ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

টাইগারদের কিউই বধের মিশন শুরু আগামীকাল

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্ববাসীকে নিজেদের শক্তিসামর্থ্য জানান দিয়েছে টাইগাররা। ঘরের মাঠে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা বরাবরই অপ্রতিরোধ্য। আগামীকাল টাইগাররা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে। মিরপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল ৪টায়। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ৩ সেপ্টেম্বর। এরপর ৫, ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর অবশিষ্ট তিন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করতে পারলে টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫ নম্বরে উঠে আসবে। ওয়ান সিরিজে কিউইদের সেরা দলকে বাংলাওয়াশের স্বাদ দিয়েছে টাইগাররা। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগারদের বিপক্ষে দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়ে নিউজিল্যান্ড হয়তো হারের লজ্জা কমাতে কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বলে ক্রিকেটবোদ্ধাদের ধারণা। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজে ফিল্ড আম্পায়ার, টিভি আম্পায়ার ও চতুর্থ আম্পায়ারের দায়িত্ব থাকবেন বাংলাদেশের চারজন আম্পায়ার। ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় থাকবেন নিয়ামুর রশিদ রাহুল।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্রিকেটীয় নিয়মে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে আইসিসি। যেখানে বলা আছে, ঘরের মাঠের সিরিজগুলোয় দেশি আম্পায়ারের অধীনেই খেলতে পারবে স্বাগতিক দলগুলো। আইসিসির এমন নিয়মের কারণে আগামী ১ সেপ্টেম্বর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ও গাজী সোহেল। এ ম্যাচে টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করবেন মাসুদুর রহমান মুকুল এবং চতুর্থ বা রিজার্ভ আম্পায়ার থাকবেন তানভীর আহমেদ। ৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠের দায়িত্ব পড়েছে মাসুদুর রহমান মুকুল ও তানভীর আহমেদের। এ ম্যাচের টিভি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ও চতুর্থ আম্পায়ার গাজী সোহেল।
সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ৫ সেপ্টেম্বর। এ ম্যাচে টেলিভিশন রিপ্লে দেখবেন তানভীর আহমেদ। মাঠের দায়িত্ব পালন করবেন শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ও মাসুদুর রহমান মুকুল। চতুর্থ আম্পায়ার গাজী সোহেল। ৮ সেপ্টেম্বর চতুর্থ ম্যাচের দুই ফিল্ড আম্পায়ার তানভীর আহমেদ ও গাজী সোহেল। টিভি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল, চতুর্থ আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ।
১০ সেপ্টেম্বর সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে মাঠের দায়িত্ব পড়েছে শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ও তানভীর আহমেদের। টিভি আম্পায়ার গাজী সোহেল, চতুর্থ আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল।
সম্প্রতি দেশে-বিদেশে তরুণ টাইগার ক্রিকেটাররা সিনিয়রদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারফর্ম করেছেন। চলতি বছর প্রায় প্রতিটি সিরিজেই দলের প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছেন আফিফ হোসেন ধ্রæব, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও শামীম পাটোয়ারীরা। কদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে সিনিয়র বলতে ছিলেন কেবল সাকিব আল হাসান। তবুও টাইগাররা সিরিজটিতে জিতেছে ৪-১ ব্যবধানে। যেখানে সিনিয়রদের পাশাপাশি অবদান রেখেছেন দলের তরুণ ক্রিকেটাররাও। তাই টাইগার দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান মনে করেন, তরুণরা তাদের থেকেও এগিয়ে আছেন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার এ বলেন, নতুন যারা এসেছে বয়স কম হলেও ওরা অনেক বেশি পরিপক্ব। অন্তত আমাদের চেয়ে পরিপক্ব। বিপিএল খেলার কারণে অনেক চাপ নিয়ে অভ্যস্ত। এ কারণে যখন ওরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামে, ওই চাপ নিয়ে অভ্যস্ত থাকে। ওরা যখন আসে, তখন ওরা জানে কী কী পরিস্থিতির সামনে ওদের পড়তে হবে।
সবার মধ্যেই সম্ভাবনা আছে অনেক ভালো করার। আমি দু-একজনের নাম নিতে চাই না। যারা দলে সুযোগ পেয়েছে, তারা যোগ্য বলেই সুযোগ পেয়েছে। প্রতিভাবান বলেই তারা দলে আসছে। সবারই সম্ভাবনা আছে অনেক ভালো কিছু করার।
