ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

প্রণোদনা ঋণের জন্য ঘুষ লাগে ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ পেতে উদ্যোক্তাদের ঘুষের আশ্রয় নিতে হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)। তারা আরো জানায়, করোনার আঘাতের ১৫ মাস পরেও ৬৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দুর্বল পুনরুদ্ধারে রয়েছে। সানেম এবং এশিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পরিচালিত ‘ব্যবসায় আস্থা জরিপ’-এ এ তথ্য উঠে এসেছে।
৫ম পর্যায়ের এ জরিপের যে ফলাফল পাওয়া গেছে, তা গতকাল শনিবার প্রকাশ করে সানেম জানায়, মাত্র ৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের পৌঁছাতে পেরেছে। এছাড়া সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ পেতে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ২৯ শতাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠান। ৫০২টি শিল্প ও সেবা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে জরিপটি পরিচালনা করে তারা। সংবাদ সম্মেলনে জরিপের প্রক্রিয়া ও ফলাফল তুলে ধরেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান।
অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ যারা পেয়েছে, তারা ভালো অবস্থায় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা এ প্রণোদনা পাননি, তারা কিন্তু পিছিয়ে রয়েছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা মাঝারি ও বৃহৎ পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের তুলনায় বেশি পিছিয়ে আছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজ পেতে ঘুষের অভিযোগও করেছেন উদ্যোক্তারা। তিনি বলেন, জরিপে নেয়া ২৯ শতাংশ উদ্যোক্তা কিংবা তাদের প্রতিনিধিরা ঘুষ দাবির অভিযোগ করেছেন। ৪৭ শতাংশ হ্যাঁ কিংবা না কোনোটাই বলেননি। মৌনতা সম্মতির লক্ষণ হিসেবে নিলে এরাও ঘুষের শিকার বলে ধরে নেয়া যায়। তারা হয়তো নানান দিক থেকে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই সরাসরি হ্যাঁ বলতে চাননি। আর মাত্র ২৪ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের কাছে ঘুষ চাওয়া হয়নি। শিল্প কিংবা সেবা প্রতিষ্ঠানের ধরন ব্যাখ্যা করে ড. সেলিম রায়হান বলেন, ঘুষের অভিযোগ তোলা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্ষুদ ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই বেশি। মোট ৪২ শতাংশ এ ধরনের প্রতিষ্ঠান। ৩৫ শতাংশ ক্ষুদ্র আকারের প্রতিষ্ঠান। ঘুষের দাবিসহ একরম বিভিন্ন কারণে জরিপে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জুলাই পর্যন্ত ৭৯ শতাংশ প্রণোদন প্যাকেজের বাইরে রয়ে গেছে। অর্থাৎ মাত্র ২১ শতাংশ প্যাকেজ থেকে ঋণ সুবিধা পেয়েছে।
জরিপের ফলাফল উপস্থাপনের সময় অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, পিবিএসআইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি পর্যায়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে থাকলেও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও রিয়েল এস্টেট খাতগুলোর অবস্থা তুলনামূলকভাবে খারাপ।
টিকা নেয়ার ব্যাপারে জরিপকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় ৬০ শতাংশ নির্বাহী অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেই টিকা নেয়ার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, গত দেড় বছরে কোভিড মহামারি ও লকডাউনসহ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝে কোভিড পরিস্থিতির একটি প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে এ প্যাটার্নকে মাথায় রেখে এলাকা ও খাতভিত্তিক প্রোটোকল নেয়া অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে দুটি ক্ষেত্রে- টিকাদান কর্মসূচি ও প্রণোদনা প্যাকেজ।
জরিপে বলা হয়, এখনো একটি বড় অংশের কর্মীদের মধ্যে অন্তত এক ডোজ টিকাও না পাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব এই অবস্থার উন্নতি না করলে এ অনিশ্চিত পরিস্থিতি পরবর্তী সময়ে আরো খারাপ হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়