সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মানববন্ধন

আগের সংবাদ

ঝুঁকিতে উদারপন্থি ও নারীরা : শরিয়া আইনে দেশ চালানোর ঘোষণা তালেবান প্রশাসনের, তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ বিভিন্ন শহরে

পরের সংবাদ

কেন্দ্রের দরজা-জানালা ভাঙচুর : টিকা না পেয়ে ফিরে গেলেন পাঁচ শতাধিক লোক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. কামাল হোসেন, হোমনা (কুমিল্লা) থেকে : উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা নিতে আসা অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক গতকাল বুধবার টিকা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভিযোগ, কে আগে টিকা নেবেন এমন অবস্থায় হুড়োহুড়ি করে টিকাকেন্দ্রের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেছেন টিকা নিতে আসা লোকজন। পরে থানা থেকে পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে।
টিকা না পেয়ে ফিরে যাওয়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম ও আল্ফত বেগম বলেন, টিকা নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে সকাল সকাল রওনা হয়ে হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে এসে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর সাড়ে ১১টার দিকে টিকাকেন্দ্রের এক লোক হ্যান্ড মাইকে মাইকিং করে বলছেন, আজ আর প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হবে না। যারা প্রথম ডোজের টিকা নিতে এসেছেন তারা বাড়ি চলে যান। আপনাদের মোবাইলে মেসেজ যাবে, কার কোন দিন টিকা দেয়া হবে। মেসেজ অনুযায়ী আবার টিকা নিতে আসবেন। তাদের মতো শত শত লোক টিকা না পেয়ে ক্ষোভে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান তারা।
টিকাদানকারী স্বাস্থ্য সহকারী সেলিনা আক্তার জানান, প্রথম ডোজের যে টিকা ছিল সেগুলো সকাল সকালই শেষ হয়ে যায়। এখন শুধু দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. শেখ ফরিদ জানান, বুধবার সকাল থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে লোকজন টিকাকেন্দ্রের সামনে এসে ভিড় করতে থাকেন। পরে তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে টিকা নেয়ার আহ্বান জানালে তারা লাইন ধরেন। এভাবে লাইনে দাঁড় করে টিকা দেয়ার কার্যক্রম চলছিল। একপর্যায়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়ে যায়। তখন কোনোভাবেই তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরকিল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালামকে ফোন করলে তিনি এসেও লোকজনকে সামাল দিতে পারছিলেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার জানান, বুধবার টিকা নিতে টিকাকেন্দ্রে অনেক লোক সমাগম হয়। লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য কর্মীকে এনেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। কার আগে কে টিকা নেবেন এমন করতে করতে একপর্যায়ে হুড়োহুড়ি করে টিকাকেন্দ্রের দরজা ও জানালা ভেঙে

ফেলেন টিকা নিতে আসা লোকজন। পরে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমারা যে দিন টিকা পাব, সে দিন থেকেই আবার টিকার প্রথম ডোজ দেয়া শুরু করব। হাসপাতালে টিকা আসা মাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেসবুক আইডিসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে লোকজনকে জানিয়ে দেয়া হবে কখন থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। যারা টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কেউ বাদ যাবেন না। সবাই টিকা নিতে পারবেন। ভয়ের কোনো কারণ নেই। সবাইকে টিকা দেয়া হবে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, যেখানে আগে করোনা ভাইরাসের টিকা নেয়ার জন্য এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হয়েছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে অনেক বুঝানো হয়েছে টিকা নেয়ার জন্য, লোকজনকে বাপ পর্যন্ত ডাকা হয়েছে। তারপরও মানুষের টিকা নিতে অনীহা ছিল। এখন মাইকিং ছাড়াই মানুষকে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। টিকা নেয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ হয়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়