দলে নিয়েছেন তাদের প্রতি আস্থা রাখা যায়। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আমাদের এগুতে হবে। এবার বিশ্বকাপে টাইগাররা ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেনি। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমাদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।
সাকিব, তামিম এবং মুশফিকের অনুপস্থিতি সম্পর্কে সাবেক এ ক্রিকেটার বলেন, ইনজুরি খেলার অংশ, যে কোনো সময়ে যে কেউ ইনজুরিতে পড়তে পারেন। তাই সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে তরুণদের সুযোগ দিতে হবে। সারা বছরজুড়ে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলা থাকে। তাই ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিয়ে নতুনদের খেলার সুযোগ দেয়া উচিত। দুই-তিনটি সিরিজ খারাপ করলেও তরুণদের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। তরুণদের সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে আমাদের পাইপ লাইন সমৃদ্ধ করতে হবে।
পাকিস্তান সিরিজে দলে ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও এত বড় পরিবর্তন অনেকেই প্রত্যাশা করেননি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু স্পষ্ট করেছেন, এই ফরম্যাটে নতুন শুরু করতে চান তারা এবং তাই এত বেশি নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেয়া হয়েছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২ ম্যাচের ১০টিতে জিতেছে পাকিস্তান। সব ব্যর্থতায় ভুলে আজ টাইগাররা নতুন উদ্যমে শুরু করতে মরিয়া। বিশ্বকাপে হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। শুধু ক্রিকেটারই নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সমালোচিত হয়েছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা রীতিমতো হতাশ। বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে হতাশ নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্রিকেটারদের পাশে থেকে তাদের আগামীতে ভালো করতে উজ্জীবিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায় অনুপ্রাণিত বাংলাদেশ দলও। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমিও শুনেছি (প্রধানমন্ত্রীর) কথাটা। প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। তার এই কথা আমাদের আরো অনুপ্রাণিত করবে। সত্যি কথা বলতে, এটা আমাদের দলের জন্য অনেক ইতিবাচক একটা মন্তব্য।’
টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক আরো যোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় যেভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, সমর্থন করেন, এটা অবিশ্বাস্য। এজন্য তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের পক্ষ থেকে এটা নিশ্চিত করব যে, আমরা যেন আমাদের শতভাগের বেশি দিয়ে এই সিরিজটা খেলতে পারি। ইনশাআল্লাহ্।’
বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরান তুষার বলেন, তরুণরাই আমাদের ভরসা। পাকিস্তানের বিপক্ষে চার তরুণকে দলে নেয়ায় অনেকে ভাবছেন দল দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলাফল খারাপ হবে? বিশ্বকাপে আমরা ভালো দল নিয়েও জিততে পারেনি। হার জিতের কথা না ভেবে আমাদের একটি ফাইটিং টিম গড়ে তোলতে হবে। তরুণদের সুযোগ না দিলে ওরা নিজেদের মেলে ধরবে কেমনে? ঘরের মাঠে টাইগাররা সবসময়ই সেরা। বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছি। তরুণরা নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারলে ইনশাআল্লাহ পাকিস্তানের বিপক্ষেও সিরিজ জিততে পারব।
এ সিরিজে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে নেই সেই প্রভাব সম্পর্কে সাবেক এ ক্রিকেটার বলেন, প্রভাব কিছুটা পড়বে এটা সত্য। কিন্তু বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। যা আছে তা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ কয়েকজন থাকলে দল শক্তিশালী হতো।
ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ নাইমের সঙ্গী লিটন নেই, নেই সৌম্যও। বাংলাদেশ কাকে দিয়ে ব্যাটিং শুরু করবে? গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেন, এই মুহূর্তে বেশ কয়েকজন বিবেচনায় আছে। সাইফ আছে, শান্ত আছে, নাঈম আছে। আমরা টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
মাহমুদউল্লাহ নাঈমের সঙ্গী হিসেবে যাদের কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে শান্ত মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন, আর সাইফের তো অভিষেকই হয়নি। শান্ত তিন ম্যাচে তিনটি ভিন্ন পজিশনে ব্যাটিং করেছেন, এই তিন ম্যাচে তিনি ২৪ রান করেন। সর্বোচ্চ ১১ রান করেন ওপেনিংয়ে নেমে। এ ছাড়া ব্যাটিং করেছেন দ্বিতীয় ও চতুর্থ পজিশনে।
শান্ত ও সাইফ দুজনের প্রতি পূর্ণ আস্থা মাহমুদউল্লাহর, শান্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করছিল। টেস্টে ভালো পারফর্ম করছে, বিপিএলে দুইটা সেঞ্চুরি আছে। আর ওর অনেক সম্ভাবনা আছে। এখন এটা ওর ব্যাপার যে ও কীভাবে আরো ভালো টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় হবে। ওর সেই সামর্থ্য আছে, আরো ভালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হওয়ার।
সাইফ এখন পর্যন্ত ২৮টি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। এতে তিনি ২৮.৪১ গড়ে রান করেন ৬৮২টি। সর্বোচ্চ ৬১। হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে ৫টি। সাইফকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, আর সাইফের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হবে যে, ও এখনো অনেক তরুণ। আর ও দারুণ একজন ব্যাটার। ওর ভেতরে যে কোনো বোলারকে খেলার সামর্থ্য আছে। আমার মনে হয় এটা অনেক কৌতূহল উদ্দীপক হবে ও কীভাবে টি-টোয়েন্টিতে খেলবে। আর আমাদের পুরো দলের বিশ্বাস ও ভালো করবে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম বলেছেন, বিশ্বকাপে আরব আমিরাতে যেমন রানে দেখা মিলেছে, বাংলাদেশে তেমন হবে না। তবে আমিরাতের মতো পরিকল্পনা নিয়েই খেলবে দল। অনুশীলন করে যা বুঝেছি, আমিরাতের মতো রান এখানে হবে না। এখানে হাতে উইকেট রাখতে হবে, তাহলে পরে কাজ সহজ হবে। বিশ্বকাপেও আমরা উইকেট হাতে রেখে পরে যতটা সম্ভব বেশি রান করতে চেয়েছি, এই পরিকল্পনাই থাকবে এখানে। উইকেট যতটা হাতে রাখব, ততটা কার্যকর হবে।
মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে বাবর বলেন, উইকেট এখনো দেখতে পারিনি। তাই বলতে পারছি না। যে কোনো কিছুই হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়