ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

দুবাইয়ে কারাবন্দি পরশ : মুক্তির আশ্বাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কটিয়াদীর বাসিন্দা মো. আশরাফুজ্জামান পরশ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে মিথ্যা সাজানো মামলায় দুবাই জেলে এক বছর ধরে বন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদিকে পরশকে মুক্তির কথা বলে ওই প্রতারক চক্র পরশের পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিষয়টি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানিয়েছে প্রতারিত পরশের পরিবার।
গত রবিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের একটি পত্রিকার অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতারিত আশরাফুজ্জামান পরশের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, তার স্বামী মো. আশরাফুজ্জামান পরশ জীবন-জীবিকার তাগিদে ১০ বছর ধরে দুবাই প্রবাসী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। প্রথমে সেখানে তিনি একটি লন্ড্রির দোকানে কাজ করতেন। পরে পরশ লন্ড্রির দোকানটি কিনে নেন। এ সময় আরেক প্রবাসী চট্টগ্রামের ফেরদৌস মিয়ার ছেলে রেজুয়ানুল ইসলামের সঙ্গে পরশের বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রেজুয়ানুলের পরামর্শে আরো বেশি উপার্জনের আশায় লন্ড্রির দোকান বিক্রি করে নতুন ব্যবসার চেষ্টা করেন পরশ।
এ সময় রেজুয়ানুল বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলে পরশের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা ধার নেন। পাশাপাশি পরশকে মোটা দাগের ব্যাংক লোন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে পরশের কাছ থেকে একটি ব্ল্যাংক চেক ও এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড নিয়ে নেন। কিছুদিন পর ধারের টাকা দেয়, দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করে রেজুয়ানুল। এক পর্যায়ে পরশের সঙ্গে রেজুয়ানুলের সম্পর্কের অবনতি হয়। তখন ব্ল্যাংক চেক ফেরত না দিয়ে পরশের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (এমারত ইসলামী ব্যাংক, আবুধাবী শাখা) থেকে ৩০ লাখ টাকা তুলে নেন রেজুয়ানুল। এ অবস্থায় পরশ ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ২০২০ সালের ৯ আগস্ট রেজুয়ানুলের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী নিলাকে দিয়ে সাজানো মামলা দিয়ে পরশকে গ্রেপ্তার করায়। পরশকে গ্রেপ্তারের এক সপ্তাহ পরে রেজুয়ানুল দুবাই থেকে ৯৭১৫৬২২৩৮৮১২ ও ৯৭১৫৬১৯৮৪২৮৬ নম্বর দিয়ে পরশের স্ত্রী সুমি আক্তারের ০১৮৪০৬০৫৪৯৬ নম্বরে ফোন দিয়ে জানায়, পরশ তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা করায় জেলে আটক। মোটা অঙ্কের টাকা পাঠালে পরশ মুক্তি পাবে। পরশকে মুক্ত করতে স্বর্ণালঙ্কার ও মোটরসাইকেল বিক্রি করে ৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা রেজুয়ানুলের নামে পাঠায় পরশের স্ত্রী। পরে রেজুয়ানুল আরো ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। তাদের কথামতো আরো ১৪ লাখ টাকা পাঠায়। কিন্তু পরশের মুক্তি মেলেনি।
এ অবস্থায় মাসখানেক পর দুবাই জেল থেকে পরশ তার স্ত্রী সুমি আক্তারকে জানায়, সে রেজুয়ানুল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণার শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়ে কারাগারে রয়েছে। পরশ তার স্ত্রীকে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে আরো জানায়, প্রতারক রেজুয়ানুলের স্ত্রীর সাজানো মিথ্যা মামলায় তার (পরশের) ১৩ বছরের সাজা হয়। পরে আপিল করলে সে সাজা ৮ বছর কমানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পরশের স্ত্রী আরো জানান, ২৭ আগস্ট প্রতারক রেজুয়ানুল তাকে ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরশের মুক্তি ও প্রতারক চক্রের কবল থেকে টাকা উদ্ধারের জোর দাবি জানিয়েছেন পরশের স্ত্রী ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে পরশের স্ত্রী সুমি আক্তার, সন্তান ও বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়