‘শিশু বক্তা’ রফিকুল মাদানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

আগের সংবাদ

চমক থাকছে টাইগার স্কোয়াডে ; মিরপুরে পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানের অনুশীলন

পরের সংবাদ

সেই বিচারক প্রত্যাহার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আলোচিত রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায় দেয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল রবিবার রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭, ঢাকা এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারপূর্বক আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হলো।
এর আগে সকালে ওই বিচারককে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান বিচারপতি এ নির্দেশ দেন। এছাড়া সেই বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই রাতে তাকে প্রত্যাহারের প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ওই বিচারক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াটা প্রয়োজনীয় ছিল, সেজন্যই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে এগিয়ে যাবে। তিনি কেন বলেছেন? তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেয়া আছে, সেটা তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।
মন্ত্রী আরো যুক্তি দেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা বাংলাদেশে সাময়িকভাবে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির বিরুদ্ধে বা পক্ষে একমাত্র আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অথচ রেইনট্রি হোটেলে দুই নারীকে ধর্ষণ মামলার বিচারক বলেছেন, ঘটনার ৭২ ঘণ্টার পরে মামলা নেয়া যাবে না। তার এই বক্তব্যটি আইন এবং সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে দেয়া মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। ওই বিচারক আইন ও সংবিধান দুটোই লঙ্ঘন করেছেন।
এদিকে বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার গতকাল সকালে আদালতে গেলেও এজলাসে বসেননি। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালতে পৌঁছান বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার। সকাল সাড়ে ১০টায় তার বিচারকাজ শুরু করার কথা ছিল। বিচারকাজ শুরুর আগে খাস কামরায় বসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা পান তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বিচারক কামরুন্নাহারকে আদালতে না বসার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিরা আলোচনাক্রমে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছেন। তার ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার পর পর্যবেক্ষণে বিচারক পুলিশের উদ্দেশে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে ‘পরামর্শ’ দেন। এরপরই সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, এই মামলার বিচারকের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেয়া হবে। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিনই তাকে প্রত্যাহার করা হলো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়