ডুপ্লেক্স বাসায় অগ্নিকাণ্ডে দুই গৃহকর্মীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ : লকডাউনে কাজ করলে এখন ভোগান্তি হতো না > জমানো পানিতে বাড়ছে এডিস মশা

পরের সংবাদ

কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনসুর আলী, ঠাকুরগাঁও থেকে : কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ডিলাররা সাধারণ চাষিদের কাছে বেশি দামে রাসায়নিক সার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যাশ মেমোর মাধ্যমে চাষিদের কাছে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। অদৃশ্য কারণে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩০০-৪৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কৃষি বিভাগ ও বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে বাফার নিবন্ধিত ৬৩ জন ডিলার প্রতিটি ইউনিয়নে ইউরিয়া সার বিক্রি করবেন। অন্যদিকে বিএডিসির ২১১ জন ডিলার শুধু নন-ইউরিয়া সার (টিএসপি, ডিএপি, এমওপি) বিক্রি করবেন। কৃষি বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী সারের সরবরাহ নিশ্চিত করবে বাফা ও বিএডিসি। তবে বিএডিসির ২১১ জন ডিলারের মধ্যেই বাফার ৬৩ জন ডিলার অন্তর্ভুক্ত। তারাই সব প্রকার সারের বরাদ্দ পান। বাকিরা শুধু নন-ইউরিয়া সারের বরাদ্দ পান।
জানা গেছে, সরকারিভাবে এক বস্তা (৫০ কেজি) ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ডিলার পর্যায়ে সার ১ হাজার এবং চাষি পর্যায়ে ১ হাজার ১০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হলেও চাষিদের কাছে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। একইভাবে ডিএপি সার ডিলার পর্যায়ে ৭০০ টাকা আর চাষি পর্যায়ে ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৮২০-৮৫০ টাকা। এছাড়া ইউরিয়া ডিলার পর্যায়ে ৭০০ টাকা আর চাষি পর্যায়ে ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাষিদের কাছে বিক্রি হচ্ছে ৮৩০-৮৬০ টাকা। একইভাবে মিউরেট অব পটাশও (এমওপি) বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে চাষিদের কাছে। বিএডিসির একাধিক ডিলার বলেন, বিএডিসির সাধারণ ডিলাররা প্রতি মাসে নন-ইউরিয়া সারের বরাদ্দ পান দুই থেকে তিন টন আর বাফারসহ বিএডিসির ডিলাররা মাসে বরাদ্দ পান ৪০-৬০ টন। তাই সারের বাজার তাদের হাতে।
সদর উপজেলার রহিমানপুর এলাকার চাষি মিজানুর বলেন, শিবগঞ্জ ও পল্লী বিদ্যুৎ, ভাউলারহাট, রোড বাজারে বিএডিসির ডিলার, বাফারসহ কয়েকটি দোকানে সার কিনতে গিয়েছিলাম। তারা বস্তায় সরকারের দামের চেয়ে ৩০০-৪০০ টাকা বেশি দাম নিলেও ক্যাশ মেমো দিচ্ছে না।
সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, সার নিয়ে কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে তদারকি নেই। ডিলাররা নিজেদের সুবিধার্থে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
বিএডিসি ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম ভাসানী বলেন, সার ডিলারদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। তবে সমিতি আছে। নিয়মানুযায়ী ডিলাররা সার উত্তোলন করে সরকারি দরেই বিক্রি করছেন। তবে চাহিদার চেয়ে টিএসপি ও এমওপি সারের সরবরাহ কম।
ঠাকুরগাঁও বাফারের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান খান বলেন, জুলাই মাসে ৬৩ জন ডিলার বরাদ্দের চার হাজার ৫০০ টন সার উত্তোলন করছেন। সারের কোনো কমতি নেই।
ঠাকুরগাঁও বিএডিসির (সার) সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ২১১ জন ডিলারের অনুকূলে জুলাই মাসে টিএসপি সারের বরাদ্দ ১ হাজার ৯৬, এমওপি ১ হাজার ৮৬ টন, ডিএপি ১ হাজার ৬১৯ টন। পর্যাপ্ত সার রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ডিলার সার না পেয়ে ফেরত যাননি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের তদারকি জোরদার করা হয়েছে। কোনো ডিলারের বিরুদ্ধে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়