এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

ইলিয়াস কাঞ্চন : সরকার অন্য উপায়ে সমন্বয় করতে পারে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তেলের দামের সঙ্গে অনেক কিছু নির্ভর করছে কারণ এর প্রভাব পুরোপুরি জনগণের ওপরেই পড়বে বলে মনে করেন অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, আমার মতে সরকার দাম না বাড়িয়ে অন্য কোনো উপায়ে যদি তেলের বাজার স্বাভাবিক রাখে, তাহলে জনগণ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। কারণ তেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন মালিকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেবে। আবার পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর সঙ্গে নিত্যপণ্যের দামের সম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে বাজারে এর প্রভাব পড়তেও শুরু করেছে। পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়ার অজুহাতে এরই মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পরিবহন মালিকরা বরাবরই যে কাজটি করে, তা হচ্ছে সরকার তেলের দাম যা বাড়িয়ে দেয়, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি তারা পরিবহন ভাড়া বাড়ায়। পাশাপাশি ভোগ্য পণ্যের দাম একই হারে বাড়তে থাকে। সে হিসেবে দেখতে গেলে ব্যবসার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদেরই উপকার বেশি হয়। যত ক্ষতি সব অসহায় সাধারণ জনগণের। তাই আমি মনে করি, তেলের দাম না বাড়িয়ে অন্য কোনোভাবে দামকে সমন্বয় করা যায় কিনা সে বিষয়ে সরকার ভেবে দেখতে পারে।
সড়ক আন্দোলনের এ নেতা বলেন, করোনা চলার সময়ে কিছু মানুষ হয়তো বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন বা ধনী হয়েছেন। তবে বেশির ভাগ মানুষই কাজ হারিয়েছে, নেমে গেছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। কেউ কেউ অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছেন। করোনা মহামারি স্বাভাবিক হলেও মানুষের জীবনযাত্রা এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে মাত্র। এই সময়ে সরকার যদি তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় তাহলে তারা আবার কষ্টে পড়বে। রাষ্ট্র হচ্ছে জনগণের সুতরাং জনগণের সামান্য উপকারের জন্য সরকার যদি ভর্তুকি দিয়েও তেলের দাম স্বাভাবিক রাখে তাহলে সেটা হবে অনেক বড় পাওয়া।
বেশির ভাগ গণপরিবহন চলে গ্যাসের মাধ্যমে। অথচ তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণায় সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এটা শুধু এখন না বিগত সময়েও আমরা এর নজির দেখেছি। এর আগে যখন সরকার তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়, সে সময় এক দফা আন্দোলন করে পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়। এর কয়েক মাস পরে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তারা আবার ভাড়া বাড়ানোর আন্দোলন করে। এটা হচ্ছে তাদের এক ধরনের কারসাজি। বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া বাড়ানোই যেন তাদের কাজ। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, পরিবহন খাতের সঙ্গে তাদের অনেকের একটা ভালো সংযোগ রয়েছে। সুতরাং সহযোগিতার মাধ্যমে এ মানুষগুলোকে লাভবান করে দেন তারা। এখন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, কয়েক দিন পরে দেখা যাবে আবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জনগণের বলার কোনো জায়গা নেই। দেশে শক্তিশালী একটি বিরোধী দল থাকলে হয়তো কিছুটা সমস্যার সমাধান করা যেত। আমাদের সে আন্দোলনের জায়গাটা কোথাও নেই। বিরোধী দলের নামে যারা আছেন, জনগণের স্বার্থে তাদের কখনো কথা বলতে দেখা যায় না।
ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, পরিবহন ধর্মঘট করা ওদের (শ্রমিক) যৌক্তিক দাবি বলে পরিকল্পনামন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে আরো উৎসাহ দেবে। তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী এ ধরনের উসকানিমূলক কথা বলার মানে হচ্ছে, তাদের আরো উৎসাহিত করা। একজন পরিকল্পনামন্ত্রী কীভাবে এ বিষয়টা নিয়ে কথা বলেন, তাও এমন উসকানিমূলক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়