বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স

আগের সংবাদ

তালেবান আতঙ্কে বিশৃঙ্খলা > আফগানদের দেশ ছাড়ার হিড়িক : উড়ন্ত বিমান থেকে খসে পড়ল তিনজন

পরের সংবাদ

অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, সে ভাষণের কয়েকটি উক্তি দিয়েই শুরু করতে চাই এ লেখনী :
১) ‘তেইশ বছরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। তেইশ বছরের ইতিহাস মুমূর্ষু নরনারীর আর্তনাদের ইতিহাস; বাংলার ইতিহাস এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস’।
২) ‘কি পেলাম আমরা? যে আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রæর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরিব-দুঃখী আর্ত মানুষের বিরুদ্ধে, তার বুকের ওপর হচ্ছে গুলি।’
৩) ‘আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়।’
৪) ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। দেশের মানুষের অধিকার চাই।’
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের কিছু উক্তি এখানে উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে যে, এগুলোর মাধ্যমেই তিনি তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে তিনি কি চান তারও একটা বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন : ‘এদেশের ইতিহাসকে আমরা গড়ে তুলব। এদেশের মানুষ অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবেন।’ তিনি সব সময়ই বাংলার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তিকে সবার ওপরে প্রাধান্য দিয়েছেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চরম অর্থনৈতিক শোষণ ও নিপীড়নের ছোট্ট একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ্য যে, ওই সময়ে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মাত্র শতকরা ১০ ভাগ পূর্ব পাকিস্তান পেত আর শতকরা ৯০ ভাগ চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে যেটাকে একটি হীরক রাজার আজব দেশের সঙ্গেই শুধু তুলনা করা যেত। বঙ্গবন্ধু জানতেন, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য রাজনৈতিক মুক্তি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই, তাই তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেন। যার ফলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অনেক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে চরমভাবে পরাস্ত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করি। সংক্ষিপ্ত জীবনকালে তিনি বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছেন কীভাবে যুদ্ধ ও সংগ্রাম করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হয়, কীভাবে অর্জন করতে সব মানুষের মন। তিনি বলতেন, ‘এ স্বাধীনতার স্বাদ আমরা গ্রহণ করতে পারব না, যদি না আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে ব্যর্থ হই।’
১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বেতার ও টিভি ভাষণে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই?’ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার সরকার অভ্যন্তরীণ সমাজ বিপ্লবে বিশ্বাস করে। এটা কোনো অগণতান্ত্রিক কথা নয়। আমার সরকার ও পার্টি বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। একটি নতুন ব্যবস্থার ভিত রচনার জন্য পুরনো সমাজব্যবস্থা উপড়ে ফেলতে হবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ব’। তার স্বপ্ন ছিল দেশের প্রতিটি গ্রামে গণমুখী সমবায় সমিতি গঠন করা যেখানে গরিব মানুষ যৌথভাবে খামারে উৎপাদিত ফসলের মালিক হবেন যাতে করে মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীরা গরিবের উৎপাদিত ফসলের মুনাফা লুট করতে না পারে। তিনি সবসময়ই চাইতেন, বাংলার মানুষের বেকারত্ব দূর হোক, তারা দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে চিরতরে মুক্তি পাক। এজন্য দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি বলেছিলেন, ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।’
