ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : দুই জেলায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এ অবস্থায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরাঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। অন্যদিকে গাইবান্ধার সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ অবস্থায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরাঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। এসব এলাকার মেঠোপথ, কাঁচা সড়ক তলিয়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঙছে নদী। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও দুধকুমারসহ সব কয়েকটি নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনকবলিত এলাকাসমূহে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও তা কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলার হাতীয়া ইউনিয়ন ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বাঁধের রাস্তার ভাঙা অংশ দিয়ে তীব্র বেগে নদীর পানি ঢুকে পড়ায় বাঁধের ভেতর ৪টি ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ রোপা আমনক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে, হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর বাজার লাগোয়া বাঁধের ভাঙা অংশ ১০ বছর ধরে রহস্যজনক কারণে বন্ধ না করায় প্রতি বছর বন্যার সময় বাঁধের ভেতর ব্যাপক আকারে ফসলের ক্ষতি হয়।
এদিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বন্যায় জেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও ৮৫ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের ধরলা পাড়ের কৃষক আব্দুস ছালাম জানান, বন্যার পানিতে পটলক্ষেত তলিয়ে গেছে। রোপা আমনক্ষেত প্রায় নিশ্চিহ্ন। গ্রামের রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। এমন কথা শোনালেন যাত্রাপুর এলাকার আব্দুল মালেক, কহিনুর বেওয়া, সাজ্জাদ হোসেন, মঞ্জু মিয়াসহ অনেকে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির আমনক্ষেত ও ৮৫ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, উজানে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় আশা করছি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধরলা ও তিস্তার পানি কমতে শুরু করবে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও আরো দুদিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
গাইবান্ধা : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে গাইবান্ধার সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু দুপুরে বেড়ে তা বিপদসীমানা উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে।
জেলার সাঘাটা, ফুলছড়ি, সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত ১৬টি ইউনিয়নের ১৫৫টি চরের অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। নিচু এলাকার বাড়িঘর হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ফলে এসব এলাকার বসতবাড়ির ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যানুযায়ী, শনিবার বিকাল ৫টার দিকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পানি বৃদ্ধি আগামী চার থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ফলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যার কারণে সাঘাটা, ফুলছড়ি, সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের পাট, পটল, কাঁচামরিচ ও শাক-সবজির ক্ষেতসহ সদ্য রোপণকৃত আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়