এছাড়া নতুন একটি দল নিয়েই বাংলাদেশ সফরে এসেছে নিউজিল্যান্ড। এমন দলের সঙ্গে খেলে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ভালো হবে না বলে মনে করেন অনেকে। তবে এ ধারণার সঙ্গে মোটেও একমত নন সাকিব। তার মতে যারা নিউজিল্যান্ডকে অবজ্ঞা করছে, তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া উচিত। এ বিষয় সাকিব বলেন, আমার মনে হয় একমাত্র বাংলাদেশের মানুষ ও বাংলাদেশের মিডিয়া এ ধরনের চিন্তা করে থাকে।
তাদের মতে ‘বি’ দল, ‘সি’ কিংবা অন্য দল। আসলে এটা নিউজিল্যান্ড জাতীয় দল। আমাদের সেভাবেই তাদের শ্রদ্ধা করা উচিত। এর বাইরে আসলে আমি আর কিছু চিন্তা করছি না। যারা চিন্তা করছে, তাদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করা জরুরি। আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারব না। জিততে হলে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।
যদিও নিউজিল্যান্ড দলটা অত বেশি অভিজ্ঞ না, তারপরও অনেক ভালো দল। নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফর্ম করেই ওরা জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। সবাই যেভাবে বলছে খুব সহজেই জিতে যাব। আসলে খেলাটা অতটা সহজ নয়।
এদিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৯ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু দলে উইকেটরক্ষক আছেন তিনজন। মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাস দুই সিরিজ পর দলে ফিরেছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ে আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে উইকেটের পেছনে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন নুরুল হাসান সোহান। তাই এবার ঘরের মাঠে কিউইদের বিপক্ষে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন কে এমন ভাবনায় ডুবে আছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে গতকাল বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। কিউইদের বিপক্ষে উইকেটরক্ষকের বিষয় তিনি বলেন, লিটনকে দেখা যাবে না গøাভস হাতে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে শুরুর দুই ম্যাচ কিপিং করবেন সোহান, আর পরের দুই ম্যাচে গøাভস উঠবে অভিজ্ঞ মুশফিকের হাতে।
এই চার ম্যাচের পারফরম্যান্স বিবেচনায় পঞ্চম ও শেষ ম্যাচের উইকেটরক্ষক নির্বাচন করবে টিম ম্যানেজমেন্ট। এ সিরিজে আমরা উইকেটরক্ষকের দায়িত্বটা ভাগাভাগি করছি। দুই ম্যাচ করে সুযোগ দিয়ে পঞ্চম ম্যাচে সিদ্ধান্ত নেব। এ ভিন্নতা থাকা ভালো। এটাই আপাতত আমাদের পরিকল্পনা।
এছাড়া কিপিংয়ের মতো ব্যাটিং বিভাগের ওপেনিং পজিশন নিয়েও মধুর সমস্যা চলছে টাইগার দলে। তামিম ইকবাল না ফিরলেও দলে ওপেনার তিনজন। আগের সিরিজে সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ ওপেন করেছেন। এবার ফিরেছেন লিটন দাস। ডমিঙ্গো অবশ্য এ বিষয়ে এখনো খোলাসা করেননি। কোন দুজন ওপেন করবেন, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
ডমিঙ্গো বলেন, আমাদের তিনজন আছেন যারা ওপেন করতে পারে। সৌম্য, লিটন ও নাঈম আছে। আমরা নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। তবে মুশফিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো সে চার নম্বরে ব্যাটিং করবে। এ জায়গায় তিনি সফল। সে ইনিংস ধরে রাখতে পারে। মিডল ওভারে এসে এক-দুই রান নিতে পারে। ম্যাচটাও শেষ করে আসতে পারে। মুশফিককে দলে পাওয়া আমাদের জন্য ভালো খবর। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য দলগুলোর থেকে খেলোয়াড় ও অফিসিয়ালদের তালিকা চেয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেই তালিকা পাঠাতে হবে। আগের মতোই ১৫ জন খেলোয়াড় ও ৮ জন অফিসিয়ালের নাম চেয়েছে আয়োজকরা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটি বাংলাদেশের শেষ প্রতিযোগিতামূলক সিরিজ। এজন্য সম্ভাব্য সেরা খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখে সেরা দল বেছে নিতে চান নির্বাচকরা। নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য ১৯ সদস্যের স্কোয়াড দিয়েছে বিসিবি। সেই তালিকায় বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। উল্টো মূল দলে খেলোয়াড় সংখ্যা কমবে।
নিশ্চিতভাবেই মূল দলে জায়গা পেতে খেলোয়াড়দের মধ্যেও চলবে প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতা ভালো ফল দিতে পারে। আবার উল্টো কিছুও হতে পারে। সেসব বিবেচনায় সিরিজের আগে দল ঘোষণার দাবি জানান টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তার মতে, বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে হবে, এমন ভাবনা চলে আসতে পারে যে কারো মনে। তখন মানসিকভাবে চাপ বাড়বে। স্বাভাবিক খেলাটাও হয়তো খেলা সম্ভব হবে না। সেই চাপ না রাখতে, তাদের ফুরফুরে হয়ে খেলতে দিতে স্কোয়াড ঘোষণার তাগিদ দিয়েছেন ডমিঙ্গো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়