কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই নারীর

আগের সংবাদ

শাড়িতেই এবার পকেট

পরের সংবাদ

কবরে দেয়ার আগে কেঁদে উঠল নবজাতক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : রাখে আল্লাহ, মারে কে। মৃত ঘোষণার পর বেঁচে ওঠা এই শিশুটি এখন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জন্ম হওয়ার কিছুক্ষণ পর নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকরা। এরপর শিশুটিকে কবর দিতে কার্টনে করে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। কার্টনে থাকার দুই ঘণ্টা পর নবজাতক শিশুকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কবরস্থানে নেয়ার আগে স্থানীয় এক আলেম মৃত নবজাতককে দেখার জন্য বাঁধা কার্টনটি খোলেন। আর তখনই কেঁদে ওঠে শিশুটি।
অলৌকিকভাবে বেঁচে ওঠার খবর পেয়ে শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য শত শত মানুষ ছুটে আসে। গত বৃহস্পতিবার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার কানুদাশকাঠী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসব তথ্য জানান শিশুটির বাবা মো. ফোরকান মৃধা।
কেঁদে ওঠার পর নবজাতকে দ্রুত ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই সে শিশু বিভাগের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুটির বাবা মো. ফোরকান মৃধা ভাণ্ডারিয়া পৌরশহরের একটি ভাড়া দোকানে ফ্রিজ মেকারের কাজ করেন। তার গ্রামের বাড়ি ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাশকাঠী গ্রামে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রী বিলকিসের পেটে ব্যথা শুরু হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিনিয়র নার্স ফাহিমার কাছে নিয়ে গেলে তিনি স্ত্রীর অবস্থা জানতে একটি আল্টাসোনোগ্রাম করে ডাক্তারকে দেখাতে বলেন। আমি স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন লাবণ্য ক্লিনিকে আল্টাসোনোগ্রাম করতে গেলে স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং সেখানেই নরমালি একটি পুত্র সন্তান প্রসব হয়। তখন ওই ক্লিনিকের চিকিৎসকরা আমাদের শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন এবং স্ত্রী বিলকিসকে ওষুধপত্র লিখে দেন।
পরে নার্সদের সহযোগিতায় নবজাতকটিকে একটি কাগজের কার্টনে ভরে কবর দেয়ার জন্য বাড়ি নিয়ে যাই। প্রায় দুঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কবরস্থানে নেয়ার আগে স্থানীয় এক আলেম (হুজুর) মৃত নবজাতককে দেখার জন্য কার্টনটি খোলেন। আর তখনই কেঁদে ওঠে শিশুটি। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে প্রথমে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।
ওই ক্লিনিকের সামনে ওষুধ কিনতে আসেন রোগী নাসিমা বেগম। তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, জন্মের কিছুক্ষণ পর ওই ক্লিনিকের নার্স ও কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কোনো প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাকে একটি কার্টনে ভরে দেন। শিশুটির বাবা মো. ফোরকান মৃধা বলেন, মা ও শিশু উভয়ই এখন সুস্থ। আমার ছেলেকে মহান আল্লাহ রক্ষা করেছেন। তাই সবার কাছে দোয়া চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে লাবণ্য ক্লিনিকের ম্যানেজার ফিরোজ বলেন, রোগী আল্টাসনোগ্রাম করতে এসে হঠাৎ সন্তান প্রসব করে। নার্সরা শিশুটি জন্মের পর রক্ত মাখামাখি অবস্থায় তার পালস ও হার্টবিট চেষ্টা করেও পাননি। নবজাতকের মা আমাদের ভর্তি রোগী নয়। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, শিশুটির ৭ মাসে জন্ম হয়েছে এবং শ্বাসকষ্ট দেখে মনে হয়েছে ওকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা গেলে বেঁচে যেতে পারে। তাই বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়