ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে আরেক মামলা

আগের সংবাদ

রুট পারমিটের তোয়াক্কা নেই রাজধানীর গণপরিবহনের

পরের সংবাদ

স্বপ্ন বাঁচল টাইগারদের : বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওমানকে হারাল ২৬ রানে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২০, ২০২১ , ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাছাইপর্বের বাধা টপকাতে পারবে বাংলাদেশ? ওমানের বিপক্ষে জয় পাবে? নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারার পর তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। এরপর ওমানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে খেলতে নামার পর প্রথম দিকে টাইগার সমর্থকদের মনে ভয়ই ধরিয়ে দিয়েছিল মরুর দেশটি। তবে কথায় আছে, শেষ ভালো যার সব ভালো তার।
টাইগার খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মনে ভয় ধরিয়ে দিলেও শেষ হাসিটা হেসেছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। ওমানের বিপক্ষে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা তুলে নিয়েছেন বড় ব্যবধানের জয়। ব্যাটিংয়ে ভালো করার পর বোলিং ও ফিল্ডিংয়েও নিজেদের সেরাটা দিতে সমর্থ হয় টাইগাররা। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ওমানের আল আমিরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৬ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান করেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। জবাবে ওমান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করতে সমর্থ হয়।
ম্যাচে বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল ওমান। কিন্তু শেষ দিকে টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ওমান আর জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি। ম্যাচে টাইগারদের হয়ে ৩৬ রান দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান চারটি এবং সাকিব ২৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন। ওমানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করতে সমর্থ হন ওপেনার জাতিন্দার সিং। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন কাশেপ কুমার।
ওমানের বিপক্ষে এ জয়ের মাধ্যমে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখল টাইগাররা। বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারে। ফলে ওমানের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে নানা পরিসংখ্যান মাথায় রেখে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। সে ম্যাচেও জয় পেতে হবে টাইগারদের। সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে ওমান ও স্কটল্যান্ডের ম্যাচের দিকে। ওই ম্যাচে যদি স্কটল্যান্ড জয় পায়, তাহলে বাংলাদেশ রানার্সআপ হয়ে যাবে পরবর্তী রাউন্ডে। অন্যদিকে ওমানের বিপক্ষে যদি স্কটল্যান্ড হেরে যায়, তখন নিট রানরেটে এগিয়ে থাকা দুটি দল যাবে সুপার টুয়েলভে। বর্তমানে দুই জয় পেয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে স্কটল্যান্ড। তাদের রানরেট +০.৫৭৫। ওমান এক ম্যাচে জিতে রানরেটে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে। তাদের রান রেট +০.৬১৩। অন্যদিকে টাইগারদের রান রেট +০.৫০০।
ম্যাচ শেষে সাকিব আল হাসানও বলেছেন এখন শেষ দিনের ম্যাচগুলোতে তাকিয়ে থাকবেন তারা। তিনি বলেন, সবার আগে বাংলাদেশ পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয় তুলে নেবে। এরপর ওমান ও স্কটল্যান্ডের ম্যাচের দিকে নজর রাখবে। তাছাড়া তিনি ভালো পারফরম্যান্সের জন্য ওপেনার নাঈম শেখকে ধন্যবাদ জানান। অন্যদিকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে হাসিমুখে বলেন, বাংলাদেশ ম্যাচে জয় পেলেও এখনো তাদের আরো উন্নতি করতে হবে। তিনি সাকিব ও নাঈমকে ধন্যবাদ জানান। তাছাড়া তিনি বলেছেন, নতুন বলে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে আরো কাজ করবেন তারা।
এদিকে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে চাপে পড়লেও নাঈম শেখ ও সাকিব আল হাসান দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দিতে সমর্থ হন।
ম্যাচে পঞ্চম বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই হাফসেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন নাঈম শেখ। তিনি ৫১ বল খেলে ৬৪ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে হাফসেঞ্চুরির পথে থাকা সাকিব ২৯ বল খেলে ৪২ রান করে রানআউট হন। নাঈম ও সাকিবই দলের হয়ে সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন। অন্যদিকে ওমানের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট তুলে নেন ফায়াজ বাট ও বিলাল খান। তবে তাদের মধ্যে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বিলাল খান। তিনি ১৮ রানে তিনটি উইকেট নেন।
ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ভালো করতে না পারায় গতকাল দলে ছিলেন না সৌম্য সরকার। তার জায়গায় আসেন নাঈম শেখ। নাঈমকে নিয়ে দলের ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস। কিন্তু মাত্র ৭ বল খেলে ৬ রান করে বিলাল খানের দুর্দান্ত বলে এলবিডবিøউ আউট হয়ে যান লিটন দাস। এরপর দ্রæত রান তোলার জন্য ওয়ানডাউনে নামানো হয় স্পিনার মেহেদী হাসানকে। কিন্তু ৪ বল খেলে কোনো রান না করার আগে ফায়াজ বাটের বলে ক্যাচ আউট হন। তার ক্যাচটিও ধরেন ফায়াজ বাট। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব। আর অন্য প্রান্ত আগলে ধরে রাখেন নাঈম শেখ। কিন্তু ম্যাচের ১৩ ওভারে ও দলীয় ১০১ রানে সাকিব অসাবধানতার কারণে রানআউট হয়ে যান। তাকে ডিরেক্ট থ্রোতে আউট করেন আকিব। এরপর ক্রিকেট আসেন নুরুল হাসান সোহান। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের আগে তাকে ব্যাটিংয়ে নামানো হয়। কিন্তু তিনি ৪ বল খেলে ৩ রান করে জিসান মাকসুদের বলে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক আরো অপেক্ষা করে আফিফকে নামান। কিন্তু আফিফ ৫ বল খেলে ১ রান করে কলিমুল্লাহর বলে আউট হন। এরপর নাঈম সেই কলিমুল্লাহর বলেই আউট হন। ফলে প্রায় একই সঙ্গে মাঠে আসেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক ৪ বলে ৬ রান করে ফায়াজ বাটের বলে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এরপর মাহমুদউল্লাহ ১০ বলে ১৬ করে বিলালের বলে সরাসরি বোল্ড হন।
ম্যাচটিতে ওমান তিনটি-চারটি ক্যাচ হাতছাড়া করে। ম্যাচে বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৯ রান করতে সক্ষম হয়। এরপর সাকিব ও নাঈম মিলে হাত খুলে মারতে থাকেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়