বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স

আগের সংবাদ

তালেবান আতঙ্কে বিশৃঙ্খলা > আফগানদের দেশ ছাড়ার হিড়িক : উড়ন্ত বিমান থেকে খসে পড়ল তিনজন

পরের সংবাদ

শরতের প্রথম দিন আজ : ‘নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা’

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মেঘমুক্ত আকাশ শুভ্র শিউলির মন মাতানো ঘ্রাণ আর দিগন্ত বিস্মৃত ফসলের মাঠে ফসলের নিরন্তর ঢেউ খেলানো দোলই জানান দিচ্ছে আজ ভাদ্র মাসের সঙ্গে এসেছে শরৎ। বাংলার প্রকৃতি আজ শরতের স্নিগ্ধ পরশে হবে আন্দোলিত। নির্মল নীলাকাশ, গুচ্ছ গুচ্ছ শুভ্র অমল ধবল মেঘের ভেলা; দূরে দুধ সাদা কাশের বনে পাগলা হাওয়ার মাতামাতি। শরতে ভুবনজুড়ে এক নতুন দৃশ্যপট রচিত হয় : গগনে গগনে শুধু অপরূপ রূপের লীলাখেলা। কবির ভাষায় এসো গো শারদল²ী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে/এসো নির্মল নীলপথে…। প্রকৃতিতে এসেছে শরত। আজ পহেলা ভাদ্র। প্রিয় ঋতু শরতের প্রথম দিন। আশ্বিনের শেষ দিনটি পর্যন্ত শরতের কাল বলে বিবেচিত।
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে প্রতিটি ঋতুই ভিন্ন ভিন্ন রূপবৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়। শরতেও নতুন করে সাজে প্রকৃতি। গ্রামে যেমন শহরেও তাই। এখন গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কাশফুলের দোলা আর শহরের নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা। এই শরতের প্রকৃতির বর্ণনা দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা রে ভাই, লুকোচুরি খেলা- /নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই- লুকোচুরি খেলা…।
প্রেম-দ্রোহের কবি নজরুলকেও আলোড়িত করেছিল শরতের প্রকৃতি। বিশেষ করে শরতের শিউলি তাকে মুগ্ধ করেছিল। ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি-বিছানো পথে।/এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ-কিরণ-রথে…। শরতের মিষ্টি সকালও উৎকীর্ণ হয়েছে শিউলিতলায় ভোরবেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লী-বালা।/শেফালি ফুলকে ঝরে পড়ে মুখে খোঁপাতে চিবুকে আবেশ-উতলা…। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ শরতের চরিত্রের সঙ্গে বর্ণনা করেছেন প্রিয়তমাকে।
শরতে মাঠে মাঠে এখন নতুন ধানের সমারোহ। কৃষকের মনে নবীন আশা, সাজ সাজ রব। দোয়েল-কোয়েলের কুজনে মুখরিত পল্লীগ্রাম-মাঠ-ঘাট জনপদ। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে প্রহরগোনা শুরু হলো এই শরতে, কৈলাশ ছেড়ে দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা আসবেন তাদের গৃহে। নদীর পাড়ে কাশফুলের জেগে ওঠার আভাস দেখেই বাতাসে রটে গেছে শরৎ এসেছে, পুজো আসছে।
ঋতুচক্র নানা বর্ণে-গন্ধের সমারোহে নিত্য আবর্তিত হয়ে চলে। কিন্তু ইটের পরে ইট, তার মাঝে মানুষ কীটের এই অর্থদাস শহরবাসীর অন্তর আজ আর শরতের নিমন্ত্রণ অনুভব করে না। প্রতিবারই শরৎ আসে। সাজে অপরূপ সাজে। কিন্তু শহরের যান্ত্রিক জীবনে এর রূপ দেখার সময় নেই অনেকেরই। তারপরও ঝকঝকে কাচের মতো স্বচ্ছ নীল আকাশ আর তার মধ্যে তুলার মতো সাদা মেঘ, প্রকৃতি বরণ করে নিয়েছে শরৎকালকে। যদিও শরতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের এ অপরূপ বর্ণনা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শরৎকালের সেই মাধুর্য এখন আর খুঁজে পায় না মানুষ। 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়