‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

শিল্পী-কলাকুশলীদের সম্প্রীতি সমাবেশ : সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই বাংলাদেশে সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদে সমাবেশ দেশে উগ্রবাদীর জায়গা নেই

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার প্রতিবাদে ‘ঐতিহ্য ও কৃষ্টির এই দেশে, থাকি সবাই মিলে মিশে’ সেøাগানে সম্প্রীতি সমাবেশ করেছেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। টেলিভিশনের ১৫টি সংগঠনের মোর্চা ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) নেতৃত্বে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নেন দেশের শীর্ষপর্যায়ের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।
সমাবেশে এফটিপিওর চেয়ারম্যান নাট্যজন মামুনুর রশীদ ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকদিন আগে। আশ্চর্যের বিষয়, এতদিনেও তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে তৃণমূলে যে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়েছে সেখানে শিল্পীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়া হয়, যা অযৌক্তিক। এর বিরুদ্ধে শিল্পীরা দাঁড়ায়নি। তবে আমরা সেই ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মূল করতে চাই।
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলুর সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদী এ আয়োজন। এতে তিনি বলেন, আমরা এবার রাজপথে নেমেছি। যেটা আমরা ক্যামেরার সামনে অথবা পেছনে করে থাকি। কিন্তু আমাদের এবারের সেই কাজটি একটু ভিন্নভাবে করছি। দেশের কিছু সাম্প্রদায়িক মানুষ আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে। আমরা তাদের বলতে চাই, এ দেশে উগ্রবাদীর জায়গা নেই, সাম্প্রদায়িকাতার জায়গা নেই।
সাম্প্রদায়িক এই হামলায় মারা গেছেন নাট্যকর্মী অধরা প্রিয়ার বাবা। দৃষ্টিপাত নাট্যদলের এ সদস্য সিক্ত চোখে অনুষ্ঠানে হাজির হন। তিনি বলেন, এভাবে আমার বাবা চলে যাবে, আমরা কখনো ভাবিনি। স্বাভাবিকভাবে বাবা চলে গেলে, আমার কিছু বলার ছিল না। আমার বাবা একেবারেই অন্যরকম একজন মানুষ। সারাজীবন সম্প্রীতিকে লালন করেছেন। এমনও হয়েছে নিজে হিন্দু হলেও মুসলিম বন্ধুর জানাজায় অংশ নিয়েছেন। আমরা সেভাবেই বড় হয়েছি। অথচ আজ আমার বাবাকে দাঙ্গায় এভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হলো। আমার তো পরিবার আছে। মা-ছোট ভাই আছে। আমাদের এগুলো দেখতে হচ্ছে। আমরা নিরাপদ নই।
গীতিকবি, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী জয় শাহরিয়ার বলেন, আমরা এসেছি সংহতি প্রকাশ করতে। আমরা যখন গান করি, কারো জন্য আলাদা গান করি না। হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা মুসলমানের জন্য নয়, সবার জন্য গান করি। তাই আমরা বাংলাদেশের চার মূলনীতিতে ফিরতে চাই। আমার মনে হয়, এটাই সময় ঘুরে দাঁড়াবার।
সম্প্রীতি সমাবেশের প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন- প্রযোজক-অভিনেতা ইরেশ যাকের এবং সদস্য সচিব সঞ্চালক-নির্মাতা আনজাম মাসুদ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, নাট্যজন তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, গাজী রাকায়েত, আহসান হাবিব নাসিম, চয়নিকা চৌধুরী, তারিন জাহান, সুমন আনোয়ার, মীর সাব্বির, মাসুম রেজা, শমী কায়সার, রাশেদ মামুন অপু, শিবলী মোহম্মদ, নাদিয়া আহমেদ, শিহাব শাহীন, হারুন অর রশিদ, শাহেদ আলি, দীপা খন্দকার, আজাদ আবুল কালাম, জয়শ্রী কর জয়া, সাব্বির, সন্দীপন, শুভ, পুলক, সমরজিৎ রায়, সাকী আহমেদ, রবিউল ইসলাম জীবনসহ অনেকে।
অন্তর্ভুক্ত সংগঠন ছাড়াও সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে গীতিকবি সংঘ, মিউজিক কম্পোজারস সোসাইটি, কণ্ঠশিল্পী পরিষদ বাংলাদেশের সম্মিলনে মোর্চা সংগঠন সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, পথনাটক পরিষদ, আবৃত্তি পরিষদ, নৃত্যশিল্পী সংস্থা, নৃত্যাঞ্চল, বাসসাচসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দিঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের রংপুর, চাঁদপুর, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে অন্তত ৭২টি। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার পাঁচ শতাধিক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়