বিজিএমইএ : সব স্থলবন্দর দিয়ে ইয়ার্ন আমদানির সুযোগ দাবি

আগের সংবাদ

করের আওতায় আসছেন ব্যাংকের কার্ডধারীরা!

পরের সংবাদ

বেশির ভাগ রোগী শনাক্ত ১৬ দিনে > ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছে : দাবি ঢাকার দুই মেয়রের

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চলতি বছর দেশে মোট ডেঙ্গু রোগীর অর্ধেকের বেশি শনাক্ত হয়েছে আগস্ট মাসের ১৬ দিনেই। অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে আগস্ট মাসের ১৬ দিনেই ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৩ জন রোগী। এছাড়া মোট রোগীর প্রায় ৯২ ভাগই রাজধানী ঢাকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির মধ্যে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগে থেকে সতর্ক করা হলেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, দুই সিটি করপোরেশনকে আগে থেকেই ডেঙ্গু রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা আমলে নেননি।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা ওঠানামার মধ্য দিয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও ভিন্ন কথা বলছেন দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র। তারা দাবি করছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিরুনি অভিযানের ফলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক-দুই দিনের পরিসংখ্যান দিয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিম্নমুখী বলা যাবে না। বর্তমান পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও

যে হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে তাতে তৃপ্ত থাকার ?সুযোগ নেই। আবার ধীরে ধীরে বৃষ্টি কমে এলে ডেঙ্গু এমনিতেই কমে আসে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার মনে করেন, পরিস্থিতি নি¤œমুখী তা বলা যাবে না। এটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই গড়ে প্রতিদিন ২২০ জনের মতো রোগী পাচ্ছি। এটাকে এখন যদি খুব বড় অর্জন ভেবে বসে থাকি, তবে আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়বে।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত রবিবার ১৯৮ জন, শনিবার ২৫৭ জন, শুক্রবার ২১১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ১৯৯ জন ঢাকার এবং ২২ ঢাকার বাইরে। বর্তমানে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে ১ হাজার ৩২ জন। এরমাঝে ঢাকায় ৯৬২ জন ও ঢাকার বাইরে ৭০ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬ হাজার ৩২১ জন। আর চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ২৬৪ জন। আর মাসভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন এবং জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬ জন এবং চলতি আগস্ট মাসের ১৬ দিনে ৩ হাজার ৬৬৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২৫টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। তবে আইইডিসিআর এখনো কোনো মৃত্যুর পর্যালোচনা সমাপ্ত করেনি এবং কোনো মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪টি ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬টি ওয়ার্ডে এডিস মশার ঘনত্ব বেশি মাত্রায় পাওয়া গেছে। ডিএনসিসির হটস্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মনিপুর, পীরেরবাগ, শেওড়াপাড়া, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নূরজাহান রোড, আসাদ অ্যাভিনিউ, শাহজাহান রোড; ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মগবাজার ও নিউ ইস্কাটন এলাকা। ডিএসসিসি এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মালিবাগ, গুলবাগ, শান্তিবাগ; ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিন্টো রোড, বেইলি রোড, কাকরাইল; ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্দিকবাজার, ওসমান গনি রোড; ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাটারিবাজার, গোপীবাগ, মদনমোহন বসাক লেন; ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আর কে মিশন রোড, অভয় দাস লেন; ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের মিল ব্যারাক, আলমগঞ্জ রোড ও অক্ষয় দাস লেন। মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় লালমাটিয়া, ইকবাল রোড, সায়েদাবাদ ও উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়