জাবির ভর্তি পরীক্ষা : প্রক্সি দিতে গিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী কারাগারে

আগের সংবাদ

এশিয়ান আর্চারিতে পদক খরা ঘোচাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড, অপেক্ষায় ইতালি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : হেসেখেলে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে তলানির দল সান ম্যারিনোকে পাত্তাই দিল না কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। গতকাল দুর্বল এই দলের বিপক্ষে ১০-০ গোলের বিশাল জয়ে বিশ্বকাপ টিকেট নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। এমনকি বিজয়ী দলের হয়ে হ্যাটট্রিকসহ একাই চার গোল করলেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। এছাড়া একটি করে গোল করেন হ্যারি ম্যাগুইয়ার, এমিল স্মিথ, টাইরন মিঙ্গস, ট্যামি আব্রাহাম ও বুকায়ো সাকা। অন্যটি প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী।
এক কথায় বলা যায়, ম্যারিনোকে নিয়ে ছেলেখেলাই খেলেছে ইউরোকসাপের রানার্সআপ দল ইংল্যান্ড। এর ফলে ১০ ম্যাচে আট জয় ও দুই ড্রয়ে ২৬ পয়েন্ট তুলে শীর্ষে আছে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
এছাড়া অন্য ম্যাচে নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোঁচট খেয়েছে ইতালি। গতকাল রাতে একই সময়েই ছিল ‘সি’ গ্রুপের শেষ দুটি ম্যাচ। যেখানে ফুটবলপ্রেমীদের নজর ছিল নর্দান আয়ারল্যান্ড-ইতালি ও সুইজারল্যান্ড-বুলগেরিয়া ম্যাচে। যেখানে নিজেদের ম্যাচ ৪-০ গোলে জিতে নিয়েছে সুইজারল্যান্ড। আর নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করেছে কোচ রাবার্তো ম্যানচিনির শিষ্যরা। এর ফলে ‘সি’ গ্রুপের সব খেলা শেষে আট ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে সুইজারল্যান্ড। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইতালি। কিন্তু ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইয়ে প্রতি গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ দলই পাবে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট। আর দ্বিতীয় হওয়া দলকে খেলতে হবে প্লে-অফ। ফলে শঙ্কা জেগেছে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকে ইতালির বিদায়ের। কারণ সামনে তাদের প্লে-অফের কঠিন পরীক্ষা। তবে চরম সংকটের সময়ও আত্মবিশ্বাসের এতটুকু কমতি নেই ইতালি কোচ ম্যানচিনির। তার দৃঢ় বিশ্বাস, বিশ্ব সেরার মঞ্চে জায়গা করে নেয়া তো বটেই, তার দল হতে পারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও। ম্যাচ শেষে ম্যানচিনি বলেন, এটা খুব দুঃখজনক, কারণ আমাদের এই জায়গায় আসার অনেক আগেই গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করা উচিত ছিল। বাছাইয়ে শুরু থেকে এই ম্যাচ পর্যন্ত আমরা কেমন খেলেছি এখন সেটা পর্যালোচনা করতে হবে। তবে আমি প্লে অফের বাধা পেরোনোর ব্যাপারে খুব আত্মবিশ্বাসী। হয়তো আমরা বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতব।
এদিকে সান ম্যারিনোর বিপক্ষে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে বেশ দাপটে খেলেছে ইংল্যান্ড। ১৯৬৪ সালের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে ১০ গোলে জিতল দলটি। সেবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে স্কোরলাইন ছিল একই। ইংলিশদের সবচেয়ে বড় জয় ১৩-০ গোলে, ১৮৮২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। কদিন আগে আলবেনিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জেতা ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন কেইন। ইংল্যান্ডের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করলেন তারকা এই ফরোয়ার্ড। এর আগে ১৯০৯ সালে ভিভিয়ান উডওয়ার্ড, ১৯২৭ সালে ডিস্কি ডিন ও ১৯৫৭ সালে টমি টেইলর এই কীর্তি গড়েছিলেন।
