ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

প্রকৃতির জলাধার বেষ্টিত সুনামগঞ্জ : মাছের উৎপাদন বাড়ছে না আশানুরূপ

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : মৎস্য উৎপাদনের ভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে মাছের উৎপাদন বাড়ছে না আশানুরূপভাবে। সরকারি হিসাবে মাছের উৎপাদন প্রতিবছর বেড়েছে দেখানো হলেও স্থানীয়রা বলেছেন, পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়া হলে মাছের উৎপাদন আরো অনেক বেশি বাড়বে। মৎস্য অফিসের দায়িত্বশীলরা অবশ্য দাবি করেছেন, মাছের উৎপাদন বিগত সময়ে ঠিকই বেড়েছে, এ বছর বর্ষা বিলম্বে হওয়ায়, পোনা মাছ কম ছাড়ায় এবং জনবল সংকটের কারণে আগামী অর্থবছরে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সুনামগঞ্জে হাওর, বিল, পুকুর, নদী নিয়ে মাছের উৎপাদনের ক্ষেত্র হচ্ছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে প্রাকৃতিক জলাধারই বেশি। একটু যতœ নিলেই শতকোটি টাকার মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি অনুযায়ী সুনামগঞ্জ জেলায় গেল ৫ বছরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হাওর, বিল, নদী ও পুকুর মিলে মাছের উৎপাদন ছিল ৯১ হাজার ৭০২ টন, ২০১৬- ১৭ অর্থবছরে ৯৪ হাজার ২৭৭ টন, ২০১৭-১৮ বছরে ৯৬ হাজার ৯৯৬ টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯৮ হাজার ২৩০ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লাখ ২ হাজার টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৮০ টন।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে গত শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য উঠে আসে। সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ জানিয়েছেন, জনপ্রতিনিধিদের দাবি গত ৩ বছরে হাওর থেকে মাছের উৎপাদন কমে এসেছে। দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুুর আলম চৌধুরী বললেন, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, হাওরের ছোট ছোট খাল-বিলে ফসল রক্ষা বাঁধের মাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়া, কোন কোন ক্ষেত্রে বিল শুকিয়ে মাছ ধরা এবং ইজারাদারের শর্তমতে জলাশয় খনন না করায় হাওরে মাছের উৎপাদন কমছে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, হাওরে মাছের উৎপাদন কমছে। কারণ মাছের কোনো অভয়ারণ্য নেই। ইজারাদারেরা বিল শুকিয়ে মাছ ধরেন। কাদার নিচ থেকেও মাছ উঠায় ইজারাদারের লোকজন। বর্ষা মৌসুমে কারেন্ট ও কুনা জাল দিয়ে মাছ শিকারও মাছ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
এই জনপ্রতিনিধি মনে করেন, মাছের প্রজননের সময় হাওর এলাকায় মাছ শিকার নিষিদ্ধ করতে হবে। এ সময় জেলেদের তালিকা করে তাদের সহায়তা প্রদান করতে হবে। পরে তাদের মাছ ধরার সুযোগ দিতে হবে। এতে হাওরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মণ্ডল মাছের উৎপাদন কমেনি দাবি করে বলেন, জনবল সংকট, বরাদ্দের অপ্রতুলতাসহ নানা সমস্যার মধ্যেও আন্তরিকভাবে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কাজ করছি আমরা। মৎস্য আইন বাস্তবায়ন করতে হলে প্রতি উপজেলায় মাসে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন, আমরা পাচ্ছি বছরে ১০ হাজার টাকা, প্রাকৃতিক প্রজনন বাড়াতে পোনা মাছ ছাড়তে বরাদ্দ প্রয়োজন কমপক্ষে ১ কোটি টাকা। সেখানে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। জেলাব্যাপী মৎস্য অফিসগুলোয় ৯৬টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ২৮ জন। মৎস্য অধিদপ্তরের কোনো পরিবহন নেই বললেই চলে। জেলা মৎস্য অফিসের ভাঙাচোরা গাড়ি নিয়ে শনিবার হাওরে পোনা ছাড়তে গিয়ে ফেরার সময় গাড়ি বিকল হওয়ায় অন্য গাড়িতে আসতে হয়েছে। তিনি মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য অভয়াশ্রম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়