অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে রওশন এরশাদ আইসিইউতে

আগের সংবাদ

এবার লক্ষ্য কূটনৈতিক জয় : তালেবানের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ >> চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত

পরের সংবাদ

করের আওতায় আসছেন ব্যাংকের কার্ডধারীরা!

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড যারা ব্যবহার করেন, তাদের সবাইকে করের আওতায় আনতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য গ্রাহকদের কার্ডের লেনদেনের তথ্য তলব করা হয়েছে। এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সমাধানে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি বৈঠক হবে। এনবিআর, ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ওই বৈঠকে অংশ নেবেন। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ডেবিট-ক্রেডিট মিলে মোট ইস্যু করা কার্ডের সংখ্যা ২ কোটি ৫৭ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় কার্ড ২ কোটি ৩০ লাখের মতো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনবিআরের চিঠিতে নির্দিষ্ট ছকে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের ই-টিআইএন, এনআইডি নম্বরসহ বছরভিত্তিক লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। তবে এসব তথ্য সরবরাহের বিষয়ে আপত্তি তুলেছে ব্যাংকগুলো। তারা বলেছে, ঢালাওভাবে সবার তথ্য দিলে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হতে পারে। এতে লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব তথ্য নিয়ে আয়কর রিটার্নের সঙ্গে অসংগতি আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে। এতে উদ্বেগ কিংবা আতঙ্কের কিছু নেই। বিশালসংখ্যক কার্ডধারীর উল্লেখযোগ্য অংশের টিআইএন নেই। ব্যাংকগুলো থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এদের নামে টিআইএন ইস্যু করে করের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এনবিআরের হিসেব মতে, বর্তমানে টিআইএন-ধারীর সংখ্যা ৬০ লাখের বেশি। বার্ষিক রিটার্ন জমা দেন মাত্র ২৫ লাখ। তবে চলতি বছরের মধ্যে টিআইএনধারীর সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত করতে চায় এনবিআর। এ জন্য করের নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে গ্রাহকদের কার্ডের লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে বলেও জানান এনবিআর কর্মকর্তারা।
তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকের অনেক গ্রাহক আছেন, যারা কার্ড ব্যবহার করলেও করের আওতার বাইরে এখনো। অথচ এদের অনেকেই কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে। লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। যাদের করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন নেই, তাদের চিহ্নিত করা হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ডেবিট-ক্রেডিট মিলে মোট ইস্যু করা কার্ডের সংখ্যা ২ কোটি ৫৭ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় কার্ডের সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখের মতো।
ব্যাংকাররা মনে করেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের আওতায় ব্যাংকগুলো পরিচালিত হয়। এ আইনে বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো তথ্য চাইতে পারে। সেখানে অন্য সংস্থার তথ্য দেয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
তবে অনেক দিনের পুরনো ‘দ্য ব্যাংকারস বুক এভিডেন্স অ্যাক্ট-১৮৯১’ অনুযায়ী ব্যাংকগুলো গ্রাহকের কোনো ধরনের তথ্য অন্য সংস্থাকে দিতে পারবে, তা উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিদ্যমান আইনটি বেশ পুরনো। এর পরে পাস হওয়া অনেক আইনে কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকের তথ্য চাওয়ার ক্ষমতা অন্য সংস্থাকেও দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন, আয়কর আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনসহ কিছু আইনে গ্রাহকের তথ্য চাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আয়কর আইনের আওতায় যে কোনো তথ্য আমরা চাইতে পারি। এনবিআরের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে নানা তথ্য চাওয়া হয়ে থাকে। গ্রাহকের কার্ডের লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে তার অংশ হিসেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়