মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

সড়কে সব গণপরিবহন : যানজটে ভোগান্তি, স্বাস্থ্যবিধিও উধাও

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে রাজধানীসহ সারাদেশের সব সড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে কোথাও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না। এ নিয়ে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে কোনো ধরনের সচেতনতা চোখে পড়েনি। সরকারের পক্ষ থেকেও তদারকি দেখা যায়নি। অন্যদিকে যানবাহনের চাপে রাজধানীর বেশির ভাগ সড়কেই সৃষ্টি হয় যানজট। মহাসড়ক ও ফেরিতে ছিল যানবাহনের চাপ। এ কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়ক আইন অনুযায়ী শৃঙ্খলার সঙ্গে গণপরিবহন চালানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও সড়ক থেকে শৃঙ্খলা উঠে গেছে বললেই চলে।
কঠোর বিধিনিষেধ শেষে গত ১১ আগস্ট থেকে সরকার অর্ধেক গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়। এরপর ১৯ আগস্ট থেকে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরুর বিষয়টিও জানিয়ে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল থেকে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। এতে গতকাল রাজধানীর সব সড়কেই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফেন্ট রোড, ফার্মগেট, বিজয় সরণি মোড়, জাহাঙ্গীর গেট, নীলক্ষেত, টঙ্গি ডাইভারশন রোড, বনানী, কাকলী, মহাখালী, পল্টন, প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, যাত্রাবাড়ীসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বিজয় সরণি থেকে মহাখালী পর্যন্ত যেতে পৌনে ১ ঘণ্টা সময় লেগেছে বলে জানান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শফিকুল ইসলাম।
সড়ক আইন অনুযায়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার পর সব গণপরিবহনের গেট বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু কোনো গণপরিবহনের গেট বন্ধ রাখতে দেখা যায়নি। পুলিশের সামনেই চালকরা তাদের ইচ্ছেমতো বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই দেখা যায়নি কোনো গণপরিবহনেই। প্রতিটি গণপরিবহনে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী ওঠানোর নিয়ম বেঁধে দেয়া হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। চালকরাও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বাস চালান। এসব বিষয় তদারকির জন্য রাস্তায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের তদারকি ছিল না।
বেলা ১১টার দিকে বিজয় সরণি মোড়ে সব রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট সামাল দিতে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা যায়। ট্রাফিক সার্জেন্ট আমান জানান, সব রুটেই সব গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তাছাড়া বিনোদন কেন্দ্রসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান শতভাগ খুলেছে। এ কারণে রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করতে গেলে যানজট পরিস্থিতি সামাল দেয়া মুশকিল হবে। তাই সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি না। আমরা শুধু যানজট নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত রয়েছি।
শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও রাজধানীর কোনো কোনো সড়কে গণপরিবহনের কিছুটা সংকটও দেখা গেছে। একদিকে যানজট এবং অন্যদিকে পরিবহন সংকটের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এদিকে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় মহাসড়কেও গণপরিবহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব মহাসড়কেই গতকাল সকাল থেকে গণপরিবহনের সংখ্যা বেড়েছে। ব্যস্ততম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সকাল থেকেই এই ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পণ্যবাহী ও গণপরিবহনসহ শত শত গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় থাকে। গতকাল দুপুর ৩টার দিকেও এই ঘাটে যানবাহনের চাপ কমেনি। পর্যটন কেন্দ্রগুলো গতকাল থেকে খুলে যাওয়ায় দীর্ঘদিন করোনার বিধিনিষেধে আটকা পড়া লোকজন ঢাকার বাইরে ছুটেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েউল্লাহ বলেন, শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরুর অনুমতি দেয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। করোনার কারণে পরিবহন খাতই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বাস চালানোর জন্য আমরা চালকদের নির্দেশ দিয়েছি। দূরপাল্লার বাসগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী বহন করছে। তবে সিটিবাসে যাত্রী চলাচলের কিছুটা অনিয়ম যে হচ্ছে না, তা আমরা বলব না। বিশেষ করে অফিসে যাওয়া-আসার পথে যাত্রীর চাপ থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানায় সমস্যা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ রোধে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। তখন ২৩টি শর্ত দেয়া হয়। এরপর ৫ আগস্ট বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করে গণপরিবহন অর্ধেক চলাচলের সুযোগ দিয়ে গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়