ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

মা ও ছেলে অপহরণ : এএসপিসহ ৩ সিআইডি পুলিশ বরখাস্ত

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. দেলোয়ার হোসেন, দিনাজপুুর থেকে : দিনাজপুরে মুক্তিপণের দাবিতে মা ও ছেলে অপহরণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রংপুর সিআইডি জোনের এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগসহ ৩ সিআইডি পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রংপুর সিআইডি জোনের ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান মোবাইল ফোনে গতকাল শনিবার দুপুর ২টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রংপুর সিআইডি জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সারোয়ার কবীর সোহাগ, উপসহকারী পরিদর্শক হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক ফারুককে পুলিশের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক ফারুককে গতকাল শনিবার সকালে তিনি নিজেই পুলিশ অধ্যাদেশ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করেন। অপরজন বিসিএস ক্যাডারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গতকাল দুপুরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি এ বিষয়টি সিআইডি সদর দপ্তরের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত হয়েছেন।
সিআইডি পুলিশের সূত্রটি জানায়, গত ২৩ আগস্ট দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দাইল গ্রাম থেকে মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে অপহরণ এবং ২৪ আগস্ট রাতে মুক্তিপণ গ্রহণের সময় পুলিশের অভিযানে ওই ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনার পর বিষয়টি সিআইডি সদর দপ্তর ঢাকায় পত্র মারফত অবহিত করা হয়েছে। তারপর থেকেই সিআইডি পুলিশের ৩ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট সিআইডি সদর দপ্তরের নির্দেশে দিনাজপুর সিআইডি জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়কে ঘটনাটি অনুসন্ধান করে গ্রেপ্তারকৃত ৩ সিআইডি পুলিশ সদস্য কী ধরনের অপরাধ করেছেন তা অবহিত করতে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
দিনাজপুর সিআইডি জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় মোবাইল ফোনে জানান, তিনি গত ২৫ আগস্ট সিআইডি সদর দপ্তরের নির্দেশে এই ঘটনা অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন। পরদিন ২৬ আগস্ট থেকেই তিনি অনুসন্ধান শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার তিনি চিরিরবন্দর ঘটনাস্থল নান্দাইল গ্রাম পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরপেক্ষ সাক্ষীদের সঙ্গে ঘটনার বিষয় নিয়ে তথ্য উদ্ঘাটনের কাজ করেন। তবে এ পর্যন্ত কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন তিনি অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রকাশ করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অপহৃত জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে গত ২৫ আগস্ট চিরিরবন্দর থানায় একটি অপহরণ, চাঁদাবাজি, লুণ্ঠন, ক্ষতিসাধন ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩ সিআইডি পুলিশসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এজাহারনামীয় অপর ৫ আসামি এখনো পলাতক রয়েছে। মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে ওই দিনই দিনাজপুর ডিবি পুলিশকে তদন্তের জন্য চিরিরবন্দর থানা থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় তার কার্যালয়ে জানান, এ মামলার অন্যতম আসামি দিনাজপুর শহরের নিমনগর মহল্লার ইনামুল হকের ছেলে ফসিউল আলম পলাশ (৩৫) গত ২৫ আগস্ট রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে সাক্ষী হিসেবে ভিকটিম জহুরা বেগম ও তার ছেলে এজাহারকারী জাহাঙ্গীর আলম নিজেও ওই দিন রাতে বিচারকের কাছে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। পরদিন ২৬ আগস্ট মামলার অন্যতম সাক্ষী চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দাইল গ্রামের আফতাব উদ্দীনের ছেলে কামরুল ইসলাম ও একই উপজেলার পূর্ব সাইতাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে আফতাবুর জামানের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটনার ভিকটিম জহুরা বেগম ও জাহাঙ্গীর আলমকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, ঘটনাটিতে যেহেতু সিআইডি পুলিশের ৩ সদস্য জড়িত সেজন্য বিষয়টি সিআইডি সদর দপ্তর, পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পত্র মারফত অবহিত করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাটি ইতোমধ্যেই প্রাথমিকভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণে ও প্রাপ্ত আলমতে তাদের কাছে প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশ পেলেই শিগগিরই তদন্তে প্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়