ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

সাতেই থাকছেন রোনালদো

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে সবাই চেনেন সিআরসেভেন নামে। তার এমন পরিচিতি সাত নম্বর জার্সি দিয়েই। সম্প্রতি রোনালদো জুভেন্টাস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন নিজের সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। যেখানে তার আইকোনিক নম্বরের জার্সিটি পরে ইতোমধ্যে প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুমে মাঠে নেমেছিলেন এডিসন কাভানি।
লিগের নিয়ম অনুযায়ী কোনো ফুটবলার যে নম্বরের জার্সি পরে লিগ শুরু করেন তিনি ছাড়া অন্য কেউ সে জার্সিটি পরতে পারবেন না। তবে কি রোনালদো তার চিরচেনা সংখ্যার জার্সিটি পাচ্ছেন না? তবে অন্য একটি উপায় আছে যদি না সে ফুটবলার লিগ ছেড়ে চলে যান। তাহলে কি রোনালদোকে সাত নম্বর জার্সি দিতে কাভানিকে ছেড়ে দিচ্ছেন ম্যানইউ। এমন কিছুই ঘটেনি। নিয়মের পরিবর্তন করেছে লিগ কর্তৃপক্ষ। ফলে রোনালদোর তার সিম্বোলিক জার্সি পাওয়া নিয়ে আর কোনো বাধা নেই। অবশ্য সে ক্ষেত্রে কাভানিকে বেছে নিতে হবে অন্য নম্বরের জার্সি।
আর আগে প্রিমিয়ার লিগের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, রোনালদো সাত নম্বর জার্সিই পরবেন।
তবে ইউনাইটেডের সাইটে এখনো কাভানিকেই সাত নম্বরে দেখা যাচ্ছে। ম্যানচেস্টারের সাংবাদিক জোনাথান শ্রাগেরও জানিয়েছেন এই খবর।
এদিকে প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়েছে, রোনালদোই হচ্ছেন প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ আয় করা ফুটবলার। ৩৬ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড সপ্তাহে ৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডের মতো বেতন পাবেন, যা কিনা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
এদিকে রোনালদোর সিআরসেভেন হওয়ার গল্প শুরু হয় ২০০৪ সালে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তৎকালীন কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসন তাকে এই নম্বরের জার্সিটি উপহার দেন। এর আগে দলটিতে সব তারকা ফুটবলাররা এই নম্বরের জার্সি পরে খেলেছিলেন। ইংল্যান্ডের তারকা ফুটবলার ডেভিড ব্যাকহামও খেলেছিলেন ম্যানইউতে সাত নম্বর জার্সি গায়ে।
ফার্গুসনের মতে রোনালদোও সেরা স্ট্রাইকারদের একজন হবেন। তাই তার নামের পাশে ফুটবলের আইকনিক নম্বর সাতই মানান সই। ২০০৪ সালেই যদি রোনালদো সাত নম্বর জার্সি পরেন, তাহলে এর পূর্বে তার জার্সি নম্বর ছিল কত- এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। এর আগে রোনালদো পর্তুগালের স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে ২৮ নম্বর জার্সি পরে প্রতিনিধিত্ব করতেন।
ম্যানইউতে এসেও তিনি তার পছন্দের ২৮ নম্বর জার্সিটির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোচের অনুরোধে অবশেষে তিনি সিআরসেভেনই বনে গেলেন। একই বছর রোনালদো জাতীয় দলের হয়েও সাত নম্বর জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন। ফার্গুসনের দূরদর্শিতার প্রমাণ রোনালদো নিজেই দিয়েছিলেন। সাত নম্বর জার্সিটিকে নিয়ে গিয়েছেন অন্যমাত্রায়। ম্যানইউর হয়ে ২০০৮ সালে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৪২ গোল করে জিতেছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ব্যালন ডি’অর। একই বছর ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারও নির্বাচিত হয়েছিলেন সিআরসেভেন। ২০০৯ সালে লিগ ছাড়ার আগ পর্যন্ত ২৯২ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ১১৮টি।
