প্রণোদনা ঋণের জন্য ঘুষ লাগে ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর

আগের সংবাদ

অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে : করোনার প্রকোপ কমার পর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও বিষণ্নতার বড় আঘাত আসছে

পরের সংবাদ

এবার মার্কিন রকেট হামলায় কেঁপে উঠল কাবুল : আমিরুল মুমিনিন-এর নেতৃত্বে তালেবান তত্ত্বাবধায়ক সরকার

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আফগানিস্তানের বহুধাবিভক্ত জাতিগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ ও ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকার গঠনের পথে রয়েছে দখলদার তালেবানরা। এ তথ্য জানিয়ে তালেবানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর শুরা কমিটির এক সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, তালেবান অধিনায়কদের নেতৃত্বে দেশের সব উপজাতি ও নৃগোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে শিগগিরই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে একজন ‘আমিরুল মুমিনিন’ (বিশ্বাসীদের অধিনায়ক) নিয়োগ দেয়া হবে, যিনি ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন। আপাতত শীর্ষস্তরের এসব পদে নিয়োগদানের জন্য ডজনখানেক ‘নাম’ বিবেচনা করা হচ্ছে, জানান তিনি। তবে কত দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রদান করা সম্ভব হবে দেশটিতে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ।
তবে তিনি জানান, এসব কাজের জন্য তালেবানদের মধ্যে একটি সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর পরিষদ

গঠন করা হয়েছে যারা হবু সরকারের ধরন নির্ধারণ করবেন ও মন্ত্রিবর্গের নিয়োগ দেবেন। ওই সরকারে বেশ কিছু নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। কেননা, পার্বত্য অঞ্চল নিবাসী তাজিক এবং উজবেক নেতাদের সন্তানদেরও নতুন এই সরকারে জায়গা দেয়া হতে পারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বারবার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে, যাতে তালেবানের নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে হামিদ কারজাই এবং আবদুল্লা আবদুল্লাহসহ দেশটির সদ্যবিদায়ী সরকারের বেশ কিছু সদস্যকে জায়গা দেয়া হয়।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি গণমাধ্যম এ ব্যাপারে শুরা কমিটির ওই সদস্যের বরাতে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়োগ দেয়া হবে বিচার বিভাগ, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য ও কাবুলবিষয়ক বিশেষ দায়িত্ব খাতে। এ কাজ বাস্তবায়নে এ মুহূর্তে রাজধানী কাবুলে অবস্থান করছেন তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মুল্লা আবদুল গনি বরদার। অন্যদিকে সরকার গঠন প্রক্রিয়ার আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কান্দাহার ছেড়ে ইতোমধ্যে কাবুলের পথে রওনা হয়েছেন তালেবান সেনাপ্রধান মুল্লা মুহাম্মাদ ইয়াকুব। উল্লেখ্য, চার কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত আফগানিস্তানে ডজন ডজন গোষ্ঠী ও উপজাতি রয়েছে, তবে তারা কেউই এককভাবে দেশটির প্রাধান্য দাবি করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। আফগান জনসংখ্যার ৪২ শতাংশই পশতুন। মূলত সুন্নি মতানুসারী পশতুন ভাষাভাষী এ জনগোষ্ঠীর সদস্যরাই গত ১৮ শতক থেকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দেশটির রাজনীতি।
এদিকে তালেবান যোদ্ধারা কাবুল বিমানবন্দরের তিনটি ফটকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে- তালেবানের এ দাবি অস্বীকার করে পেন্টাগন জানায়, মার্কিন সেনারা এখনো বিমানবন্দরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যদিকে তালেবান মুখপাত্র গণমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে কয়েক হাজার আফগানের বিশৃঙ্খলার খবরটি সবখানে ফলাও প্রচার হচ্ছে- অথচ কাবুলে লাখ লাখ মানুষ যে নিñিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন, সেটি তুলে ধরা হচ্ছে না। তালেবান সরকারে নারী অধিকার বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকারের অধীনে যেমন ছিল, বর্তমান সরকারের অধীনেও আফগান নারীরা- বিশেষত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে, কাজের সুযোগ পাবে। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতি মোকাবিলায় শরিয়া আইনের আওতায় বিশেষ আদালত গঠন করা হবে, যেখানে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা রাখা হবে।
কাবুল বিমানবন্দরে ফের বিস্ফোরণ : আফগান রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরের কাছে আবারো বিকট আওয়াজে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তালেবান মুখপাত্র জানান, মার্কিন বাহিনী এ হামলা চালায়। একজন ‘আত্মঘাতী হামলাকারী’ গাড়িতে করে বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, এ তথ্য পাওয়ার পর তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় মার্কিন সেনারা। অন্যদিকে রয়টার্স জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীরা এই বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা কয়েকটি ছবিতে আকাশে কালো ধোঁয়াও উড়তে দেখা গেছে। কাবুলের পুলিশপ্রধান জানান, হামলায় এক শিশুসহ দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিবিসি জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ওই এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে রকেট হামলা থেকে। তবে সেটি সরাসরি বিমানবন্দরে আঘাত হানেনি, কাছের একটি বাড়িতে গিয়ে পড়ে।
শাফি কারিমি নামের একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক টুইটারে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে বিমানবন্দরের কাছে একটি বাড়ি থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। তবে ওই ভিডিওর সত্যতা বিবিসি নিশ্চিত করতে পারেনি। দুজন প্রত্যক্ষদর্শীও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বিমানবন্দরের উত্তর পাশের এলাকায় একটি বাড়িতে রকেট আঘাত হেনেছে বলেই তাদের মনে হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে তারা নিশ্চিত কিছু জানতে পারেননি। সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতার মধ্যে গত বুধবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পরে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস সেই হামলার দায় স্বীকার করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়