বিজিএমইএ সভাপতি : বন্ধ মিল চালু হলে ফেব্রিক্সের চাহিদা মেটানো সম্ভব

আগের সংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তাই প্রধান চ্যালেঞ্জ : সরকারি হিসাব মতে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবুও চালসহ খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়

পরের সংবাদ

চাঁদাবাজির অভিযোগে ৫ শ্রমিক গ্রেপ্তার : চট্টগ্রামে হঠাৎ ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচ পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীতে হঠাৎ করে ঘোষণা ছাড়াই গণপরিবহন চালানো বন্ধ করে দেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন কর্মজীবী ও সাধারণ যাত্রীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন রুটে বাস, টেম্পু ও হিউম্যান হলার চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল। এতে গণপরিবহন সংকটে চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা কথায় কথায় ধর্মঘট ডেকে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন সাধারণ মানুষ।
সাধারণ যাত্রীসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন সেক্টরে বিদ্যমান নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কোনো ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়ায়

পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা নিজেদের অসীম ক্ষমতাধর ভাবতে শুরু করেছেন। নিজেদের শক্তি জানান দিতে, আধিপত্য বিস্তার করে নানামুখী চাঁদাবাজির পথ সুগম করতেই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ধর্মঘটের নামে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ অনেকের।
গত বুধবার রাতে নগরীর অলঙ্কার মোড়ে পরিবহনের লাইনম্যান অফিসে অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজির টাকাসহ পাঁচ পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরা হলো- আজাদ (৩৪), অহিদ (৩৮), আরিফ হোসেন (৩০), নারায়ণ দে (৫১) ও সিদ্দিক হোসেন (৪৫)। তাদের বিরুদ্ধে আকবর শাহ থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠন। হঠাৎ করেই তারা এর প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
র‌্যাব চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম ইউসুফ সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চাঁদাবাজ চক্রটি অবৈধভাবে কাভার্ডভ্যান, মালবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহনের ড্রাইভারদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে। প্রকাশ্যে অফিস খুলে বাস, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন গণপরিবহন থামিয়ে চাঁদাবাজি করছিল তারা। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি লাইনম্যান অফিস থেকে চাঁদার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, পাঁচ চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তারের জেরে যারা সড়ক থেকে পরিবহন কমিয়ে দিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
এদিকে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আকস্মিক ধর্মঘটের কারণে গণপরিবহন না পেয়ে বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। গণপরিবহন না থাকার সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে রিকশাচালকরা। এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রিকশাচালকদের সঙ্গে যাত্রীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। অনেককে আবার পায়ে হেঁটেও যেতে দেখা গেছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর স্টেশন রোডের মোটেল সৈকতে মালিক-শ্রমিক নেতারা পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে যৌথসভায় বসেন।
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মনজুরুল আলম মঞ্জু অভিযোগ করেন, প্রতিনিয়তই আমরা প্রশাসনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। কোনো কারণ ছাড়াই মামলা দেয়া হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজন বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। পুলিশের জ্ঞাতসারে সুনির্দিষ্ট কিছু খরচের জন্য মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো কিছু চাঁদা তোলে। এটি চাঁদাবাজি নয়, আমরা চাঁদাবাজির পক্ষে নই। বুধবার কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তারের পর অন্যান্য শ্রমিক বাস, টেম্পু এবং হিউম্যান হলার বের করেনি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক অলি আহম্মদ বলেন, লাইনম্যান অফিসে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা চাঁদাবাজির পক্ষে নই। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে লাইনম্যানের মাধ্যমে কিছু খরচ তোলা হয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া এভাবে পরিবহন শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করা কাম্য নয়। পরিবহন মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তবে পিকেটিং বা অন্য কোনো কর্মকাণ্ড হচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়