কাগজ প্রতিবেদক : এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে যাওয়ার মিশনে আজ মাঠে নামছে বসুন্ধরা কিংস। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ ভারতের মোহনবাগান। গ্রুপ ‘ডি’তে বসুন্ধরা কিংস মালদ্বীপের মার্জিয়া এফসি ও ভারতের ব্যাঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে খেলেছে। মার্জিয়াকে হারানোর পর তারা ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ড্র করে। আজ বসুন্ধরা খেলতে নামবে ভারতেরই আরেক ক্লাব মোহনবাগানের বিপক্ষে। মোহনবাগানের বিপক্ষে আজ জয় পেলেই ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে কিংস। যদি তারা মোহনবাগানের বিপক্ষে ড্র করে বা হেরে যায় তাহলে সেমিতে পৌঁছে যাবে ভারতের ক্লাবটি। ফলে মোহনবাগারের বিপক্ষে আজ জয় ছাড়া কোনো উপায় নেই বসুন্ধরার।
বসুন্ধরা যদি জয় তুলে নিতে পারে তাহলে বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে ইন্টার জোনাল সেমিতে খেলতে পারবে। এর আগে ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো সেমিতে খেলেছিল ঢাকা আবাহনী।
বসুন্ধরাসহ ‘ডি’ গ্রুপে থাকা প্রত্যেক দলই দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। আর দুই ম্যাচ পরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে মার্জিয়া ও ব্যাঙ্গালুরুর।
গ্রুপ পর্বে মোহনবাগান তাদের প্রথম দুটি ম্যাচে যথাক্রমে এফসি ব্যাঙ্গালুরু ও মার্জিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে নেয়। ফলে তাদের পয়েন্ট হলো ছয়।
অন্যদিকে বসুন্ধরা কিংস প্রথম ম্যাচে মার্জিয়াকে হারায়। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ড্র করে। দুই ম্যাচ শেষে বসুন্ধরার পয়েন্ট চার। এখন যে দল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকবে সে দলই পরবর্তী রাউন্ডে যাবে। বসুন্ধরা মোহনবাগানের বিপক্ষে জয় তুলে নিলে তাদের পয়েন্ট হবে সাত। ড্র করলে হবে পাঁচ। মানে বসুন্ধরার ইতিহাস গড়তে হলে জয় পেতেই হবে।
মোহনবাগান তাদের প্রথম ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় তুলে নেয়। ভারতের জাতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রিকে নিয়ে এএফসি মিশনে আসা ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে মার্জিয়াকে ৩-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারের স্বাদ দেয়। অন্যদিকে বসুন্ধরা প্রথম ম্যাচে মার্জিয়ার জালে দুইবার বল জড়াতে সমর্থ হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে। এতে করেই এগিয়ে গেছে মোহনবাগান।
বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আধিপত্য দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ফলে ভারতের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগানের বিপক্ষে বসুন্ধরা কিংস ভালো কিছু করবে এমন প্রত্যাশাই সবার।
মোহনবাগান ভারতের শক্তিশালী দলগুলোর মধ্যে একটি। তারা গত বছর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অংশ নেয়। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হলো ভারতের সর্বোচ্চ ফুটবল প্রতিযোগিতা। ফলে মোহনবাগানের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন উপায় নেই। আবার মোহনবাগানের চেয়ে বসুন্ধরা খুব বেশি পিছিয়ে আছে এটিও বলা যাবে না।
বসুন্ধরা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয় করেছে অপ্রতিরোধ্যভাবে। দেশের অন্য কোনো ক্লাব তাদের বিপক্ষে টেক্কা দিতে পারেনি।
যে ক্লাবই বসুন্ধরার বিপক্ষে খেলতে নেমেছে তারা সবাই নাকানি চুবানি খেয়েছে। বসুন্ধরায় রয়েছে বিশ্বের সেরা কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড়। ফলে আজ বসুন্ধরা মোহনবাগানের বিপক্ষে ভালো কিছু করলেও অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবে না।
এদিকে মোহনবাগানের বিপক্ষে নামার আগে গতকাল দলগত অনুশীলনে নামে বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়রা। অনুশীলনে সবাইকে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দেখা যায়।
এমন বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামার আগে নিজেদের স্বাভাবিক রাখার চেষ্টাটাই বেশি করে যাচ্ছেন বসুন্ধরার কোচিং স্টাফের সদস্যরা। খেলোয়াড়রা যেন ফুরফুরে মেজাজে থেকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে পারে এদিকটাতেই নজর দিচ্ছেন তারা।
যদি পরিকল্পনা অনুুযায়ী নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা বসুন্ধরা খেলতে পারে তাহলে ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে যাওয়াটা বসুন্ধরার জন্য খুব কঠিন হবে না।