গতকাল ম্যাচে ৮৫ ভাগ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ইংল্যান্ড শট নেয় ২২টি, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। সান ম্যারিনোর দুই শটে একটি লক্ষ্যে ছিল। তবে কাতারের টিকেট পেতে এই ম্যাচে ড্র করলেই চলত ইংল্যান্ডের। সেখানে তারা করল গোল উৎসব। যার শুরু ষষ্ঠ মিনিটে। ফিল ফোডেনের কর্নারে হেডে বল জালে পাঠান ম্যাগুইয়ার। আলবেনিয়ার বিপক্ষেও হেডে দলের প্রথম গোলটি করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডার। পঞ্চদশ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। বুকায়ো সাকার শট ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালে বল পাঠান স্বাগতিক ডিফেন্ডার ফিলিপ্পো ফাব্রি। এরপর ২৭ থেকে ৪২, ১৫ মিনিটের মধ্যে চার গোল করেন কেইন। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয়টি স্পট-কিকে। দুবারই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। দ্বিতীয় গোলটি তিনি করেন এমিল স্মিথের পাসে ১২ গজ দূর থেকে শটে। কাছ থেকে ডান পায়ের শটে করেন নিজের চতুর্থ গোল। সব মিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে কেইনের হ্যাটট্রিক হলো পাঁচটি। আগের ম্যাচেও প্রথমার্ধেই তিন গোল করেছিলেন তিনি।
ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডের তালিকায় জিমি গ্রিভসকে (৪৪) ছাড়িয়ে গ্যারি লিনেকারের (৪৮) পাশে বসলেন টটেনহ্যাম হটস্পারের এই ফরোয়ার্ড। ওপরে আছেন কেবল ববি চার্লটন (৪৯) ও ওয়েইন রুনি (৫৩)। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান এমিল স্মিথ। জাতীয় দলের হয়ে এটাই তার প্রথম গোল। চার মিনিট পর কেইনকে তুলে নিয়ে রিস জেমসকে নামান ইংল্যান্ড কোচ।
এরপর ৬৮ মিনিটে দান্তে রসসি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সান ম্যারিনো। এই সুযোগে তাদের আরো চেপে ধরে ইংল্যান্ড। ৬৯ মিনিটে মিঙ্গস, ৭৮তম মিনিটে আব্রাহাম ও ৭৯ মিনিটে সাকার গোলে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
এছাড়া উইন্ডসর পার্কে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপে নর্দান আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে গোলশূন্য ড্র করেছে ইতালি। আর বুলগেরিয়ার মাঠে ৪-০ গোলে জিতে বাজিমাত করেছে সুইজারল্যান্ড। পুরনো হতাশা পেছনে ফেলার মিশনে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে ইতালির সামনে। তবে জিওভান্নি দি লরেন্সোর শট দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকান স্বাগতিক গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে বেশি সময় বল দখলে রেখে একচেটিয়া আক্রমণ করে যায় ইতালি। তবে প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। এই সময়ে চারটি শট নিয়ে সবকটিই লক্ষ্যে রাখতে পারে দলটি কিন্তু জালের দেখা মেলেনি। দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে উল্টো পিছিয়ে পড়তে বসেছিল ইতালি। তবে ১০ গজ দূর থেকে জর্জ স্যাভিলের শট দারুণ রিফ্লেক্সে ঠেকিয়ে দলকে সমতায় রাখেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
প্রায় একই সময়ে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে নোয়া ওকাফোরের গোলে এগিয়ে যায় সুইসরা। খানিক পর সেখানে রুবেন ভার্গাসের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সুইজারল্যান্ড। দৃশ্যপটে পরিবর্তন আনতে গোল করতেই হতো ইতালির। কিন্তু ৬৪ মিনিটে আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় তাদের। পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ফেদেরিকো চিয়েসার দূরের পোস্টে নেয়া শট চলে যায় বাইরে। অন্যদিকে ইতালি ব্যর্থ হলেও বিশ্বকাপে ওঠার উপলক্ষটা আরো রঙিন করে সুইজারল্যান্ড।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়