দেয়াল চাপায় শিশুর মৃত্যু : কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস

আগের সংবাদ

বিজয়ী বিদ্রোহীদের ভাগ্যে কী আছে : সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা সাময়িক বহিষ্কার > ১৯ নভেম্বর আ.লীগের সভায় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন : নৌকার নিরঙ্কুশ জয়ে বাধা বিদ্রোহীরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৮৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এ ধাপে ২৬টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট নেয়া হয়। এ নির্বাচনেও প্রথম ধাপের মতো প্রায় ৬০-৬২ শতাংশ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এর আগেই বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী হন ৮১ জন চেয়ারম্যান। পিছিয়ে নেই নৌকাবঞ্চিত বিদ্রোহীরা, প্রায় ৩০-৩৩ শতাংশ আসনে আওয়ামী বিদ্রোহীরা এবং অন্যরা ৫ শতাংশ ইউপিতে জয়লাভ করেন। এ নির্বাচনে ৬৫-৭০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায়। ভোট গণনা শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের আগেই ৮১টি আসনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয়ী হন, আবার ৫টি ইউপির সবগুলো পদেই একক প্রার্থী থাকায় সেখানে নির্বাচনই করতে হয়নি, যা এ যাবৎকালের একটি রেকর্ড। তবে এ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকবঞ্চিত বিদ্রোহীরা। প্রায় ৩০-৩৩ শতাংশ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপি সরাসরি এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও বেশ কিছু আসনে জয় পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি প্রায় ১৫টিতে এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৬টিতে, খেলাফত মজলিস ১টিতে, জামায়াতের প্রার্থীরা ২টি এবং জাসদ ১টি ইউপিতে বিজয়ী হয়েছেন।

সহিংসতার কারণে ১০টি ইউপিতে ভোট স্থগিত ঘোষণা করেছে ইসি।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা খুলনায় ২৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, ১০টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি) বিজয়ী হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউপি নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত তিনজন এবং আওয়ামী লীগের পাঁচজন বিদ্রোহী প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া অন্যান্য দলের পাঁচজন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। পটুয়াখালী জেলার চার উপজেলার ১৯টি ইউপির ১৩টিতে নৌকা এবং ছয়টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের ১৬টি ইউপির মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাকি ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ভোটযুদ্ধে ৩টিতে নৌকার প্রার্থী, ৩টিতে লাঙল প্রতীকের ও ৩টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এদিকে বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে জয়ী হয়েছেন।
নড়াইল সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আটটিতে নৌকা, চারটিতে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) এবং একটিতে স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
মেহেরপুরের দুই উপজেলার ৯ ইউনিয়নের ২টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও ৭টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২টিতে নৌকা এবং বাকিগুলোতে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহীরা বিজয়ী হয়েছেন।
ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার ১৭ ইউপির নির্বাচনে নগরকান্দা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। সালথা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬টিতে নৌকা ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
মাগুরা সদর উপজেলার ১০ ইউপির চেয়ারম্যান পদে ৭টিতে আওয়ামী লীগ, ২টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ১টিতে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ওই উপজেলার অন্য ৩টিতে আগেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ৮টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেন। ল²ীপুরে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ৩টিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাঁচজন এবং একজন স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। এর আগে আরেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে সাত ইউনিয়নের ছয়টিতে আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে।
কক্সবাজারের তিন উপজেলার ২১টি ইউপির নির্বাচনের ১১টিতে আওয়ামী লীগ, সাতটিতে বিদ্রোহী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে উখিয়ার হলদিয়া পালং ও কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের ফলাফল স্থগিত রয়েছে।
রামুর ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগ এবং সাতটি বিদ্রোহীরা বিজয়ী হন। উখিয়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের নির্বাচনে তিনটিতে আওয়ামী লীগ এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
ভোলার দৌলতখানের সাত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মধ্যে ৫টি নৌকা এবং ২টি স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে ৩টিতে জাতীয় পার্টি, ২টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন এবং ১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
রংপুরের পীরগাছা ও পীরগঞ্জ উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১টিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে জাতীয় পার্টি এবং বাকি ছয়টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচিত ছয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে বিএনপিপন্থী ৩ জন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর একজন করে রয়েছেন। পীরগাছায় আওয়ামী লীগের তিন, জাতীয় পার্টির এক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি ও জামায়াত) চারজন নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে পীরগঞ্জের ১০টির মধ্যে ৮টিতে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র দুজন চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার ১৫টি ইউপির চেয়ারম্যান পদে ৯টিতে আওয়ামী লীগ ও ৬টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।
নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে ভোটে প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে ১৭টি ইউনিয়নে নৌকা এবং অপর ৭ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। ১টির ফলাফল স্থগিত রয়েছে।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার ১০টি ও সদর উপজেলার ২টি ইউপির মধ্যে ৬টিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং বাকি ছয়টিতে জয় পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নের ৮টিতে আওয়ামী লীগ ও ৩টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ৯, বিদ্রোহী ৭ ও জাসদের একজন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
পাবনার সুজানগরে ১০ ইউনিয়নের আটটিতেই আওয়ামী লীগ ও দুজন বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ৮টিতে আওয়ামী লীগ, ২টিতে বিদ্রোহী ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর চৌগাছা উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে আগেই বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আওয়ামী লীগের দুজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বাকি ৯টির ৩টিতে নৌকা বাকি ৬টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
সিলেট বিভাগের মোট ৪৩টি ইউপি ভোটের ফলাফলে আওয়ামী লীগ ২০টি এবং বিদ্রোহীরা ২৩টি ইউপিতে বিজয়ী হয়েছেন। তার মধ্যে ১টি বিএনপি, ১টি জামায়াত ও ১টি খেলাফত মজলিশের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
শরীয়তপুরে সদর উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নের ৭টিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হয়। এছাড়া দুটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়।
চুয়াডাঙ্গার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনটিতে আওয়ামী লীগ এবং দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৭টি ইউপির দুটিতে আওয়ামী লীগ ও ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ছয়টিতে আওয়ামী লীগ এবং আটটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঢাকার ধামরাইয়ের ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৮ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ৭ জন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৩ ইউপি নির্বাচনে তিনটিতে আওয়ামী লীগ ও ১০টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
নওগাঁর দুই উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে নৌকার ১১ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ছয় ও স্বতন্ত্র তিনজন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ২০টিতে আওয়ামী লীগ, ৪টিতে জাতীয় পার্টি ও ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় লাভ করেছেন। বাজিতপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়