দেয়াল চাপায় শিশুর মৃত্যু : কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস

আগের সংবাদ

বিজয়ী বিদ্রোহীদের ভাগ্যে কী আছে : সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা সাময়িক বহিষ্কার > ১৯ নভেম্বর আ.লীগের সভায় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

সকালে ঢাকায় পা রাখছে পাকিস্তান : সাবেকদের ভাবনায় স্পোর্টিং উইকেট

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বকাপে ব্যর্থ মিশন শেষ করে অনেক আগেই দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছিল পাকিস্তান। সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি হারার আগে আসরে অপরাজিত দল ছিল তারা। বাংলাদেশ সফরে ৩টি টি-টোয়েন্টি ও দুটি টেস্ট খেলতে বাবর আজমদের ঢাকায় আসার কথা ছিল ১৬ নভেম্বর। তবে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে যাওয়ায় আজ সকাল ৮টায় ঢাকা পা রাখছেন তারা। আরব আমিরাত থেকে ভোরে হজরত শাহাজালাল বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করবে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। একই দিন রাতে দেশে ফিরবেন দুই অভিজ্ঞ টাইগার মাহমুউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম। ব্যর্থ মিশন শেষে দল ফিরে আসলেও এই দুজন ছুটি নিয়ে থেকে গিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। ঘরের মাঠে সেøা উইকেট বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-১ ম্যাচে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে চলছে নানা ভাবনা। পাকিস্তানের বিপক্ষে স্পোর্টিং উইকেট বানানোর পক্ষে অভিমত দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ ও মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্বেই নির্ধারিত হয়েছিল বাংলাদেশ পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। যেখানে ৩টি টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে দুই দলের। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে হেরে আসর থেকে বিদায় নিয়েছিল। অন্যদিকে সুপার টুয়েলভে অপরাজিত ছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠারও জোর সম্ভাবনা ছিল তাদের। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে তারা দুবাইয়ের মাঠে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ফলে আরব আমিরাতে মিশন শেষ হয়ে গেছে তাদের। এখন বাবর আজমদের পরবর্তী লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিরিজ। বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকায় ১৬ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা ছিল তাদের। কিন্তু সেমিফাইনালে হারায় কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশের মাটিতে আজ সকাল ৮টায় পা রাখছেন তারা। বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তানে না গিয়ে তারা সরাসরি আরব আমিরাত থেকেই বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিবেন। তবে দলের সঙ্গে এদিন যোগ দেবেন না পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। তারা ১৬ নভেম্বরই বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। প্রায় ছয় বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে কোনো সিরিজ খেলতে পা রাখছেন মালিকরা। এর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে সবশেষ বাংলাদেশে সিরিজ খেলেছিল পাকিস্তান।
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রাজিন সালেহ গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, সেøা উইকেট বানিয়ে আমরা ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছি ঠিকই, কিন্তু বিশ্বকাপে টাইগাররা ভালো খেলতে পারেনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে দলে বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় আসছে। উইকেট ভালো হলে তারা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাবে। তাই আমি মনে করি সেøা উইকেট না বানিয়ে স্পোর্টিং উইকেট বানানো উচিত।
এদিকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হোটেল সোনারগাঁওয়ের জৈব সুরক্ষাবলয়ে প্রবেশ করবে পাকিস্তান দল। ঢাকায় এসে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে পরদিন থেকে অনুশীলন করতে পারবে সফরকারীরা। বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে, করোনা চলাকালে ক্রিকেটে এবারই প্রথম কোনো সফরকারী দলকে কোয়ারেন্টাইন করতে হচ্ছে না। করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে আর দুই ডোজ টিকা দেয়া থাকলে সরাসরি অনুশীলন করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশ দলের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।
