ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

ফিরবেন বাংলাদেশে : এইউডব্লিউ ছাত্রীরা যেভাবে কাবুল ছাড়েন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটিয়ে অবশেষে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উওম্যানের (এইউডব্লিউ) সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ১৬০ জন আফগান শিক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত কাতার পৌঁছেছেন। সেখান থেকে শিগগিরই তারা দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ। গত ২৫ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরে আইএসের ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার কারণে এই ১৬০ জন আফগান শিক্ষার্থী আটকা পড়েন।
পরিস্থিতির হালনাগাদ জানিয়ে এইউডব্লিউর ডেপুটি-রেজিস্ট্রার (বৈদেশিক) সানাউল করিম চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলার কারণে আটকে যাওয়া ১২ বাংলাদেশি নাগরিক এবং ১৬০ জন আফগান শিক্ষার্থী বর্তমানে কাতারে অবস্থান করছেন। সেখানে তাদের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে নেয়া হয়েছে। তারা এখন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। শিগগিরই সেখান থেকে তারা এ দেশের পথে রওনা হবেন। কাতারে কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
প্রকাশ, এইউডব্লিউর এসব শিক্ষার্থী ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। গত ১৫ আগস্ট তালেবানরা কাবুল দখল করে নেয়ার পর ফ্লাইট শিডিউল না পাওয়ায় তারা আটকা পড়েন। ২৫ আগস্ট তাদের বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সেদিন বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা জারি করলে তাদের কাবুল বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়। তারা ফিরে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরই বিমানবন্দরের বাইরে আইএস-কের আত্মঘাতী হামলায় কয়েকশ মানুষ হতাহত হন। এ ঘটনার দুদিন পর ২৭ তারিখের দিকে একটি মার্কিন সামরিক বিমান তাদের নিরাপদে কাবুল থেকে বের করে কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছে দেয়।
এর আগেও দুই দফায় এই শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। তৃতীয় দফার ব্যাপক চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলো। এ বিষয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি কামাল আহমেদ তার টুইটারে জানান, তালেবানরা কেমন আচরণ করতে পারে, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও খুব ভালো করে তা জানেন ও বোঝেন। কেবল বর্তমান শিক্ষার্থীদের নয়, যারা আগে আমাদের এখানে পড়েছে, তাদের মধ্যে যারা আবারো স্নাতক পর্যায়ের কোনো কোর্সে আসতে চায় এবং ভবিষ্যতে নিজের দেশে ফিরে সুন্দর জীবন গড়তে চায়, তাদেরও আমরা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলাম। অসাধারণ কিছু মানুষ প্রায় অলৌকিক এই কাজটা করতে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তাদের সেই অবদান আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করব।
এক্ষেত্রে তিনি বিশেষ করে আফগান শিক্ষার্থীদের দলনেতা সেপেহরা আজমির নাম উল্লেখ করে এবং সমন্বয় ও যোগাযোগের কাজে ছয়জন তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান কামাল আহমেদ। তিনি লিখেন, সাতটি বাসে করে সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের ওই দলটিকে দুইবার কাবুল বিমানবন্দরে নেয়া হয়েছিল, কিন্তু ফ্লাইট না ছাড়ায় তাদের ফিরে যেতে হয়। ৪০ ঘণ্টা সময় তাদের পার করতে হয় সেই বাসের ভেতর। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দফার চেষ্টা সফল হয় ‘অসাধারণ কিছু মানুষের সহায়তায়’। তারা সেই যোগ্যতা আর দৃঢ়তা দেখিয়েছে, যাকে আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বর্ণনা করে গেছেন ‘গ্রেস আন্ডার প্রেসার’ হিসেবে।
কামাল আহমেদ আরো লেখেন, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু তারা হাল ছেড়ে দেবে না। অন্য এক আফগানিস্তানের ধারণাকে আমরা সমর্থন দিয়ে যাব, হয়তো সেই বাস্তবতায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, কিন্তু সৃষ্টিকর্তা চাইলে একদিন তা সম্ভব হবে। সেপেহরা আর অন্য যাদের এইউডব্লিউ বিগত বছরগুলো ধরে শিক্ষা দিয়ে আসছে, সেই মেয়েরাই একদিন সেই আফগানিস্তানকে বাস্তবে পরিণত করবে। সেই দিন একদিন আসবেই!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়