নানা আয়োজনে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন

আগের সংবাদ

লো স্কোরিংয়ের রোমাঞ্চকর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়

পরের সংবাদ

পূজামণ্ডপে কুরআন রাখার কথা স্বীকার করল ইকবাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম ফিরোজ মিয়া, কুমিল্লা থেকে : জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচিত কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার কথা স্বীকার করেছে আটক ইকবাল হোসেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে এ বিষয়ে তথ্য দেয়। তবে কার নির্দেশে এই কাজ করেছে তা জানায়নি এখনো। পুলিশের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভোরে ইকবাল হোসেনকে আটক করা হয়। কক্সবাজার থেকে চশমা পরা অবস্থায় আটকের পর কড়া পুলিশ পাহারায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে আনা হয়। ঘটনার রাতে সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই যুবকই আটক ইকবাল হোসেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ইকবাল হোসেনকে আটক ও পরে কুমিল্লায় আনার খবরে সকাল থেকেই গণমাধ্যমকর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও পুলিশ লাইন্সের গেটে অবস্থান নেন। পরে সাংবাদিকদের অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে

শুধু ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণের জন্য সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট ও শরীরে বুলেট প্রæফ জ্যাকেট ছিল।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আমরা ইকবাল হোসেনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। এরপর এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। তবে কখন ও কোথায় জানানো হবে তা তিনি বলেননি। পরে তাকে গাড়িতে করে পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর এ-সার্কেল) মো. সোহান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ টিম ইকবাল হোসেনকে আনতে কক্সবাজারে যায়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে জেলা পুলিশের এ টিম ইকবাল হোসেনকে কুমিল্লায় নিয়ে আসার জন্য রওনা দিয়ে গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে কক্সবাজার পৌঁছে। সেখানে আসামি হস্তান্তরের কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুলিশের ওই টিম তাকে নিয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে কুমিল্লার পথে যাত্রা শুরু করে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তারা কুমিল্লা এসে পৌঁছে।
কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সেই ইকবাল হোসেনকে ঘটনার পর থেকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার টিম। গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তার চোখে রঙিন চশমা ছিল। কুমিল্লায় আনার পর ইকবালের পরিবারের কাউকে তাকে দেখার জন্য উপস্থিত দেখা যায়নি। তবে তাকে তার পরিবারের সদস্যদের মুখোমুখি করা হবে বলে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ইকবাল হোসেনকে আটক করে কুমিল্লায় আনা হয়েছে। তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সিসি টিভি ফুটেজে যে ইকবাল হোসেনকে শনাক্ত করেছিলাম এটা সেই ইকবাল হোসেন। পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সিসি টিভির ফুটেজে ধরা পড়ে ইকবাল হোসেনই পাশের দারোগাবাড়ী মাজারের মসজিদ থেকে কুরআন শরিফটি নিয়ে গভীর রাতে পূজামণ্ডপে রেখেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু খোলাসা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল হোসেন পূজামণ্ডপে কুরআন শরিফ রাখার কথা স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এ কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মণ্ডপে কুরআন শরিফ রাখার পর হনুমানের মূর্তি থেকে গদা সরিয়ে নেয়ার কথাও পুলিশকে জানিয়েছে ইকবাল।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের পর থেকেই ইকবাল অসংলগ্ন আচরণ করছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নেয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়