জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

সংঘাতের আশঙ্কার মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোট কাল : ইউপি নির্বাচন

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে অনেক স্থানে মারাত্মক সহিংসতা হয়। এতে তিনজনের মৃত্যু ও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাশাপাশি মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরাও সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন। ইউপি নির্বাচনের এরূপ চিত্র সারাদেশেই মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কিন্তু তারপরও তৃণমূলের এ নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা থেমে নেই। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় ইতোমধ্যে ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এরূপ পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ৮৪৬টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আগামীকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সহিংসতার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কারো জন্য নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা আমাদের আছে। প্রয়োজনে প্রার্থিতাও বাতিল করা হবে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব). শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বিভাগীয় কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে কঠোর হতে বলেছেন। এমনকি প্রার্থিতা বাতিল করার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন।
এদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ের ইউপি নির্বাচন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে বসে ইসি। সেখানে দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি সংশ্লিষ্ট জেলার ডিসি (রিটার্নিং কর্মকর্তা), পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানদের আরো কঠোর হাতে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন। এছাড়া উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে বলেন। কঠোর হাতে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা দিয়ে সিইসি সংশ্লিষ্টদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলেও জানান।
এদিকে নির্বাচনের আগে সহিংসতা এড়াতে এবং প্রার্থীদের মধ্যে একে অপরের প্রচারে বাধা সৃষ্টি প্রতিহতে ভোটের দুদিন আগেই ৩৩৯ জন নির্বাহী হাকিম এবং ৩৩১ জন বিচারিক হাকিম, মোট ৬৭০ জন ম্যাজিস্ট্রেট (হাকিম) মাঠে নামিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনী অপরাধ করলে মামলা হবে, এমনকি প্রার্থিতা বাতিলও হতে পারে। এছাড়া সহিংসতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। ইতোমধ্যে ইউপি নির্বাচন ঘিরে কোনো কোনো এলাকায় যেমন উৎসাহ আছে, তেমনি উত্তেজনা ও

ভীতিও কাজ করছে ভোটারদের মধ্যে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় প্রচার-প্রচারণার সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি মেহেরপুরে নির্বাচনী সংঘর্ষে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হন। সেসব এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে। যদিও নির্বাচনে বিএনপি সরাসরি প্রার্থী দেয়নি তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে একে অপরের প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি সমর্থকরাও মাঠে রয়েছেন। আছেন মেম্বার ও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরাও। সব মিলিয়ে নির্বাচনী মাঠ সরগরম ও সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা।
ইসি বলেছে, এসব বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্তসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামানো হয়েছে। তারা নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি কঠোরভাবে দেখভাল করবেন। এছাড়া উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। টহল দিচ্ছেন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরাও। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাস্তান, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
এদিকে আজ বুধবার সকাল থেকে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে কঠোর নজরদারিতে। প্রার্থীদেরকে আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে ইসির। ইতোমধ্যে মোটরসাইকেলসহ যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। গত রাত ১২টা থেকে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়