অত্যন্ত এক নাজুক ও বৈরী পরিবেশে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনর্গঠন শুরু করেন। কেননা তখন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অবকাঠামো ছিল খুবই বেহাল ও নড়বড়ে। বেশিরভাগ সড়ক, বন্দর, সেতু ছিল বিধ্বস্ত। শিল্প-কারখানাও প্রায় বন্ধ। উপর্যুপরি বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহিঃঅর্থনীতিও অনুকূলে ছিল না। বাহাত্তরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোনা থেকে ডলারে পরিবর্তন করার প্রথা তুলে নেয়ার ফলে এক ব্যারেল তেলের দাম ৩ থেকে বেড়ে হয়ে যায় ১১ মার্কিন ডলার। প্রতি টন গমের দাম ৮০ থেকে বেড়ে হয়ে যায় ২৪০ মার্কিন ডলার। সারের দাম প্রতি টন ৮০ থেকে বেড়ে এক লাফে গিয়ে দাঁড়ায় ২০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশবিরোধী আন্তর্জাতিক চক্রান্তে ও মদদে বিদেশি সহায়তা পেতেও বেগ পেতে হচ্ছিল। তাই অনেক কষ্টে তাকে খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে হয়েছে। তা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর শক্তিশালী নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পুরনো ঋণের দায়-দেনার সমঝোতা হয়। ১৯৭৫ সালে মুদ্রাস্ফীতি ৬০ থেকে ৩০-৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছিলেন ও মাথাপিছু আয় ৯৩ থেকে টেনে ২৭১ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছিলেন।
১৯৭২ সালের ৯ মে রাজশাহীর এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘আমি কি চাই? আমি চাই বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত খাক। আমি কি চাই? আমার বাংলার বেকার কাজ পাক। আমি কি চাই? আমার বাংলার মানুষ সুখী হোক। আমি কি চাই? আমার বাংলার মানুষ হেসে খেলে বেড়াক। আমি কি চাই? আমার সোনার বাংলার মানুষ আবার প্রাণভরে হাসুক।’
দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার নিয়েই বঙ্গবন্ধু শুরু করন স্বদেশ বিনির্মাণে। তিনি বুঝেছিলেন, কৃষির উন্নতি ছাড়া এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আসতে পারে না। কৃষকেরাই সোনার বাংলা গড়ার কারিগর। তাই ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বেতার-টিভিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমাদের চাষিরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে’। বাংলা কৃষকদের ঘাম ঝরানো অক্লান্ত পরিশ্রম ও সততার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সবসময়ই ছিলেন বিনয়ী ও শ্রদ্ধাশীল। ১৯৭৫-এর ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে এক ভাষণে বলেছিলেন, ‘করাপশন আমার বাংলার কৃষকরা করে না। করাপশন করি আমরা শিক্ষিত সমাজ। যারা আজকে ওদের টাকা দিয়ে লেখাপড়া করেছি’।
এ দেশের কৃষি ও কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নে তিনি নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যেমন : সদ্য স্বাধীন দেশের ৩০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি পূরণে তাৎক্ষণিক আমদানি, স্বল্পমেয়াদে উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি-উপকরণ সরবরাহ, কৃষিঋণ মওকুফ, পাকিস্তানি শাসনকালের সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার এবং কৃষকের মাঝে খাসজমি বিতরণ করেন। খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষিতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের জন্য ১৯৭৩ সালে কৃষিব্যাংক স্থাপন করেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা চিরদিনের জন্য রহিত করেন। পরিবারপিছু জমির সিলিং ১০০ বিঘায় নির্ধারণ করেন। শক্তিচালিত সেচ পাম্পের সংখ্যা ১১ থেকে ৩৬ হাজারে উন্নীত করেন। বিশ্ববাজারে সারের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সারে ভর্তুকি দিয়ে কৃষককে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।
বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল ও বেগবান রাখতে হলে কৃষির পাশাপাশি শিল্প খাতেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। তাই কোনোরকম কালক্ষেপণ না করে তিনি পাকিস্তাানিদের পরিত্যক্ত ব্যাংক, বিমা ও ৫৮০টি শিল্প ইউনিটের জাতীয়করণ ও চালু করার মাধ্যমে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তার স্বার্থেই শিল্পকারখানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালনা করতে বাধ্য হন। তবে এসব কারখানার ব্যবস্থাপনা বোর্ডে ৪০ শতাংশ শ্রমিকের অংশগ্রহণের বিধান রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিলগ্নিকরণের প্রক্রিয়াও শুরু করেন।
বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন যে, দেশের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানের জন্য একটি সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। এ কারণে তিনি ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠনে হাত দেন এবং ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় অবস্থিত স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখাকে বাংলাদেশ ব্যাংক নাম দিয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া পাকিস্তান আমলে যেসব বেসরকারি ব্যাংক ছিল তিনি সেসব ব্যাংককে স্বাধীনতার পর ৬টি ব্যাংকের আয়তায় এনে জনতা, সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, উত্তরা ও পূবালী ব্যাংক নামে জাতীয়করণ করেন। এর পাশাপাশি জীবিকা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে ১৯৭৩ সালের মে মাসে সাধারণ বিমা করপোরেশন ও জীবন বিমা করপোরেশন নামে দুটি প্রতিষ্ঠানও স্থাপন করেন। তার এ পদক্ষেপের ফলে দেশের ব্যাংকিং ও বিমা খাত অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। বলা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দেশের সাধারণ জনগণের আর্থিক আশ্রয় ও সঞ্চয়ের একটি নিরাপদ জায়গা হিসেবে গড়ে উঠেছিল ব্যাংকিং ও বিমা খাত।
মাত্র ১৩১৪ দিনের শাসন আমলে বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি বেগবান করতে বেশ কিছু কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা শেষ করার মতো যথেষ্ট সময় তিনি পাননি। তবে ওই উদ্যোগগুলো নিয়েছিলেন বলেই এতদিনে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি টেকসই ও মজবুত কাঠামো তৈরি হয়েছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই করে গেছেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যে ভাষণটি দিয়েছিলেন তাতেই প্রতিফলিত হয়েছিল তার জনমুখী অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে’।
স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ছিল ভঙ্গুর। তখন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল দুর্যোগপূর্ণ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুর দেশ হিসেবে। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি মন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার উপহাস করে বলেছিলেন- বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে, এখানে বিনিয়োগ করলে আসল অর্থ পাওয়া যাবে না। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি ও বিদেশি চক্রান্তকারীদের সমালোচনা যাই থাকুক না কেন, আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল উদ্দেশ্য। তাই তিনি বলতেন, ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। বিদেশ থেকে ভিক্ষা করে এনে দেশকে গড়া যাবে না। দেশের মধ্যেই পয়সা করতে হবে।’ এখন থেকে প্রায় অর্ধশত বছরের বেশি আগে তিনি হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে সগৌরবে উচ্চারণ করেছিলেন ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক আদর্শ ও কৌশলের ওপর ভিত্তি করেই ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছেন। দেশে-বিদেশে কুচক্রি মহলের সব অভিযোগ মিথ্যাচার প্রমাণিত করে শুধু নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু তৈরি করে তিনি বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, আমরাও পারি এবং আমাদেরকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। ভূমির ওপর মেট্রোরেল, ভূগর্ভস্থ কর্ণফুলী টানেল, কিংবা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কোনোটাই এখন আর আমাদের কাছে স্বপ্ন নয়, বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারি ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতি তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম অবস্থানে। আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারী এখন বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেয়েছি এবং দারিদ্র্যের হার শতকরা ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বের রোল মডেল এখন সেই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। আজ তাই পরাজিত পাকিস্তানিদের মুখ দিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে আসে, ‘আমরা সুইজারল্যান্ড হতে চাই না, আগামী দশ বছরে আমরা বাংলাদেশ হতে চাই’। পাকিস্তানি অর্থনীতিবিদদের মধ্যে কেউ এমনও চটুল ইঙ্গিত করেন যে, ‘এটি সম্ভাবনার সীমাতে রয়েছে যে আমরা ২০৩০ সালে বাংলাদেশের কাছে সহায়তা চাইতে পারব।’ জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমাদের ইতিহাসের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই। তবে তাঁর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আদর্শ অবিনশ্বর ও চিরঅ¤øান। বিশ্বের সব নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের মুক্তির দিশারি বা কাণ্ডারি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যুগ যুগ বেঁচে থাকবে।
নীলাঞ্জন কুমার সাহা : ডিন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়