গাজীপুরে কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

আগের সংবাদ

বাজার অস্থির দিশাহারা মানুষ : নিত্যপণ্যের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আরেক দফা বাড়বে

পরের সংবাদ

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি : পণ্যের মান ও উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানোর ফলে দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। তাই পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদনেও বৈচিত্র্য আনতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ধারণকৃত এক ভিডিও বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ১৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কা?ছে? পুরস্কার তু?লে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা।
এ সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্দিষ্ট কোনো পণ্য বা সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক গতিধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পোৎপাদনে বহুমুখী ধ্যান-ধারণা প্রয়োগ করতে হবে। শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ব্যাপারেও যতœশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শ্রমিকদের শ্রম ও দক্ষতা অপরিহার্য। এজন্য মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য কর্মসংস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানোর ফলে দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। তাই পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদনেও বৈচিত্র্য আনতে হবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধান শিল্পোদ্যোক্তাদের শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করারও নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের নানাবিধ উন্নয়ন কর্ম-পরিকল্পনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি

অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তিনি বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি বড় অংশ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ইকোনমিক জোনে শিল্প স্থাপন করা হলে কর রেয়াতসহ প্রদেয় বিভিন্ন প্রণোদনা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সমভাবে ভোগ করবেন।
তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পোদ্যোক্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতি আশা করেন এ উদ্যোগ জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের চলমান ধারাকে আরো সুসংহত করবে এবং সামগ্রিক জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শিল্প খাতে অবদানের জন্য ১৯ প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রপতি শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওসমানী মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি এ পুরস্কার দেন। এ বছর বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে প্রথম হয়েছে বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড। দ্বিতীয় হয়েছে মীর সিরামিক লিমিটেড, তৃতীয় হয়েছে জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস লিমিটেড, দ্বিতীয় নোমান টেরি টাওয়েল মিলস লিমিটেড, যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে অকো-টেক্স লিমিডেট ও ক্রিমসন রোসেলা সি ফুড লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে প্রমি অ্যাগ্রো ফুডস লিমিডেট, দ্বিতীয় মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড ও তৃতীয় এপিএস হোল্ডিং লিমিটেড। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজ, দ্বিতীয় খান বেকেলাইট প্রোডাক্টস ও তৃতীয় হয়েছে র‌্যাভেন অ্যাগ্রো কেমিক্যালস লিমিটেড। কুটিরশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে কোর-দি জুট ওয়ার্কস, দ্বিতীয় সামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, দ্বিতীয় ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালটেন্টস লিমিটেড ও তৃতীয় হয়েছে সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়