এদিকে সিআরসেভেন মাঝে সিআরনাইনও হয়েছিলেন। তবে সেটা অল্প সময়ের জন্য। সেবার লিগের নিয়মের জন্য রোনালদো তার চিরচেনা নম্বরের জার্সিটি গায়ে জড়াতে পারেননি। তবে সেটা ছিল স্প্যানিশ লা লিগায়। ২০০৯ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ড ছেড়ে রোনালদো নাম লিখিয়েছিলেন স্প্যানিশ ক্লাব লা লিগায়। সেখানে দলের ফুটবলার রাউল সাত নম্বর জার্সিটি আগে থেকে পরায় রোনালদোকে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
এক বছর পর তার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটে। ২০১০ সালে রোনালদো তার সাবেক কোচের ¯েœহমাখা সাত নম্বর জার্সিটি ফিরে পান। ফার্গুসনের ধারণা অনুযায়ী রোনালদো এখানেও জ¦লে উঠেন। রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার আগ পর্যন্ত দলটির সর্বকালের সেরা একজন ফুটবলার হয়ে ছিলেন সিআরসেভেন। ক্লাবটিকে দীর্ঘ ৯ বছরে জিতিয়েছেন অনেকগুলো শিরোপা।
রিয়াল মাদ্রিদ তার কৃতিত্বে তিনটি লা লিগা, দুটি কোপা দেল রে, দুইটি উয়েফা সুপার কাপ, তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ ও চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছিল। ক্লাবটির হয়ে রোনালদোও জিতেছিলেন চারটি ব্যালন ডি’অর।
রিয়ালের সময়ের সেরা এই ফুটবলার ২০১৮ সালে সিরি আতে পাড়ি দেয়ার আগে ৪৫০টি ম্যাচ খেলেছিলেন। যেখানে রেকর্ড ৪৩৮টি গোল করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসেও জার্সি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় সিআরসেভেনকে। তবে এবার অন্য কোনো জার্সি পরে সাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি রোনালদোকে। জুভেন্টাসে ২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে সাত নম্বর জার্সি পরে খেলতেন কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার হুয়ান কুয়াদ্রাদো। দলটিতে রোনালদোর আগমনের ফলে তিনি ছেড়ে দেন তার নম্বরের জার্সিটি। সাত ছেড়ে তিনি বেছে নেন ১৬ নম্বর জার্সি। রোনালদো ২০১৮ থেকে টানা তিন মৌসুম খেলেছিলেন জুভেন্টাসে।
তবে দলটির আক্ষেপ তিনি ঘোচাতে পারেননি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একটি শিরোপা প্রাপ্তির স্বপ্নপূরণ না করেই তিনি জুভেন্টাস ছেড়ে সাবেক ক্লাব ম্যান ইউ’তে আবার ফিরে যান। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বাদপূরণ করতে না পারলেও দলটিকে দুইটি লিগ শিরোপা এনে দেন রোনালদো। সিরি আ লিগে দুই বারের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো ১৩৪ ম্যাচ খেলে করেন ১০১টি গোল।
এদিকে রোনালদোকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। স্বপ্ন দেখছেন রয় কিনও। দলটির সাবেক এই মিডফিল্ডারের বিশ্বাস করেন ইউনাইটেডে জয়ের মানসিকতা নিয়ে আসবে রোনালদো।
ইউনাইটেড সবশেষ লিগ শিরোপা জিতেছে সেই ২০১২-১৩ মৌসুমে। এরপর তারা শুধু জিতেছে একটি করে ইউরোপা লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ড। ২০১১ সালের পর থেকে পেরুতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল বাধা। কিন্তু রোনালদো ফেরায় আশাবাদী হয়ে ওঠার কথা স্কাই স্পোর্টসকে জানিয়েছেন কিনও।
তিনি বলেন, হ্যাঁ, এটা দারুণ খবর। আমি মনে করি, রোনালদোর ফেরাটা ইউনাইটেডের জন্য, দলের সমর্থক ও প্রিমিয়ার লিগের জন্যও দারুণ ব্যাপার। সে বিশ্বমানের খেলোয়াড় এবং এটা নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। তার ব্যাপারে হয়তো মানুষের সংশয় থাকতে পারে, কিন্তু সাফল্য ক্ষুধা, প্রত্যাশা রোনালদোর মধ্যে এখনো আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়