খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

ফেনীতে স্বর্ণ ডাকাতি : ডিবির ওসিসহ ৬ জনের রিমান্ড মঞ্জুর

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শুকদেব নাথ তপন, ফেনী থেকে : ফেনীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় ডিবির ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়াসহ ছয় পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে ওসি মো. সাইফুলের চার দিন ও পাঁচ পুলিশ সদস্যের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় ডাকাতি মামলা করেন। এরপর তাদের কাছ থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
গতকাল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খোন্দকার নূরুন্নবী জানিয়েছেন, স্বর্ণের বার আত্মসাতের ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মো. সাইফুল ইসলামসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃতরা হলো- ফেনীর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. সাইফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন, নুরুল হক ও মিজানুর রহমান এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অভিজিৎ বড়ুয়া ও মাসুদ রানা।
পুলিশ সূত্র জানায়, মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুনির হোসেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বর্ণের বার ডাকাতির মামলার আসামি ফেনী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া, এসআই মোতাহের হোসেন, এসআই মিজানুর রহমান, এসআই নুরুল হক, এএসআই অভিজিত বড়ুয়া ও এএসআই মাসুদ রানাকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়ার চার দিন ও পাঁচ পুলিশ সদস্যের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিবির ওসিসহ ছয়জন পুলিশের গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী জানান, তাদের নামে মঙ্গলবার রাতে ফেনী মডেল থানায় ডাকাতি মামলা করা হয়েছে। গত রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে যাওয়ার সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস ফতেহপুর রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে ডিবি পুলিশ তার গাড়ি তল্লাশি করে স্বর্ণের বারগুলো নিয়ে যায়। পরে গোপাল কান্তি দাস লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে তাদের একজনের কাছ থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। তাদের জবানবন্দিতে আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচটি স্বর্ণের বার উদ্ধারের জন্য পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ডিবির ওসি হওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সাইফুল : মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া ফেনী কন্ট্রোলরুমের ইনচার্জ হিসেবে এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছরের ৯ মে তৎকালীন ডিবির ওসি এ এন এম নুরুজ্জামানকে ফুলগাজী থানায় বদলি করা হয়। পরে ডিবির ওসির দায়িত্ব দেয়া হয় মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়াকে। ডিবির ওসি হওয়ার পর তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার অপকর্মের সহযোগীরা হচ্ছেন এসআই মোতাহের হোসেন, এসআই মিজানুর রহমান, এসআই নুরুল হক ও এএসআই অভিজিত বড়ুয়া। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফেনী গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত থাকার সুবাদে একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এসআই নুরুল হকের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। নুরুল হকের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ। বাড়ির পাশে ফেনী জেলায় কর্মরত থাকার কারণে নুরুল হকও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করতেন তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়ার শখ ছিল ফেনী মডেল থানার ওসি হওয়ার। এজন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় তদবিরও করেছিলেন। এসপি কঠোর থাকার কারণে তিনি ফেনী মডেল থানার ওসি হতে পারেননি। ২০১২ সালে ফেনী মডেল থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া। দায়িত্ব পালনের সময়ও তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল। ২০১২ সালের মে মাসে ফেনী মডেল থানার সামনে পুলিশের স্থাপনা ভাঙার সময় তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা করে কয়েকজন পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়