মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়কপথে সোনাপুর (নোয়াখালী) ও সোনাগাজী (ফেনী) উপজেলার যোগাযোগের সুবিধার্থে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ফেনী নদীতে মুহুরী সেতু নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ইতোমধ্যে সেতুর সার্বিক কাজ ৪২ শতাংশ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা, ল²ীপুর জেলা ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দাদের আন্তঃমহাসড়কে চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
মুহুরী সেতু নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম জেলার সঙ্গে বৃহত্তর নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলার প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগে দূরত্ব কমে আসবে। এতে করে সড়ক পথে ২ ঘণ্টা কম সময়ের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আসতে পারবেন সোনাপুর ও সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দারা। সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত হবে সোনাপুর (নোয়াখালী)-সোনাগাজী (ফেনী)-জোরারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) সড়কটি। এতে করে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে সম্প্রসারিত হবে সোনাপুর উপজেলা ও সোনাগাজী উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্য। এছাড়া সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কক্সবাজার থেকে আসা মেরিনড্রাইভে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে সেতুটি।
সওজ ফেনী জেলা সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়ক ও ফেনী জেলার সোনাগাজী সড়কের সঙ্গে সংযোগ করে ফেনী নদীর উপর মুহুরী সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ করছে হাসান টেকনো বিল্ডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩৯১ মিটার, প্রস্থ ১০.২৫ মিটার, ৯টি স্প্যানে ৮টি পিলার, ২টি অ্যাপার্টমেন্ট হবে। সেতুর কাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। নির্মাণ সময় ধরা হয়েছে ১৮ মাস।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ফেনী জেলার উপসহকারী প্রকৌশলী এবং মুহুরী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মাজহারুল হক বলেন, মুহুরী সেতুটি নোয়াখালী জেলার সোনাপুর সড়ক ও ফেনী জেলার সোনাগাজী সড়কের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ সড়কের সংযুক্ত ঘটাবে। এতে করে সোনাপুর ও সোনাগাজীর বাসিন্দারা প্রায় ২ ঘণ্টা কম সময়ের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়া সোনাপুর (নোয়াখালী)-সোনাগাজী (ফেনী)-জোরারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) ২ লেনবিশিষ্ট সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার হবে। সড়কটি ভবিষ্যতে ৪ লেন করার পরিকল্পনা রয়েছে সওজের। সেতুটি নির্মাণ করা হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চলে যাতায়াত সুবিধা বাড়বে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।
মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সড়কপথে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে মিরসরাই উপজেলা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিরসরাইয়ে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। যার বৃহৎ অংশ মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলকে নিয়ে। কক্সবাজার থেকে আসা মেরিনড্রাইভ সড়ক মুহুরী প্রজেক্ট পর্যন্ত যাবে। রামগড়ে নির্মানাধীন স্থলবন্দরে যাতায়াতের জন্য জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়ক ব্যবহৃত হবে। এছাড়া মুহুরী সেতু ব্যবহারের মাধ্যমে নোয়াখালী, ল²ীপুর জেলা ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দারা খুব দ্রুত সময়ে মেরিন ড্রাইভ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আসতে পারবেন। এতে করে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক ও দৈনন্দিন জীবনের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। মুহুরী সেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চলে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।