ই-কমার্স নিয়ে অভিযোগের পাহাড় ভোক্তা অধিদপ্তরে : বর্তমানে ভোক্তায় অভিযোগ ২২ হাজার, ৩ মাসে অভিযোগ বেড়েছে ৯ হাজার

আগের সংবাদ

মিলছে টিকা, করোনায় স্বস্তি : তবুও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত

পরের সংবাদ

তুরাগে ট্রলার ডুবি: একই পরিবারের পাঁচজনের সলিল সমাধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর আমিনবাজারে তুরাগ নদে একটি যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় চার শিশুসহ ৫ জনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- সায়লা বিবি, তার আড়াই বছরের ছেলে রিপন ও চার বছরের ভাগিনা আরমান। ফায়ার সার্ভিস ধারণা করছে, এই ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ অন্য দুইজনেরও মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই দুইজনের সন্ধান মেলেনি। আজ সোমবার থেকে আবার উদ্ধার অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
এদিকে ট্রলারডুবির পর তুরাগ পাড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়। সাঁতরে তীরে আসা স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে যায় বাতাস। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমায় অন্য স্বজনরা। একপর্যায়ে ডুবুরিরা লাশের সন্ধান পেলে কান্না আরো বাড়তে থাকে। অনেকে স্বজনের অপেক্ষায় নদীর পানে তাকিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকেন।
গতকাল শনিবার সকালে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায় ট্রলারটি। এ ঘটনায় নিখোঁজ হয় ট্রলারের নারী ও শিশুসহ সাত যাত্রী। পরে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের ডুবুরিরা। পর্যায়ক্রমে উদ্ধার করা হয় ৪ শিশু ও এক নারীর লাশ। এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারে ধাক্কা দেয়া বালুবাহী বাল্কহেডটি আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ।
তলিয়ে যাওয়া ৭ নারী ও শিশু হলেন- সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের হজারিয়া গ্রামের শফিকুলের স্ত্রী মোসাম্মৎ রূপায়ন, তার ছেলে আরমান, মেয়ে জেসমিন, রূপায়নের বোন সায়লা বিবি, সায়লার আড়াই বছরের ছেলে রিপন এবং আরমিনা (৮) ও ফারহান মনি (৫) নামে দুই শিশু।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরে একটি ট্রলারে তুরাগ নদের উত্তরপাশের আমিনবাজার থেকে গাবতলী ল্যান্ডিং স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন ১৮ জন শ্রমিক। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ওই নারীরা মূলত ল্যান্ডিং স্টেশনের পাশে কয়লার ডিপোতে কাজ করতেন। কাজের সময় শিশু সন্তানদের পাশে বসিয়ে রাখতেন তারা। তুরাগ নদ পারাপারের সময় হঠাৎ একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় এক নারী ও ছয় শিশু তলিয়ে যায়। অন্যরা সাঁতরে নদের তীরে উঠে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই তাদের একটি ইউনিট উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে রাজধানীর সদর দপ্তর থেকে আরো তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। দুপুর ১টার দিকে দুই শিশু ও এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে আরো দুই শিশুর লাশের সন্ধান পান ডুবুরিরা। বিকাল ৩টার দিকে ধরলা-৪ ক্রেন বোট দিয়ে ডুবে যাওয়া মাঝারি সাইজের ট্রলারটি উপরে তোলা হয়।
নৌ পুলিশের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম জানান, নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হবে। প্রাথমিকভাবে বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে তাকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ঘাতক বালুবাহী বাল্কহেডটি আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়