‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

সম্প্রীতি বিনষ্টের উসকানি : ধুনটে কালী প্রতিমার মাথা ভেঙে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ, ধুনট (বগুড়া) থেকে : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মন্দির থেকে কালী প্রতিমার মাথা ভেঙে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত কোনো ব্যক্তি এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের সুলতানহাটা কালী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
সুলতানহাটা গ্রামের সুরেশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, প্রায় শত বছর ধরে ওই গ্রামের কালী মন্দিরে কালীপূজা হয়ে আসছে। পূজার আগে নতুন প্রতিমা তৈরি করা হয়। পূজা শেষ হলেও বছরজুড়ে মণ্ডপে থাকে কালী প্রতিমা। গ্রামের লোকজন মণ্ডপের সামনে দিয়ে যাওয়া-আসার সময় কালী মাকে প্রণাম করেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি পরেশ চন্দ্র শীল বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে রাজিব শীল নামে গ্রামের এক যুবক মণ্ডপের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় সে মা কালীকে প্রণাম করতে গিয়ে দেখেন তার মাথা নেই। তারপর সে বিষয়টি গ্রামের অন্যদের অবগত করেন। আমরা সবাই মিলে চারপাশে মাথার অংশ খুঁজে পাইনি। বিষয়টি ৯৯৯-এ কল দিয়ে জানানো হয়।
এদিকে বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত, ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা, ধুনট উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ কুমার সাহা, বাংলাদেশ হিন্দু যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি কুমার সাহা। তারা স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে গতকাল দুপুর ২টায় মন্দির কমিটির নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই গ্রামের নির্মলা বালা মন্দিরে কালীর বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তিনি বলেন, মা কালীর কাছেই বিচার দিয়েছি। তিনি নিশ্চয়ই এর সঠিক বিচার করবেন।
মন্দিরে বিসর্জন প্রক্রিয়া শেষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিমাটি আড়কাটিয়া গ্রামে ইছামতি নদীতে বিসর্জন দেন। ওই গ্রামের মৃত্তিকা দেবনাথ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে পূজা হয়। অথচ এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
ধুনট উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র সাহা বলেন, ওই গ্রামের হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি রয়েছে। সেখানে প্রতিমার মাথা ভেঙে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অপ্রত্যাশিত। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামের হিন্দু ও মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কথা বলেছি। মন্দির কমিটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা প্রতিমাটি বিসর্জন দিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্দির এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়