জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

আগের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

পরের সংবাদ

মো. আনোয়ারুল কবির টুটুল মেয়র, ভেড়ামারা পৌরসভা > পৌরসভাকে জনসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. ওলি ইসলাম, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) থেকে : ভেড়ামারা পৌরসভার উন্নয়নের চিত্র দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। মাত্র ৬ মাসেই পৌর এলাকার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছি। স্বাস্থ্যসম্মত এবং বসবাস উপযোগী পৌর এলাকা গড়ে তুলতে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি। নাগরিক অধিকার ও সেবার মান শতভাগ নিশ্চিত করতে আমি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। সেবার মান বাড়াতে পৌরবাসীকে নিয়মিত কর প্রদানে উদ্বুুদ্ধ করা হচ্ছে। পৌরসভার সর্বমোট ৬ হাজার গ্রাহক করের আওতায় রয়েছে। তবে নিয়মিত কর পরিশোধ করে থাকেন ৩ হাজার ২০০ গ্রাহক। বাকি গ্রাহকদেরও করের আওতায় আনতে কাজ করা হচ্ছে। পৌরবাসীর করের টাকা অপচয় নয়, তছরূপও নয়! পৌরসভার আওতায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে শহর আলোকিত রাখতে ১ হাজার ১০০টি আধুনিক মানের লাইট সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলো প্রয়োজনীয় সময়টুকু শুধু জ্বলবে। অযথাই বিদ্যুৎ পুড়িয়ে বাড়তি টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে না। সে জন্য সবখানে ডিজিটাল অটোটাইমার সুইচ সংযুক্ত করা হয়েছে। কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি গত ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর থেকে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রæতিগুলো বাস্তবায়নে একের পর এক কাজ করে যাচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে এমন কথাই জানালেন, মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল।
তিনি বলেন, বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে এই বর্ষা মৌসুমে। জলাবদ্ধতার হুমকিতে পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা। কারণ হিসেবে বললেন, দীর্ঘদিন জমে থাকা ড্রেনের ময়লা-আর্বজনা অপসারণ না করা। পৌর এলাকার ড্রেনগুলো দুর্বল ও অনেক পুরাতন। এগুলো প্রায় ১৫-২০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু

দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনের তলানিতে জমা ময়লা মাটি পরিষ্কার না করায় ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে। সেই কারণে পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে নির্মাণ, সংস্কার ও পরিষ্কার অভিযান কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। পৌর এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ২০ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এর মধ্যে ৫ কিলোমিটার প্রধান ড্রেন। গত ৯ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু করা হয়। যা এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ ড্রেন পরিষ্কার করেছি। বদ্ধ পানি সেই সঙ্গে আবর্জনা মিলে পঁচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতো। এ বিষয়ে পৌরবাসীর অভিযোগের শেষ ছিল না। নির্বাচনে পৌরবাসীর কাছে আমার দেয়া প্রতিশ্রæতির মধ্যে ছিল ড্রেনেজ ব্যবস্থার দ্রুত সমাধান করা। জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধ, মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ ছিল পৌরবাসী। বর্তমানে পৌরবাসী তা থেকে মুক্ত হয়েছে।
মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল জানান, ১৯৮৩ সালের ১ জানুয়ারি যাত্রা শুরু এ পৌরসভার। ৩.৮৯ বর্গ কিমি আয়তনের এই পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এখানে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৩৩৬। পুরুষ ৯ হাজার ২৪০ ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৯৬ জন। পৌরসভার ৮ম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আর এই সময়ের মধ্যে নাগরিক অসুবিধাগুলো দূর করতে আমি সক্ষম হব। আর তাই গ্রহণ করেছি ডিজিটাল পদ্ধতি। পৌর মার্কেটে কাদা পানিতে এখন আর জনগণকে কষ্ট করতে হয় না। পৌরবাসীর দাবি ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হলেই পৌরসভার প্রধান বড় জামে মসজিদটি নামাজ আদায়ের অনুপযোগী হতো। সেই সমস্যার সমাধান করেছি। পৌর এলাকার রাস্তাগুলো এখন আর পানিতে তলিয়ে যায় না। বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা আর যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে না। প্রতিনিয়ত ময়লাগুলো বাসা থেকে নিয়ে যাচ্ছে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। শেখ রাসেল পৌর শিশুপার্ক নির্মাণে চলছে ভূমি উন্নয়নের কাজ। ফুটপাত, আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ প্রশস্ত সড়ক নির্মাণে অল্প দিনেই টেন্ডার হবে। পৌর এলাকায় চলছে গোশালা নির্মাণে ভূমি উন্নয়ন কাজ। এছাড়া পৌরসভার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল জটিলতার সমাধান করেছি। আইসিটি সেক্টর করা হয়েছে আধুনিক ও মানসম্মত। যুবসমাজকে ভালো কাজে সম্পৃক্ত করতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এখানে বসবাসরত ৪০ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলে প্রদান করা হয়েছে ১ লাখ টাকা। করোনা মহামারিতে জনগণের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। প্রতিটি অসহায় ও দুস্থদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। নাগরিক সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে নেয়া হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় নিতে কাজ চলছে।
তিনি আরো বলেন, ভেড়ামারা পৌরসভাকে জনসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়াও পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মাদকমুক্ত, দূষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত এবং জলাবদ্ধতামুক্ত মানসম্মত পৌরসভা গড়তে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়