বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স

আগের সংবাদ

তালেবান আতঙ্কে বিশৃঙ্খলা > আফগানদের দেশ ছাড়ার হিড়িক : উড়ন্ত বিমান থেকে খসে পড়ল তিনজন

পরের সংবাদ

সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোক দিবস পালন : কথা কবিতা গানে বঙ্গবন্ধু স্মরণ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একাত্তরের স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র তিন বছরের মাথায় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। যা বাংলাদেশ তথা বিশ্ব ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। গতকাল ১৫ আগস্ট জাতির পিতার ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। কথা, কবিতা আর গানের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয়েছে জাতির পিতাকে। তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা, দোয়া মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন-প্রতিষ্ঠান।
শিল্পকলা একাডেমি : আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনলাইনে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী পালন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একাডেমির ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এই অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব মো. আছাদুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক ডা. নুজহাত চৌধুরী। মুখ্য আলোচক ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
আরো বক্তব্য দেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। আলোচনার পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাঁশিতে করুণ সুর তুলে শোকের আবহ ফুটিয়ে তোলেন মো. মনিরুজ্জামান। একক সংগীত পরিবেশন করেন আবু বকর সিদ্দিক, অনুপমা মুক্তি, মিতালি মুখার্জি, ইয়াসমীন আলী, নকীব খান, তিমির নন্দী, সাজেদ আকবর, হৈমন্তী রক্ষিত ও শিশুশিল্পী সাবরীনা জাহান সেজুতী। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ঢাকা সাংস্কৃতিক দল।
পাষাণ খুনিরে, কেউ পারেনি সারা বাংলা এক মিছিলে, আমি ধন্য হয়েছি আমি পূর্ণ হয়েছি, তুমি বিনে রে মুজিব, তুমি বাংলার ধ্রæবতারা, শোনো একটি মুজিবরের থেকে, যদি রাত পোহালে শোনা যেত, যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান ইত্যাদি গানে গানে অনলাইনের এ শোকের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে মূর্ত করে তোলেন শিল্পীরা। আসরে কবিতা থেকে পাঠ করেন নির্মলেন্দু গুণ, জাফর ওয়াজেদ, ড. মুহম্মদ সামাদ, মুহাম্মদ নুরুল হুদা, তারিক সুজাত, রুবী রহমান, অসীম সাহা। এর আগে বেলা ১১টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বাংলা একাডেমি : অনলাইন আলোচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী পালন করেছে বাংলা একাডেমি। মাসব্যাপী চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ‘শোক ও শক্তির মাস আগস্ট ২০২১’ শিরোনামের এ আয়োজন। এদিন ছিল অনলাইন এই আসরের ১৫তম দিন। বরাবরের মতো শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তিসংগ্রাম’ শীর্ষক নিবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক মফিদুল হক। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ পর্বে স্বরচিত ‘বজ্রকণ্ঠ থেমে গেলে’ শীর্ষক কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা

রচিত ‘পনেরো আগস্ট’ কবিতার আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী এবং কবি আমিনুর রহমান রচিত ‘রাসেলের সমান বয়সী’ কবিতা আবৃত্তি করেন হাসান আরিফ। ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে’ শীর্ষক সংগীত পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। এর আগে সকাল ৭টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন (অর্ধনমিত) করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এফডিসিতে এক হাজার মানুষের আলোচনা সভা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, কুরআন খতম, মিলাদ মাহফিল, শোক র‌্যালি ও শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। দিবসটি পালনে বেলা সাড়ে ১১টায় এফডিসিতে এক হাজার মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এরপর আলোচনা সভা, কুরআন খতম, মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এফডিসিতে অনুষ্ঠিত শোক দিবসের এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
আরো উপস্থিত ছিলেন জোটের কার্যকরী সভাপতি কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা শাহনুর, কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নী, চিত্রপরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, তারিন জাহান, তানভিন সুইটি, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু প্রমুখ। আলোচনা শেষে একটি শোক র‌্যালি এফডিসির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে। এরপর দুস্থ শিল্পীদের মাঝে খাবার বিতরণ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি হয়। এর আগে সকাল ৯টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জোটের নেতারা।
বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ : বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। সকালে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ‘বাঙালির গভীর শোকের ১৫ আগস্ট’ শিরোনামের এ আসর। এতে আলোচক ছিলেন কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সংগীত পরিবেশন করেন তপন মাহমুদ। সঞ্চালনায় ছিলেন বিশ্বজিৎ রায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়