গণপরিবহন চালু, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা : লঞ্চ, বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি হটিয়ে খুলল সবই

পরের সংবাদ

তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক : ৫০ বছরেও লাঘব হয়নি ৩ ইউনিয়নবাসীর দুর্ভোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে : হাওর বেষ্টিত ভাঁটির জনপদ ও পর্যটন এলাকা খ্যাত, শিক্ষাদীক্ষাসহ নাগরিক নানা সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত অনুন্নত ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া উপজেলার নাম তাহিরপুর। এ উপজেলায় রয়েছে তিনটি শুল্ক স্টেশন। যেখান থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।
এ উপজেলায় রয়েছে কয়েকটি পর্যটন স্পট। যেখানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে। এছাড়া উপজেলার সর্ববৃহৎ বাজার বাদাঘাটের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। উপজেলা সদরের লোকজনসহ ৭ ইউনিয়নের লোকজনকেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাসহ জরুরি কাজে বাদাঘাট আসা যাওয়া করতে হয়।
এ উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি এ সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠেনি।
বর্তমানে সড়কটির টাকাটুকিয়া ব্রিজের পরের অংশ থেকে ইসলামপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি. রাস্তা খেয়া নৌকা দিয়ে পার হয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। একটা খেয়া মিস করলে প্রায় ১ ঘণ্টা বসে থাকতে হয় খেয়া নৌকা আসার অপেক্ষায়।
ফলে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর, বড়দল উত্তর ও বাদাঘাট উত্তর ৩ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষসহ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে আসা পর্যটকরা ৫০ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ৩ ইউনিয়নের স্কুল-কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীসহ লক্ষাধিক মানুষের সড়ক পথে উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি।
দেশ স্বাধীন পর থেকে এ পর্যন্ত সড়কটি কয়েকবার সংস্কার করলেও এখন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা স্থানীয় এলজিইডির উদাসীনতা এবং ঠিকাদারদের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন।
তাদের মতে অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ এবং ঠিকাদারদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ করার জন্যই এখন পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি হয়ে উঠেনি যানবাহন চলাচলের উপযোগী।
উপজেলার বাদাঘাট ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা তাবারক হোসাইন বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে তাহিরপুর উপজেলা সদরে যেতে হলে প্রায় দুই কি.মি. জায়গা ছোট খেয়া নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড় হতে হয়। শীত মৌসুমে এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যেতে হলে একাধিক জায়গায় টোল দিতে হয়। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের চাটাইয়ের ওপর দিয়ে পথচারী ও যানবাহন পারাপার করতে হয়। এতে অনেক সময় ঘটে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা। একটু বৃষ্টি হলেই এ সড়ক দিয়ে আর উপজেলা সদরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি থাকে না।
শিক্ষিকা সালমা আক্তার বলেন বেতন উত্তোলন করাসহ বিভিন্ন কাজে মাসে একবার হলেও উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। ৮ কি.মি. সড়কে এত ভোগান্তি মনে বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। মোটরসাইকেলে যাতায়াত করলে ৮ কি.মি. মধ্যে ৪ কি.মি. যেতে হয় নৌকা আর হেঁটে। বাকি ৪ কি.মি. সড়কও চলাচলের অনুপযোগী খানাখন্দ, ভাঙা আর উঁচু-নিচু। একবার আসা যাওয়া করলে শরীর ব্যথা হয়ে যায়।
বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, দুই যুগ ধরে সড়কটির সংস্কার কাজ চলে কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসার আগেই সড়কটি আবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। সঠিক পরিকল্পনা করে সড়কটি তৈরি করলে প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকা বেহাত হতো না।
উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর জানিয়েছেন, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটির সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং নৌকা পারাপারের অংশে একটি ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণ করা হবে।
তাহিরপুর উপজেলা সদরসহ তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারের দীর্ঘদিনের দাবি তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি যেন যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তৈরি করা হয়। তারা অবিলম্বে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে উপজেলা সদরের সঙ্গে তিন ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়