ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

দুর্ভোগে সিংগাইর-মানিকনগর সড়কে চলাচলকারী ৪ ইউনিয়নের মানুষ : সড়ক সংস্কার কাজ শেষ হয়নি দেড় বছরেও

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : সিংগাইর উপজেলার সিংগাইর-মানিকনগর ৯ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির সংস্কার কাজ প্রায় দেড় বছরও শেষ হয়নি। রাস্তাটির সংস্কার কাজ বন্ধ থাকায় উপজেলার সায়েস্তা ও চান্দহর ইউনিয়নের সম্পূর্ণ এবং চারিগ্রাম ও জামির্ত্তা ইউনিয়নের আংশিক, পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার আংশিক লোকজনসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক লোক উপজেলা সদর হয়ে ঢাকা যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বিপাকে পড়েছেন ওই রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন চালকরাও।
জানা গেছে, রাস্তাটির মানিকনগর থেকে পাড়াগ্রাম পর্যন্ত মেরামত কাজ করা হলেও সংস্কার থেকে বাদ পড়ে উপজেলা সদর থেকে মানিকনগর পর্যন্ত, যা যানবাহন এবং লোকজন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার সড়কটি উন্নয়ন ও প্রশস্ত প্রকল্পের টেন্ডার হয় ২০২০ সালের শুরুতে।
ঢাকার দিলকুশার নাসির উদ্দিনের মালিকানাধীন ডলি কনস্ট্রাকশন টেন্ডারে কাজ পায়। টেন্ডার অনুযায়ী ওই বছরে ২৫ মার্চ সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভেকু দিয়ে সড়কটি ভেঙে সংস্কার কাজ শুরু করে। কাজ শুরুর কয়েক দিন পরেও বন্ধ হয়ে যায়। দেড় বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
সরজমিন দেখা গেছে, এ সময়ের মধ্যেই রাস্তা বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সম্পন্ন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। ঘটছে সম্পদসহ প্রাণহানি।
অপরদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই রাস্তা ব?্যবহারকারী প্রায় দুই লক্ষ?াধিক মানুষ। বর্তমানে মালবাহী ট্রাক ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপদে পড়েছেন অসুস্থ রোগী বিশেষ করে গর্ভবর্তী নারীরা। অন্যান্য মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা সিংগাইর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধার বিষয় বিবেচনা করে অল্প সময়ের মধ্যে সড়কটির মেরামতের জোর দাবি জানাই।
এলাকার কৃষক হোসেন আলী বলেন, এ রাস্তার কারণে আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সাহরাইল ও সিংগাইর বাজার এবং ঢাকায় বিক্রির জন্য নিতে অনেক কষ্ট হয় এবং পরিবহন খরচও বেশি পড়ে যায়। এজন্য আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছি।
এ বিষয়ে সিংগাইর-মানিকনগর সড়কে যাতায়াতকারী নীলটেক গ্রামের ব?্যবসায়ী আওলাদ হোসেন বলেন, আমাদের দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলার দক্ষিণাংশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উপজেলা সদর এবং ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি খুব দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করা জরুরি।
সিএনজিচালক মো. আনোয়ার (২৮) বলেন, রাস্তাটি খানাখন্দের কারণে উঁচু-নিচু হওয়ায় ৬ মাসেই আমার নতুন গাড়ি পুরনো হয়ে গেছে। যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে গেছে। একাধিক গাড়ির চাকা ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং সিএনজি উল্টে গিয়ে কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে যে টাকা আয় হয় তা যানবাহনের পেছনে খরচ হয় বলে একাধিক চালক জানান।
এদিকে আবহাওয়া একটু শুষ্ক হলেই ধুলাবালির কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ল²ীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কটির ৪ কিলোমিটার যেতেই শরীর ও পোশাকে ধুলার আবরণ পড়ে।
ওষুধ কোম্পানির একমির সিংগাইরের বিক্রয় প্রতিনিধি টুটন দাস বলেন, চাকরির প্রয়োজনে বিধ্বস্ত এ রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে শরীরের উপরে যেমন ধুলার আবরণ পড়ছে তেমনি শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ভেতরে ধুলা জমা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অসুস্থ বোধ করি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সাইড অফিসও বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ রুবাইয়াত জামান জানান, আমরা কাজ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মামলা করলে কোর্ট স্থগিত আদেশ দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়