কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই নারীর

আগের সংবাদ

শাড়িতেই এবার পকেট

পরের সংবাদ

ন্যাশনাল সার্ভিসে দুর্নীতি : সাদুল্লাপুরে যুব উন্নয়নের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলায় কর্মরত সাবেক দুই যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তা দুজনকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর আহম্মেদ লস্কর জানান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন।
অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন- সাদুল্লাপুর উপজেলার সাবেক যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী ভূঞা (বর্তমানে নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় কর্মরত) ও মো. হাসান আলী (বর্তমানে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় কর্মরত)।
আদেশে বলা হয়, তৎকালীন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইউসুফ আলী ভূঞা উপজেলা সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ৪ হাজার ২৯৪ জনের তালিকা কৌশলে সরিয়ে ফেলেন। পরে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ৪ হাজার ২৯৪ জনের একটি তালিকা তৈরি করেন। এছাড়া ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিভুক্ত কাজ করার জন্য ইমরান হোসেন নামে বহিরাগত একজনকে বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেন।
অপর এক অফিস আদেশে বলা হয়, তৎকালীন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হাসান আলী সাদুল্লাপুর উপজেলায় যোগদানের পর ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ৪ হাজার ২৯৪ জনের একটি অননুমোদিত তালিকা পান। এখানে আরো উল্লেখ করা হয় অনুমোদিত ৪ হাজার ২৯৪ জনের তালিকা থেকে ১ হাজার সুবিধাভোগী নাম কৌশলে সরিয়ে ফেলে নতুন করে অবৈধ ১ হাজার জন সুবিধাভোগীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিষয়টি তিনি অবগত হওয়ার পরও তিনি বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে উপস্থাপন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে ওই তালিকা দিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এতে সরকারের ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়।
এছাড়া এ প্রশিক্ষণে যেসব সুবিধাভোগী আংশিক উপস্থিত ছিলেন তাদের সবাইকে পরিপূর্ণ ভাতা দেয়া হয়। এভাবে তিনি সরকারি টাকা অপচয় করেন।
এদিকে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিভুক্ত কাজ করার জন্য বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বহিরাগত ইমরান হোসেনকে দিয়ে তিনি কম্পিউটার কম্পোজসহ আর্থিক নথিপত্রের কাজ সম্পাদন করান। তার মাধ্যমে তিনিও সব ধরনের দুর্নীতির সুযোগ গ্রহণ করেন।
উভয় আদেশে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তাই অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত তৎকালীন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী ভূঞা ও মো. হোসেন আলী সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩ (খ) ও ৩ (ঘ) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। সুতরাং কেন তাদের বরখাস্ত করা হবে না তার জবাব আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ বিষয়ে একটি টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে সম্প্রতি তদন্ত কমিটি গঠন করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। যুগ্ম সচিব বদরে মুনিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির এসব বিষয় সরজমিন তদন্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে সাদুল্লাপুর উপজেলার সাবেক যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইউসুফ আলী ভূঞা এবং হাসান আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়