মানুষের কল্যাণ করার জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন : সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা

আগের সংবাদ

প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বিভাজন! মাঠ প্রশাসনকে কেন্দ্রের বিশেষ নির্দেশনা : জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

পরের সংবাদ

বরিশালে ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন : পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম. কে. রানা, বরিশাল : বরিশাল সদর উপজেলা চত্বরে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলামসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলার আবেদন দায়ের করা হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিসিসির প্যানেল মেয়র এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন এবং সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার বাদী হয়ে গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলার আবেদন করেন। আবেদন দুটি আমলে নিয়ে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য পিবিআইয়ের বরিশালের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল হাসান জানান, তদন্ত প্রতিবেদন এলে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন আদালত।
এদিকে ইউএনও মুনিবুর রহমান ও পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় আটককৃত ১৮ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও বলা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও পুলিশি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে তা গ্রহণ করেনি পুলিশ। পরে বিজ্ঞ আদালত মামলা দুটি নালিশি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মামলায় বরিশাল সিটি

করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইউএনও মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলামসহ তাদের সহযোগীরা হত্যার উদ্দেশে গুলিবর্ষণ, মারধর, ভাঙচুর এবং ১০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনের দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম, এসআই শাহজালাল মল্লিকসহ চারজন নামধারী ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদারের দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ও তার ৫ দেহরক্ষীসহ অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উভয় অভিযোগেই আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির সুবাদে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনগণের জান-মালের ক্ষতিসাধন করা এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করার অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি আসামিদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মানসম্মান ক্ষুণ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণ করাকে কেন্দ্র করে নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার অভিযোগ এনে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছোড়ে আনসার সদস্যরা। এতে সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ ৩০ জন আহত হন। পরে সিটি করপোরেশনের কর্মী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও ইউএনও মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়। মোট আসামি করা হয় ৬০২ জনকে। এছাড়া মামলায় এখন পর্যন্ত কাউন্সিলর ও আ.লীগের ২১ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে কাউন্সিলর শেখ সাঈদ আহম্মেদ মান্নাকে গত শুক্রবার রাতে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। শনিবার মোহাম্মদপুর থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়