অভিনন্দন জানাল প্রজ্ঞা : রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের অযোগ্য তামাক কোম্পানি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি গায়েব, তদারকি নেই : গণপরিবহন, দোকান, কাঁচাবাজার, বিনোদন কেন্দ্রে চলাচল স্বাভাবিক

পরের সংবাদ

আইনজীবীদের প্রতি পরীমনির ক্ষোভ : ‘জামিন চান, আমি তো পাগল হয়ে যাব’

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার তৃতীয় দফায় একদিনের রিমান্ড শেষে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ফের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল বেলা ১১টা ৫১ মিনিটে রিমান্ড শেষে আসামি পরীমনিকে আদালতে হাজির করে মামলাটির তদন্ত সংস্থা পুলিশের সিআইডি। হাজির করার পর তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর আসামির উপস্থিতিতে শুনানি করার জন্য আদালতে একটি আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবীরা। আদালত সেটি মঞ্জুর করেন। পরে পরীমনির উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হলে তার বিরুদ্ধে মাদক মামলার সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা।
আবেদনে তিনি বলেন, আসামি পরীমনি মামলার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তার দেয়া তথ্য-উপাত্ত তদন্তের স্বার্থে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার

বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক

রাখা একান্ত প্রয়োজন। তাকে জামিন দিলে কিংবা মুক্তি পেলে তিনি বিঘœ সৃষ্টি করতে পারেন এবং পালাতে পারেন।
তবে এ আবেদনে জামিন চেয়ে বিরোধিতা না করে কোর্টে পরীমনির সঙ্গে আইনি বিষয়ে কথা বলার জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবী কামরুজ্জামান চৌধুরী ও নিলাঞ্জনা রিফাত। তারা এজলাসে বলেন, স্যার, একজন নাগরিক হিসেবে আসামির আইনি পরামর্শ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। মামলাটি দিন দিন সারাদেশের মানুষের কাছে আলোচিত হচ্ছে। কোনো আইনজীবী তার সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারছেন না। অন্য মামলায় আমরা আসামিদের সঙ্গে কথা বলতে পারি। কিন্তু এ আসামির মামলায় এটা কেন নয়? মামলার বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানতে তার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিন।
অন্যদিকে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, যেহেতু মামলা তদন্ত পর্যায়ে, এখন আদালতে সাক্ষাতের কোনো সুযোগ নেই। মামলাটি ট্রায়ালে গেলে তখন কথা বলতে পারবে। এমনকি রিমান্ড আবেদন না থাকলে আসামিকে আদালতে আনারও প্রয়োজন থাকে না। তবুও তাদের আবেদনে আনা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এমন দাবি করতে পারেন না।
শুনানি শেষে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে এজলাস ত্যাগ করেন। প্রায় ৫ মিনিট পরে আদালত আইনজীবীদের কথা বলার বিষয়টি নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শুনানি শেষে বিচারক চলে গেলে পরীমনি এজলাসে দাঁড়িয়ে তার আইনজীবীদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপনারা আমার জামিন চাচ্ছেন না কেন? বুঝতে পারছেন না, আমার কী কষ্ট হচ্ছে। আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? আপনারা জামিন নিতে পারছেন না। প্রধান আইনজীবী কোথায়। আমি তো পাগল হয়ে যাব। ভরা মজলিসে প্রায় এক মিনিট তিনি এসব কথা বলেন। এরপর তাকে প্রথমে আদালতের হাজতখানায় এবং পরে একটি প্রিজন ভ্যানে এককভাবে তাকে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
শুনানি শেষে পরীমনির ক্ষোভ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে তার আইনজীবী নিলাঞ্জনা রিফাত গণমাধ্যমকে বলেন, পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। তিনি খুবই অসুস্থ। জামিন হচ্ছে না বলে তিনি মানসিকভাবে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই এসব কথা বলেছেন। জামিন আবেদন না করার বিষয়ে আইনজীবী আরো বলেন, আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। কথা বলতে পারলে আইনি দিক বিবেচনা করে আগামীতে আবেদন করব। সে সুযোগ আছে। জামিন না চাওয়াটা আইনগত বিষয়।
এর আগে গত ৪ আগস্ট বিকালে বনানীর বাসায় প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান শেষে পরীমনিসহ তিনজনকে দেশি-বিদেশি মদের বোতল ও এলএসডি মাদকসহ আটক করা হয়। পরে বনানী থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে পরীমনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় প্রথম দফায় ৫ আগস্ট ৪ দিন এবং ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ১৩ আগস্ট পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৬ আগস্ট তাকে তৃতীয় দফায় ফের ৫ দিনের রিমান্ড চান সিআইডি। একই দিনে জামিন আবেদন করা হলেও রিমান্ড আবেদনের জন্য সেটি আইনগতভাবে বাতিল হয়ে যায়। পরে এ রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেদিন পরীমনি আইনজীবীদের বলেন, আমি এখানে থাকতে পারছি না। আমি খুবই অসুস্থ। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। জেলে থাকলে আমার অবস্থা আরো সংকটাপূর্ণ হতে পারে। দয়া করে আমার জন্য কিছু করুন। পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান এ কথা জানিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়