ডুপ্লেক্স বাসায় অগ্নিকাণ্ডে দুই গৃহকর্মীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ : লকডাউনে কাজ করলে এখন ভোগান্তি হতো না > জমানো পানিতে বাড়ছে এডিস মশা

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষা : বিদ্যালয় খুলে দিতে প্রস্তুত মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, স্কুল খোলার সব প্রস্তুতি আমাদের আছে। এ মুহূর্তে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলে আগামীকালই আমরা সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো খুলতে পারি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে।
স্কুল খোলার রূপরেখা নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্কুল হুট করে তো খুলে দেয়া যাবে না। আরেকটু স্বাভাবিক হলে হয়তো খোলা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ডব্লিউএইচও- সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অক্টোবরের আগে সম্ভব কিনা, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক তিনি বলতে পারবেন না। যে কোনো সময় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলে তারা প্রস্তুত আছেন।
তিনি আরো বলেন, বিজ্ঞজনরা স্কুল খোলার বিষয়ে মত দিচ্ছেন। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে আমাদের শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। তারা নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। অনলাইনেও আমাদের কিছু ডিস্টার্ব হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বাজে গেমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। আমার এলাকার শিশুরা তো সারা দিন খেলাধুলায় মত্ত। স্কুল বন্ধ থাকায় প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বাল্যবিবাহ বেড়েছে।
পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে, না পারলে গতবারের মতো : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, স্কুল খুলতে পারলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়া হবে। সেপ্টেম্বরে খুলতে পারলেও প্রস্তুতি আছে, অক্টোবরে খুলতে পারলেও প্রস্তুতি আছে। তবে সমাপনী পরীক্ষা সশরীরে হবে নাকি মূল্যায়নভিত্তিক হবে, এ সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি অনুযায়ী নেয়া হবে। এ রকম যদি পরিবেশ থাকে, তাহলে পরীক্ষা না নিয়ে আমরা গতবার যেভাবে মূল্যায়ন করেছি,
সেভাবে করব। আমরা তো ওয়ার্ক শিট দিচ্ছি। এই ওয়ার্ক
শিটগুলোই আমরা মূল্যায়ন করব। এই শিট অনুযায়ী শিশুরা কে কী করল, সেভাবেই আমরা মূল্যায়ন করব। স্কুল খুললে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই। আমরা যদি স্কুল খুলতে পারি, তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরীক্ষা নেব।
দুই ভাগে হবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ক্লাস : শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্কুল খুললে শ্রেণিভিত্তিক আলাদা আলাদা করে ক্লাস নেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এর মধ্যে থ্রি-ফোর-ফাইভ সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস নেয়ার পরিকল্পনা আছে। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে একদিন একদিন করে নেয়া হবে। এভাবে আমরা করতে চাচ্ছি। আমাদের কারিকুলাম অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত একটা সিলেবাসও চিন্তাভাবনা করছি।
প্রাথমিকের ৮৫ শতাংশ শিক্ষক টিকা নিয়েছেন : প্রতিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর থেকে শিশুরা বাড়িতে আছে। নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। পড়াশোনা থেকে দূরে যাচ্ছে। গ্রামের শিশুরা তো খেলাধুলা নিয়ে মত্ত। অনলাইনে অনেকে বাজে গেমস খেলছে। যখন পড়াশোনা থাকে না, স্কুল থাকে না, তখন বিভিন্নভাবে আড্ডা দেয়। চরের শিশুদের বাল্যবিবাহের কিছুটা প্রবণতা বাড়ছে। এসব মিলে তারা চাচ্ছেন, যত তাড়াতাড়ি স্কুল খুলে দিতে। স্কুল খুললে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, সেই নির্দেশনাও দেয়া আছে। প্রাথমিকের ৮৫ শতাংশ শিক্ষক এরই মধ্যে করোনার টিকা নিয়েছেন। সবাইকে টিকা দেয়া হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে একগুচ্ছ নির্দেশনা : দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় শতভাগ শিক্ষক উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক খোলার উপযুক্ত রাখতে মাউশি থেকে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সব শিক্ষককে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সহকারী উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারদের এক সপ্তাহের মধ্যে সব বিদ্যালয় পরিদর্শন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মনসুরুল আলম।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন, ওয়ার্ক শিট বিতরণ শতভাগ নিশ্চিতকরণ ও যাচাই করা, শিখন ঘাটতির অবস্থা ও ফিডব্যাক নেয়া, বিদ্যালয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, হোম ভিজিট যাচাই করা, শিক্ষার্থী প্রোফাইল শতভাগ হয়েছে কিনা তা দেখা, দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা, স্যাম্পল হিসেবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি যাওয়া এবং তাদের যোগাযোগ রেজিস্টার যাচাই করা। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক ঠিক করার জন্য দ্রুত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের আদেশ যথাযথ পালন করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং বিদ্যালয় খোলার সার্বিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক পরিচালকদের নির্দেশ দিয়েছি।
ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের : সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়াসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়