কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরে ১১ নম্বর সেকশনের একটি বাসার নিচতলায় গ্যাস রাইজার বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ ৭ জনের মধ্যে রাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৩ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। বাকিরাও আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
গত বুধবার রাত ১২টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের বাসায় গ্যাসলাইন ঠিক করার সময় বিস্ফোরণ হলে তারা দগ্ধ হন। ঘটনার পরই তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
দগ্ধরা হলেনÑ বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলামের ভাই শফিকুল ইসলাম (৩৫), তার মা রিনা বেগম (৫০), সৎমা রওশনারা বেগম (৭০), পাশের ভবনের ভাড়াটিয়া রেনু বেগম (৩৫), ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া নাজনীন আক্তার (২৫), তার মেয়ে নাওশীন তারান্নুম (৫) এবং প্রতিবেশী সুমন (৪০)। এদের মধ্যে রাতে রিনা বেগম (৫০) মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, শফিকুলের শরীরে ৮৫ শতাংশ, রিনার ৭০ শতাংশ, রওশনারার ৮৫ শতাংশ, রেনুর ৩৮ শতাংশ, নাজনীনের ২৭ শতাংশ, শিশু নাওশীনে ১৫ শতাংশ এবং সুমনের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক শফিকুল, রেনু, নাজনীন ও সুমনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদের ফিমেইল এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালী দগ্ধ হয়েছে। ৪৮-৭২ ঘণ্টা না পার হলে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
দগ্ধ শফিকুলের ভাই ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান, মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের ১১ নম্বর রোডের সি ব্লকের ৯ নম্বরের ছয়তলা বাড়িটি তাদের নিজেদের। বাড়ির নিচতলায় তিতাস গ্যাসের লাইনে লিকেজ ছিল। দুদিন আগেও তা মেরামত করা হয় কিন্তু বুধবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বিকট আওয়াজ করে বিস্ফোরণ হয়। এতে ৭ জন দগ্ধ হলে তাদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নাসির উদ্দিন জানান, কয়েকদিন ধরে ওই বাড়িতে গ্যাস ছিল না। রাতে লাইনে হঠাৎ গ্যাসের চাপ বেড়ে যায়। এ সময় বাড়ির মালিকসহ তারা গ্যাস রাইজার পরিষ্কার করছিল। হঠাৎ তা বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরলে সাতজন দগ্ধ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
দগ্ধ শফিকুলের ছোট বোন ফারজানা আক্তার সনিয়া বলেন, এক বছর ধরে তাদের বাসার গ্যাস লাইনে সমস্যা। বৃষ্টি নামলেই পাইপে পানি ঢুকে যায়, এরপর পানি বের করলে গ্যাস আসত। তিতাস কর্তৃপক্ষ আগে একবার এভাবে ঠিক করে দিয়েছিল। গত বুধবার রাতে বৃষ্টিতে পানি ঢুকে গেলে তা ঠিক করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে।
এদিকে দগ্ধ সুমনের স্ত্রী আয়শা বেগম বলেন, সুমন এলাকাতে বাসাবাড়িতে গিয়ে গ্যাসের চুলা ঠিক করে দেয়ার কাজ করতেন। এরআগে অনেকবার পাশের শফিকুলের বাসার গ্যাসপাইপ ঠিক করে দিয়েছেন। বুধবার রাতে আবার পাইপ ঠিক করতে যান এবং মেরামত করার সময়ই বিস্ফোরণ হলে তারা দগ্ধ হন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।