করোনা পরিস্থিতি : শনাক্ত কমলেও প্রাণহানি কিছুটা বেড়েছে

আগের সংবাদ

আতঙ্কিত চট্টগ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা : বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর

পরের সংবাদ

মেহেন্দিগঞ্জের দেশরতœ শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয় : জালিয়াতি করে ৮ শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ২৮টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য আশির্বাদ হলেও কোনো কোনো শিক্ষকের কপাল পুড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও মিলছে না প্রতিকার। ঘটনাটি বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দেশরতœ শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়ের।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জের গাগরিয়া এলাকায় ২০১৪ সালে দেশরতœ শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ১৯ পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালের ১৭ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা কলেজে যোগদান করে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে এলেও কেউই বেতন-ভাতা পাননি। তবে ২০২০ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করার পর অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে ওঠেন অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন। ওই জাতীয় দৈনিকে আবশ্যক বিজ্ঞপ্তিটি জাল করে নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি (নতুন পদ সৃষ্টি করে) নিজেই সত্যায়িত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করেন। এরপর তিনি মাউশির প্রতিনিধি তৎকালীন সরকারি বরিশাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. অলিউল ইসলামের কাছে গিয়ে অবৈধ নিয়োগের জন্য প্রস্তাব দেন। এ ব্যাপারে প্রফেসর অলিউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন তার কাছে অনৈতিকভাবে নিয়োগ সিটে স্বাক্ষর নেয়ার জন্য এলেও তিনি তাতে স্বাক্ষর করেননি। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা গেছে, মাউশি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিলকৃত কলেজের সব শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্যে দেখা গেছে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের নামের পাশে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো তথ্য নেই।
কলেজটি সরকারিকরণ করার পরই অধ্যক্ষ অলিউল ইসলামসহ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল করে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে প্রথমে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮ জনকে বাদ দিয়ে নতুন করে ৮ জন নিয়োগ দেন। যাদের মধ্যে কেউই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। এ নিয়ে একাধিক পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও থেমে নেই অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন। পরে এর প্রতিকার চেয়ে মাউশি মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী শহিদুল ইসলাম আলামিন। এ বিষয়ে আলামিন মুঠোফোনে জানান, তাকে নিয়োগপত্র দেয়ার কয়েক দিন পরই তার কাছ থেকে তা ফেরত নেন অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন। সম্প্রতি অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন তাকে বলেছেন অব্যাহতিপত্র দেয়ার জন্য। এমনকি তাকে যে কোনো সময় গ্রেপ্তার করাতে পারেন বলেও হুমকি দেন অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন। কলেজের রসায়ন বিষয়ে প্রভাষক শামীমা মুকুল জানান, সরকারিকরণ করার পর কলেজে গিয়ে অনেক অপরিচিত মুখ দেখতে পেয়েছি, যারা নিয়োগ পরীক্ষায়ই অংশগ্রহণ করেননি।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, কলেজের সভাপতি এমপি পঙ্কজ দেবনাথের স্বাক্ষর না থাকলে নিয়োগ হয় কীভাবে। শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ আমার স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগপত্র তৈরি করেছে কিনা তা জানা নেই। এ বিষয়ে মাউশির উপপরিচালক (কলেজ-১) মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এ বিষয়ে তিনি পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়