তিন দিন অনুশীলন করে ১৬ নভেম্বর জৈব সুরক্ষাবলয়ে প্রবেশ করার কথা ক্রিকেটারদের। ১৯, ২০ ও ২২ নভেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। শিশিরের কথা চিন্তা করে ম্যাচ ৩টিই হবে দুপুরে। এরপর মুমিনুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেস্ট দল হোটেলে উঠবে ১৯ নভেম্বর। প্রথম টেস্টের ভেন্যু চট্টগ্রামে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করবে মুমিনুলরা। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের পর ৪ ডিসেম্বর মিরপুরে দুদল খেলবে দ্বিতীয় টেস্ট।
অন্যদিকে পাকিস্তান সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলের বিদেশি কোচিং স্টাফের সবাই গতকালই ঢাকায় পৌঁছেছেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা করার কথা নির্বাচকদের। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে নিজেদের মধ্যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানোর পরিকল্পনা আছে টিম ম্যানেজমেন্টের। সে জন্য টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রাথমিক দলটি ১৮ থেকে ২০ সদস্যের হতে পারে।
এদিকে ছুটি কাটিয়ে আজ রাতে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এর আগে বিশ্বকাপে ব্যর্থ মিশন শেষে গত ৫ নভেম্বর দেশে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অবশ্য পুরো দল ওই দিন একসঙ্গে ফেরেননি। দুই দফায় ফিরেছেন বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে থাকা ১১ জন ক্রিকেটার। বাকি পাঁচজনের মধ্যে ইনজুরি আক্রান্ত সাকিব আল হাসান আরব আমিরাত থেকে সরাসরি চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। আর অন্য চারজন- মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ ছুটি নিয়ে থেকে গিয়েছিলেন দুবাইতে। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় তাদের পরিবারও। প্রায় এক সপ্তাহের ছুটি শেষে এরই মধ্যে পরিবারসহ দেশে ফিরেছেন লিটন ও তাসকিন। তবে এখনো দুবাইয়ে রয়েছেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। তারা দুজন দেশে ফিরবেন আজ রাতে। সম্ভাব্য রাত ১১টায় রাজধানী ঢাকায় অবতরণ করবেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনার দায়িত্বে থাকা ওয়াসিম খান এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে কেমন উইকেট হলে টাইগাররা ভালো করবে- এ বিষয়ে ভোরের কাগজকে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, এমন উইকেট বানানো উচিত যাতে দুদলের ক্রিকেটাররাই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারে। সেøা উইকেট হলে ক্ষণিকের জন্য সাফল্য আসবে। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করা উচিত।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১২ বার। এর মধ্য বাংলাদেশের দুই জয়ের বিপরীতে ১০ জয় পাকিস্তানের। তাছাড়া শেষ ৩ বারের দেখায়ও দলটির বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। টাইগাররা চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের সবকটি ম্যাচ হেরে আসর থেকে বিদায় নিয়েছিল। সেখানে সুপার টুয়েলভের অপরাজিত দল ছিল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারার আগ পর্যন্ত আসরে শিরোপা জয়ের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী দল ছিল বাবর আজমরা। তাই তাদের বিপক্ষে সিরিজে জয় তুলে নেয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপারই হবে বাংলাদেশের জন্য। তবে বিশ্বকাপের পূর্বে ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ দল সিরিজ হারিয়ে ছিল চলতি বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে। অস্ট্রেলিয়াকে তো রীতিমতো হোয়াইটওয়াশই করে দিচ্ছে টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ৪-১ ব্যবধানে জিতে নেয় বাংলাদেশ। আর ওই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিতে হেরেই বাংলাদেশের পথে পাকিস্তানিরা। তাই মিরপুরের মাঠে আত্মবিশ্বাসী দল মাহমুদউল্লাহরাই। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ২৬৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা দল পাকিস্তান। আর ২৩২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তালিকার আটে আছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো সাফল্য নেই বাংলাদেশের। ১১ বারের দেখায় ১০ জয় পাকিস্তানের, বাকি ম্যাচটির ফলাফল ড্র। ১০ হারের মধ্য বাংলাদেশ দল আবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ ম্যাচই হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। এবার মুমিনুল হকের নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি জয়ের অপেক্ষায় থাকবেন টাইগাররা। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নয়ে, অন্যদিকে পাকিস্তান আছে পাঁচে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়