অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে রওশন এরশাদ আইসিইউতে

আগের সংবাদ

এবার লক্ষ্য কূটনৈতিক জয় : তালেবানের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ >> চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত

পরের সংবাদ

ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে : ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড রোগী শনাক্ত >> ২৬ জনের মৃত্যু >> সিলেটে রোগী শনাক্ত হয়নি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সারাদেশে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে এলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার রেকর্ডসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে বাড়ছে মোট রোগীর সংখ্যা। চলতি বছর মোট আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর ৯২ শতাংশই ঢাকার। তবে ধীরে হলেও ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। বিভাগ অনুযায়ী তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে রোগী ও মৃত্যু বেশি। আর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়নি সিলেট বিভাগে।
স্বাস্থ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৬ হাজার ২৯৭ জন রোগী শনাক্ত হয়, আর মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। ঢাকা বিভাগে (ঢাকা শহর ছাড়া) ১৮২ জন, ময়মনসিংহে ২৮ জন, চট্টগ্রামে ৫০ জন রোগী শনাক্ত ও ২ জনের মৃত্যু হয়। খুলনায় ৬০ জন রোগী শনাক্ত ও ১ জনের মৃত্যু, রাজশাহীতে ১২ জন শনাক্ত ও ১ জনের মৃত্যু, রংপুরে ৩ জন রোগী শনাক্ত, বরিশালে ১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে ৩০৬ জন ঢাকার এবং ২৩ জন ঢাকার বাইরের।
প্রসঙ্গত, সোমবার ২২১ জন, রবিবার ১৯৮ জন, শনিবার ২৫৭ জন, শুক্রবার ২১১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশকনিধন কর্মসূচিসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। যেসব ভবনে এডিস মশার লার্ভা ও মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে, সেসব ভবন মালিককে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র দাবি করছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিরুনি অভিযানের ফলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে ১ হাজার ১১৪ জন। এর মাঝে ঢাকায়

১ হাজার ৪৮ জন ও ঢাকার বাইরে ৬৬ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ জন। আর চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৫১০ জন। আর মাসভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন। জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতলে ভর্তি হন আর মারা যান ১২ জন। চলতি আগস্ট মাসের ১৬ দিনে ৩ হাজার ৯৯২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন আর মারা গেছেন ১৩ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর- এই চার মাস মূল মৌসুম। কয়েক দিনের থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি এডিস মশার বংশবিস্তারে প্রভাব ফেলছে। এডিস মশার ডিম বৃষ্টির পরপরই ফুটে লার্ভা বের হয়। লার্ভা ১০ দিনের জীবনচক্র শেষ করবে। এক্ষেত্রে বৃষ্টির পর একই জায়গায় ১০ দিন পানি জমাট থাকলে সেখান থেকে এডিস মশার জন্ম হবে, যদি সেখানে আগে থেকে এডিস মশার ডিম থাকে। একটি স্ত্রী মশা কমপক্ষে একশটি ডিম দিতে পারে। ডিমগুলো যে কোনো পরিবেশে বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে এবং আট মাসের বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে; এমনকি কঠিন শীতের মধ্যেও। তাই বিশেষজ্ঞরা সারা বছর ধরেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জোর কার্যক্রম চলমান রাখার সুপারিশ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়