১৩ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্কুলছাত্র আব্দুর রহিমের

আগের সংবাদ

প্রত্যাবাসনে বাধা চীন-রাশিয়া! বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক মহলও নিষ্ক্রিয়

পরের সংবাদ

সরকার গঠনে বিলম্ব যে কারণে : আফগানিস্তান

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : এক সপ্তাহ পার হলো আফগানিস্তানে গদিনশিন সরকার হটিয়ে দেশ দখল করেছে তালেবানরা। বিশ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘোষণা করেছে তালেবানরা। কিন্তু এখনো দেশে নতুন সরকার গঠন করতে পারেনি তারা। ফলে সরকারবিহীন অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক আর বিপর্যয়ের মধ্যে দিন পার করছেন দেশটির ৪ কোটি নাগরিক। চাকরি-বাকরি নেই। কাজ নেই। ব্যাংক বন্ধ, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে হু হু করে। জাতিসংঘ বলেছে, মানবিক বিপর্যয়ের দোরগোড়ায় রয়েছে আফগানিস্তান।
অন্যদিকে গণমাধ্যম ও সূত্রগুলো বলছে, সব ধরনের রাজনৈতিক প্রতিনিধি নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের চিন্তা করছে তালেবানরা। সে লক্ষ্যে প্রতিদিন প্রভাবশালী বিভিন্ন আফগান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলছে তাদের। তবে সামন্ত ধারণার অনুসারী বিবিধ গোত্র আর উপগোত্রে বিভক্ত এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে ভালোই বেগ পোহাতে হচ্ছে তালেবানদের।
ইতোমধ্যে স্থবির হয়ে পড়া অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে হাজি মোহাম্মদ ইদ্রিস নামে এক ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে তালেবান কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দিনকয়েক আগে স্থগিত রাখা জ¦ালানি সরবরাহ কার্যক্রম তালেবানের অনুরোধে পুনরায় চালু করেছে ইরান। এদিকে তালেবান মুখপাত্র সুহায়েল শাহিন ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম স্কাই নিউজকে গতকাল বলেন, নির্ধারিত ৩১ আগস্টের মধ্যেই বিদেশি সেনা

আফগান ভূখণ্ড ছাড়ার যে সময়সীমা রয়েছে, কোনো অজুহাতেই তা নতুন করে বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, দেশত্যাগী আফগানের ভিড়ে কাবুল বিমানবন্দরে গত এক সপ্তাহে অন্তত ২০টি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
দেশটিতে নতুন সরকার বিষয়ে তালেবানবিরোধী নেতা আহমদ মাসুদ হুমকি দিয়ে বলেছেন, ক্ষমতার ভাগাভাগি ঠিকমতো না হলে ফের গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। তবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, তারা সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চান। কাবুলে ফিরে কঠিন এ কাজটি ইতোমধ্যে শুরুও করেছেন তালেবানপ্রধান আবদুল গনি বরদার। গত শনিবার তার নেতৃত্বে তালেবান নেতারা সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও জাতীয় পুনর্গঠন কমিশন প্রধান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। জাবিউল্লাহ বলেন, শিগগিরই সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী।
আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে জানান, সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠনের বিষয়েই কথা বলেছি আমরা। তবে এর সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নাহজাত-ই-হামবাস্তাগি আফগানিস্তান পার্টির নেতা সৈয়দ ইশহাক গিলানি বলেন, আমি খেলাটা পছন্দ করছি না। এটা মনে হচ্ছে, একজনের খেলা। বলখ প্রদেশের সাবেক গভর্নর আতা মোহাম্মদ নূর হুমকি দিয়ে বলেছেন, সবাইকে নিয়ে সরকার না হলে সেটা মেনে নেয়া হবে না। যুদ্ধ শেষ হয়নি, এখনও বহু দূর যেতে হবে। আমরা তালেবানদের পরীক্ষা নিচ্ছি, আমরা আবার জেগে উঠতে পারি।
পানশিরে প্রথম প্রতিরোধ : গোটা দেশটাই দখল করলেও পানশির উপত্যকা এখনও তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়ে গেছে। অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছেন মুজাহিদিন নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ। এ ব্যাপারে তালেবান টুইটে বলা হয়, পানশির দখল করতে ইসলামিক আমিরাতের শয়ে শয়ে তালেবান যোদ্ধা অভিযান শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, আফগানবাহিনীকে প্রদত্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সমরাস্ত্র এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। পানশির অভিযানে সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে আহমদ মাসুদ বলেছেন, এভাবে চললে তালেবান টিকবে না। আমরা সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে লড়েছি। তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সক্ষমতাও আমাদের আছে। মাসুদের মতো তালেবানবিরোধী আরো দলও রয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বাগলানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জেলার নিয়ন্ত্রণও তালেবান হারিয়েছে বলে দিনকয়েক আগে খবর পাওয়া যায়। যদিও পরে সেগুলো ফের দখল করা হয়েছে বলে জানান তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়